ভারতের দাবি অনুযায়ী, পাকিস্তান বৃহস্পতিবার (৮ মে) মধ্যরাতে ভারতের পশ্চিম সীমান্তজুড়ে একাধিক আকাশ ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। এই হামলা প্রতিরোধ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে নয়াদিল্লি।
শুক্রবার (৯ মে) ভারতের সেনাবাহিনী সামাজিক মাধ্যমে দেওয়া এক বার্তায় জানিয়েছে, পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনী ড্রোন ও অন্যান্য অস্ত্রশস্ত্র ব্যবহার করে ভারতের পশ্চিম সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে হামলা চালায়। তবে তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা তা সফলভাবে প্রতিহত করে।
এর আগেই বৃহস্পতিবার রাতে ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের জম্মু অঞ্চলে একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। এক প্রত্যক্ষদর্শী বার্তা সংস্থাকে জানান, বিস্ফোরণের পর চারদিক আলোকিত হয়ে ওঠে এবং শোনা যায় সাইরেনের শব্দ। শহরের একাধিক এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।
যদিও পাকিস্তানের পক্ষ থেকে এই ঘটনার বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করা হয়নি, ভারতের সামরিক বাহিনীর একটি সূত্রের দাবি, জম্মুর সাতওয়ারি, সাম্বা, রণবীর সিং পুরা ও আরনিয়া লক্ষ্য করে আটটি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়, যেগুলো আঘাত হানার আগেই ধ্বংস করা হয়।
এই ঘটনার প্রেক্ষাপটে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার উত্তেজনা আরও বাড়ছে। ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের এক হামলায় ২৬ জন নিহত হয়। ভারত এই হামলার জন্য সরাসরি পাকিস্তানকে দায়ী করে। যদিও ইসলামাবাদ এই অভিযোগ নাকচ করে দেয়।
এই হামলার জবাবে ভারত ৭ মে রাতে ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামের একটি সামরিক অভিযান চালায়। পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরসহ মোট ৯টি স্থানে এই অভিযান চালানো হয়। ওই রাতেই পাকিস্তান দাবি করে, তারা ভারতের পাঁচটি যুদ্ধবিমান ধ্বংস করেছে।
ভারত এই দাবি অস্বীকার করলেও যুক্তরাষ্ট্রের দুই জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার বরাতে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তান চীনের তৈরি জে-১০ যুদ্ধবিমান ব্যবহার করে ভারতের অন্তত দুটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে। এর মধ্যে একটি ছিল ফ্রান্সের তৈরি রাফাল।
এদিকে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র আহমেদ শরিফ চৌধুরী গতকাল জানান, করাচি, লাহোর, রাওয়ালপিন্ডিসহ বিভিন্ন অঞ্চলে ভারতের মোট ২৯টি ড্রোন ধ্বংস করা হয়েছে। এই ড্রোনগুলো ইসরায়েলের তৈরি ছিল বলে দাবি করেন তিনি। তার ভাষ্য, লাহোরের কাছে এক সামরিক স্থাপনায় এক ড্রোনের আঘাতে চারজন সেনা সদস্য আহত হন।
চলমান এই পাল্টাপাল্টি হামলা ও তথ্য-প্রতিবেদন দক্ষিণ এশিয়ার দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশের মধ্যে চরম উত্তেজনার ইঙ্গিত দিচ্ছে। আন্তর্জাতিক মহল বিষয়টি গভীর উদ্বেগের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছে।
আপনার মতামত লিখুন :