ঢাকা রবিবার, ১৯ অক্টোবর, ২০২৫

ভয় পাচ্ছেন পুতিন, ধারণা জেলেনস্কির

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: অক্টোবর ১৮, ২০২৫, ১০:৪১ পিএম
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন (ডানে), ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি (বামে)। ছবি- সংগৃহীত

ইউক্রেনকে দূরপাল্লার সাবসনিক গতিসম্পন্ন টমাহকস ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করতে চেয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কবে নাগাদ এবং কতগুলো ক্ষেপণাস্ত্র দেওয়া হবে, তা স্পষ্ট করেননি। কিন্তু সূত্রের খবর অন্তত ৫০টি ক্ষেপণাস্ত্র দেবে ওয়াশিংটন। এই বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহের খবরে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ভয় পাচ্ছেন বলে মনে করেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।

শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) এনবিসি নিউজের ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এই দাবি করেন তিনি। জেলেনস্কি জানান, ট্রাম্পের সঙ্গে দূরপাল্লার টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহের বিষয়ে কোনও চূড়ান্ত চুক্তিতে স্বাক্ষর হয়নি। এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলো রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেনের যুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট বলেন, “এটা ভালো যে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ‘না’ বলেননি, কিন্তু আজকের জন্য ‘হ্যাঁ’ও বলেননি।” গতকাল শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন তিনি। গত সপ্তাহে রাশিয়ার ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর বিদ্যুৎ বিভ্রাট সৃষ্টি হয়, এ কারণে জেলেনস্কি টমাহক ক্ষেপণাস্ত্রের জন্য আবেদন করেছিলেন।

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনও সতর্ক করে দিয়েছেন যে, ইউক্রেনে টমাহক সরবরাহ করা হলে এটি ‘ক্রমবর্ধমানতার একটি নতুন পর্যায়’ হিসেবে বিবেচিত হবে। জেলেনস্কি জানান, টমাহক ক্ষেপণাস্ত্রের উপস্থিতি পুতিনের জন্য প্রকৃত উদ্বেগের বিষয়। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি পুতিন ভয় পাচ্ছেন যে, যুক্তরাষ্ট্র আমাদের টমাহকস সরবরাহ করবে এবং আমরা সেগুলো ব্যবহার করব।’

তবে কোনও চুক্তি ছাড়া ইউক্রেনে ফিরে আসায় সমালোচকদের মধ্যে প্রশ্ন জন্ম দিয়েছে যে, জেলেনস্কি কেন মার্কিন সফর করেছেন। শুক্রবার হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র চুক্তির ব্যাপারে তার আশাবাদ সীমিতই ছিল।

একই দিনে ট্রাম্প হাঙ্গেরির বুদাপেস্টে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে সরাসরি আলোচনার সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করেন। তিনি ট্রুথ সোশ্যালে লিখেছেন, এটি ইউক্রেনের যুদ্ধে অবসান ঘটাতে সহায়ক হবে। ট্রাম্প বলেন, ‘আমাদের ফোনালাপে বড় অগ্রগতি হয়েছে’।

আগস্টে আলাস্কায় ট্রাম্প ও পুতিনের বৈঠকেও যুদ্ধবিরতি বা জেলেনস্কির সঙ্গে একান্ত বৈঠকে সমঝোতার ক্ষেত্রে কোনো চূড়ান্ত অগ্রগতি হয়নি। শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প বলেন, দুই প্রেসিডেন্টের মধ্যে ‘প্রচণ্ড খারাপ সম্পর্ক’ একটি বড় বাধা হিসেবে আছে। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন, ‘আমরা এটি সমাধান করতে সক্ষম হবো এবং দীর্ঘস্থায়ী করতে হবে।’

ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্যের সফল মধ্যস্থতা ও জিম্মি বিনিময় পরিস্থিতি ইউক্রেন-রাশিয়ার সংঘাত সমাধানে নতুন আশা তৈরি করেছে। ট্রাম্প বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধ অনেক বেশি জটিল ছিল। আমরা তা শেষ করেছি, এবং আমাদের সামনে ভালো সুযোগ আছে। প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি এটি শেষ করতে চান, আর আমি মনে করি প্রেসিডেন্ট পুতিনও তাই চান।’