ঢাকা রবিবার, ১৭ আগস্ট, ২০২৫

কোর্টের বাইরেও টেনিস তারকাদের যুদ্ধের প্রস্তুতি

স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশিত: আগস্ট ১৭, ২০২৫, ০৩:৪২ পিএম
নারী টেনিস তারকা ইগা শিয়াতেক। ছবি- সংগৃহীত

টেনিস কোর্টে কেবল র‍্যাকেট হাতে লড়াই নয়, এর বাইরেও চলে এক মানসিক যুদ্ধ। ম্যাচের নির্দিষ্ট সময় না থাকা, দীর্ঘ অপেক্ষা এবং বারবার ওয়ার্মআপের মতো চ্যালেঞ্জ টেনিস তারকাদের জন্য দৈনন্দিন বাস্তবতা। শারীরিক সক্ষমতার পাশাপাশি মানসিক দৃঢ়তা কতটা জরুরি, তা খেলোয়াড়দের নিজেদের অভিজ্ঞতাতেই স্পষ্ট।

সাবেক ওয়ার্ল্ড নাম্বার ওয়ান কার্লোস আলকারাজ সম্প্রতি সাভার্ডর জুনিয়র কোর্টে সেরার সঙ্গে ম্যাচ খেলার আগে এক কঠিন অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে গেছেন। তার প্রতিপক্ষ হামাদ মেজেদোভিচ এবং তিনি মাঠে নামার অপেক্ষায় ছিলেন, কিন্তু তার আগের ম্যাচটি তিন ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলে।

এর মধ্যে ছিল একাধিক মোমেন্টাম পরিবর্তন, মেডিকেল টাইম-আউট এবং আকস্মিক বৃষ্টি। ম্যাচ শেষে হতাশ আলকারাজ বলেন, তিন-চারবার ওয়ার্মআপ করতে হয়েছে, এটা খুবই কঠিন। ওপেলকারের ম্যাচটা এত লম্বা হবে ভাবিনি, এটা সত্যিই হতাশাজনক।

কেন এই অনিশ্চয়তা?

ফুটবল বা এনএইচএলের মতো খেলায় পুরো সিজনের সূচি আগে থেকেই নির্ধারিত থাকে। কিন্তু টেনিসে প্রতিটি ম্যাচের স্থায়িত্ব অনুমান করা কঠিন।

কখনও কোনো ম্যাচ এক ঘণ্টারও কম সময়ে শেষ হতে পারে, আবার কখনও পাঁচ সেটের লড়াই চার-পাঁচ ঘণ্টা পর্যন্ত চলতে পারে। এই অনিশ্চয়তা খেলোয়াড়দের মানসিক প্রস্তুতিতে বড় প্রভাব ফেলে।

রাশিয়ার টেনিস তারকা কারেন খাচানোভ বলেন, টেনিসেই এটি সবচেয়ে কঠিন। খেলোয়াড়দের সব পরিস্থিতির সাথে মানিয়ে নিতে হয়।

ম্যাচের স্কোরিং সিস্টেম এই চাপ আরও বাড়িয়ে দেয়। একজন খেলোয়াড় অল্প পয়েন্টের জন্য ম্যাচ হারাতে পারেন, আবার একইসাথে কয়েক ঘণ্টা ধরে খেলতে বাধ্য হতে পারেন।

ইগা শিয়াতেক ২০২৩ ফ্রেঞ্চ ওপেনের সেমিফাইনালের কথা স্মরণ করে জানান, আমি সাতবার ওয়ার্মআপ করেছিলাম। একদিকে উত্তেজনা, অন্যদিকে আবার মাথা ঘামানো লাগেনি - এক আবেগের রোলারকোস্টার।

গ্র্যান্ড স্ল্যামে পাঁচ সেটের লম্বা ম্যাচগুলো ক্লান্তি আরও বাড়ায়। ম্যাডিসন কিস বলেন, আমার ম্যাচের আগে দুটো পাঁচ সেটের ম্যাচ হয়েছিল। যখন আমি মাঠে নামি, রাতের সেশন শুরু হয়ে গেছে। আমার মনে হয় পাঁচ সেটের ম্যাচ বন্ধ করে দেওয়া উচিত।

চাপ সামলানোর নিজস্ব কৌশল

এমন পরিস্থিতিতে প্রতিটি খেলোয়াড়ের নিজস্ব কৌশল থাকে। আলকারাজ মাঝে মধ্যে ফুটবল খেলেন, কার্ড খেলেন বা একটু ঘুমিয়ে নেন। আন্দ্রেই রুভলেভ সাধারণত ঘুমান এবং তার কোচের কাছ থেকে আগের ম্যাচের আপডেট নেন।

অন্যদিকে, কোকো গফ রসিকতা করে বলেন, আমি সাধারণত টিকটক দেখি।

অনিশ্চিত সূচির কারণে খেলোয়াড়দের স্বাস্থ্যঝুঁকিও বাড়ে। ২০২৩ সালের অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে অ্যান্ডি মারের ম্যাচ শেষ হয় রাত ৪:০৫ মিনিটে, যা টেনিস বিশ্বে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়।

এর পরিপ্রেক্ষিতে, এটিপি এবং ডব্লিউটিএ একটি নতুন নীতি এনেছে, যেখানে রাত ১১টার পর সাধারণত কোনো নতুন ম্যাচ শুরু করা হয় না।