ঢাকা রবিবার, ০৯ নভেম্বর, ২০২৫

ইউক্রেনে রাশিয়ার ব্যাপক ড্রোন হামলা, ৪ জনের মৃত্যু

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: নভেম্বর ৯, ২০২৫, ১০:৪২ এএম
ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা। ছবি - সংগৃহীত

গতকাল শনিবার ভোরে পূর্ব ইউক্রেনের ডনিপ্রো শহরের একটি নয়তলা অ্যাপার্টমেন্ট ভবনে রাশিয়ান ড্রোন হামলায় অন্তত চারজন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে তিনজন ডনিপ্রোতে এবং একজন খারকিভে। এছাড়া আহত হয়েছেন আরও ১২ জন, এদের মধ্যে দুই শিশু রয়েছে। দেশটির জরুরি পরিষেবা জানিয়েছে, ভবনটিতে আগুন লেগেছে এবং কয়েকটি অ্যাপার্টমেন্ট সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়েছে।

ইউক্রেনীয় বিমান বাহিনীর তথ্য অনুযায়ী, রাশিয়া গত শুক্রবার (৭ নভেম্বর) রাতে মোট ৪৫৮টি ড্রোন ও ৪৫টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে, এর মধ্যে ৩২টি ছিল ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র। ইউক্রেনীয় প্রতিরক্ষা বাহিনী ৪০৬টি ড্রোন ও ৯টি ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করতে সক্ষম হয়েছে। তবুও দেশজুড়ে অন্তত ২৫টি স্থানে হামলার আঘাত লেগেছে, এর বেশিরভাগই ছিল জ্বালানি অবকাঠামো লক্ষ্য করে।

ইউক্রেনের জ্বালানিমন্ত্রী স্বেতলানা গ্রিনচুক জানিয়েছেন, হামলার কারণে বিভিন্ন অঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখতে হয়েছে। খারকিভ, কিয়েভ ও কেন্দ্রীয় পোলতাভা অঞ্চলের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ জ্বালানি স্থাপনায় ক্ষতি হয়েছে।

রাষ্ট্রায়ত্ত বিদ্যুৎ কোম্পানি সেন্টারনারগো জানিয়েছে, তাদের তিনটি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র—কিয়েভ, খারকিভ ও দোনেৎস্ক অঞ্চলে—আবারও বন্ধ হয়ে গেছে। এই কেন্দ্রগুলো গত বছরও রাশিয়ার হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।

এদিকে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, রাতের হামলায় তারা শুধুমাত্র ইউক্রেনীয় সামরিক ও জ্বালানি স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করেছে।

রাশিয়ার ভলগোগ্রাদ অঞ্চলের গভর্নর আন্দ্রেই বোচারভ বলেছেন, ইউক্রেনের ড্রোন হামলা প্রতিহত করা হয়েছে, যদিও কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে।

রাশিয়ার জ্বালানি স্থাপনায় দীর্ঘ পাল্লার ড্রোন হামলার পর ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ঘোষণা করেছেন, ইউরোপে রাশিয়ান তেল প্রবেশ বন্ধের উপায় খুঁজে বের করবেন। তিনি বলেছেন, “আমরা এটি হতে দেব না—রাশিয়ানরা আর ইউরোপে তেল বিক্রি করতে পারবে না। এটি শুধু সময়ের ব্যাপার।”

পূর্ব ইউক্রেনের কৌশলগত শহর পোকরোভস্কে তীব্র যুদ্ধ চলছে। রাশিয়া দাবি করেছে, তারা শহরটি এবং নিকটবর্তী মিরনোহরাদ ঘিরে ফেলেছে। একই সঙ্গে খারকিভ অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ রেল কেন্দ্র কুপিয়ানস্কও ইউক্রেনীয় বাহিনী দ্বারা অবরুদ্ধ। কিয়েভ দখল নিয়ে এখনো কোনো দাবি বা নিশ্চিতকরণ নেই।

রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের নির্দেশে সম্ভাব্য পারমাণবিক পরীক্ষার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। এই পদক্ষেপটি এসেছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পারমাণবিক পরীক্ষা পুনরায় শুরু করার ইঙ্গিতের পরপরই।

আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ) জানিয়েছে, রাশিয়ান নিয়ন্ত্রিত জাপোরিঝিয়া পারমাণবিক কেন্দ্র পুনরায় জাতীয় গ্রিডের সঙ্গে সংযুক্ত হয়েছে। প্ল্যান্টটি এখনো বন্ধ অবস্থায় থাকলেও এর ছয়টি রিঅ্যাক্টর ঠান্ডা রাখার জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহ অপরিহার্য।