৩ বছর যুদ্ধের পর এই প্রথমবারের মতো কোনো শর্ত ছাড়া ইউক্রেনের সঙ্গে সরাসরি শান্তি আলোচনায় বসার প্রস্তাব দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
রোববার (১১ মে স্থানীয় সময়) ক্রেমলিন থেকে দেওয়া এক ঘোষণায় তিনি বলেন, ইউক্রেন সরকারকে ইতিমধ্যেই এই প্রস্তাব জানানো হয়েছে।
পুতিন জানান, গত বৃহস্পতিবার ইস্তাম্বুলে ইউক্রেনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনায় এই প্রস্তাব দেওয়া হয়। তিনি চান, সম্ভাব্য শান্তি আলোচনা তুরস্কে হোক। এ বিষয়ে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের সঙ্গেও তিনি কথা বলবেন।
পুতিন বলেন, ‘আমাদের প্রস্তাব আলোচনার টেবিলে রয়েছে। এখন সিদ্ধান্ত ইউক্রেন সরকারের ওপর নির্ভর করছে। তবে তাদের পেছনে যেসব বিদেশি শক্তি আছে, তারা অনেক সময় সাধারণ মানুষের স্বার্থের চেয়ে নিজেদের রাজনৈতিক লাভ বড় করে দেখে।’
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হয় ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে, যখন রাশিয়া ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালায়। এর পেছনে মূল কারণ ছিল, ইউক্রেনের ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার চেষ্টা এবং রাশিয়ার দাবি অনুযায়ী, ক্রিমিয়া ও পূর্ব ইউক্রেনের কিছু অঞ্চলে রুশপন্থি জনগণের অধিকার রক্ষা।
তিন বছরের বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধে রাশিয়া দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, ঝাপোরিজ্জিয়া ও খেরসন- এই চারটি বড় এলাকা দখল করেছে, যা ইউক্রেনের মোট ভূখণ্ডের প্রায় ২০ শতাংশ।
এ সময়ের মধ্যে দুই দেশের মধ্যে একাধিকবার সংলাপ হলেও কোনো ফল আসেনি। রাশিয়া চেয়েছে ইউক্রেন যেন দখলকৃত এলাকা ও ক্রিমিয়াকে রাশিয়ার অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। আর ইউক্রেন বলেছে, রাশিয়া যদি দখল করা এলাকা ছেড়ে না দেয়, তাহলে কোনো আলোচনা হবে না।
এভাবে দীর্ঘদিন ধরে চলেছে অচলাবস্থা, আর প্রাণ গেছে হাজার হাজার মানুষের, যাদের মধ্যে অনেক সাধারণ নাগরিকও রয়েছেন।
এই যুদ্ধে ইউক্রেনের সবচেয়ে বড় সহায়তাকারী ছিল যুক্তরাষ্ট্র। সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সময় ইউক্রেন বিপুল পরিমাণ অর্থ ও অস্ত্র পেয়েছিল। কিন্তু নতুন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন, ক্ষমতায় এসেই তিনি এই যুদ্ধ বন্ধ করার চেষ্টা করবেন।
তবে এখনো ইউক্রেন বা তাদের পশ্চিমা মিত্রদের পক্ষ থেকে পুতিনের নতুন প্রস্তাবে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
আপনার মতামত লিখুন :