শিশুদের সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে ফ্রান্সে নিষিদ্ধ হচ্ছে খোলা জায়গায় ধূমপান । আগামী ১ জুলাই থেকে দেশটিতে সমুদ্র সৈকত, স্কুলের আশপাশ ও পার্কসহ যেসব খোলা জায়গায় শিশুদের যাতায়াত থাকে, সেখানে ধূমপান সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হবে।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বিবিসি। দেশটির স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী ক্যাথরিন ভাত্রাঁ এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে বলেন, “যেখানে শিশু আছে, সেখানে তামাকের কোনও স্থান নেই। ধূমপানের স্বাধীনতা শেষ হওয়া উচিত, যেখানে শিশুরা মুক্তভাবে নিশ্বাস নেওয়ার অধিকার রাখে।”
ফ্রান্সের এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে পার্ক, জনউদ্যান, সমুদ্র সৈকত, স্কুলের চারপাশ, বাসস্টপ, ও খেলাধুলার মাঠ বা ভেন্যুর মতো খোলা জায়গাগুলোতে। তবে রেস্তোরাঁ বা ক্যাফের বাইরের বসার স্থান—যাকে ফরাসি ভাষায় ‘তেরাস’ বলা হয়—সে সব জায়গা এই নিষেধাজ্ঞার আওতামুক্ত থাকবে।
নতুন এই নিয়ম ভঙ্গ করলে ১৩৫ ইউরো (প্রায় ১৫৩ মার্কিন ডলার) জরিমানা গুনতে হবে। সাধারণ পুলিশ সদস্যরাই এই নিয়ম তদারকির দায়িত্বে থাকবেন। তবে সরকারের আশা, মানুষ নিজের থেকেই এই নিয়ম মেনে চলবে। এদিকে, ইলেকট্রনিক সিগারেট বা ই-সিগারেট এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় না পড়লেও স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ই-সিগারেটে ব্যবহৃত নিকোটিনের মাত্রা সীমিত করার জন্য তিনি উদ্যোগ নিচ্ছেন।
বিবিসির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ফ্রান্সে ধূমপানবিরোধী পদক্ষেপ নতুন নয়। ২০০৮ সাল থেকেই রেস্তোরাঁ, নাইটক্লাবসহ দেশের অভ্যন্তরীণ স্থানে ধূমপান নিষিদ্ধ রয়েছে। যদিও বহু আগে থেকেই সৈকত ও পার্কে ধূমপান নিষিদ্ধ করার পরিকল্পনা ছিল, তবে প্রয়োজনীয় আইনগত আদেশ না থাকায় তা কার্যকর করা যায়নি।
তবে সম্প্রতি ফ্রান্সের দেড় হাজারেরও বেশি পৌরসভা স্বেচ্ছায় এসব এলাকায় ধূমপান নিষিদ্ধ করেছে। এমনকি শত শত সৈকতও ইতোমধ্যে ধূমপানমুক্ত হিসেবে ঘোষিত হয়েছে। ফ্রান্স সরকারের এই সিদ্ধান্তকে ধূমপান নিয়ন্ত্রণে একটি বড় পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ধূমপানের ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে এ ধরনের পদক্ষেপ অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।
আপনার মতামত লিখুন :