মঙ্গলবার, ০৩ জুন, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: জুন ১, ২০২৫, ০৭:১৯ পিএম

দুবাইয়ে পশুর বাজারে আগুন, কঠিন হচ্ছে কোরবানি

বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: জুন ১, ২০২৫, ০৭:১৯ পিএম

সংযুক্ত আরব আমিরাতে কোরবানির জন্য আনা পশু। ছবি- সংগৃহীত

সংযুক্ত আরব আমিরাতে কোরবানির জন্য আনা পশু। ছবি- সংগৃহীত

ভারতীয় প্রবাসী ও একটি পেমেন্ট গেটওয়ে কোম্পানির প্রকৌশলী মুহাম্মদ আজম চমকে গিয়েছিলেন শনিবার (৩১ মে) সন্ধ্যায় আল-কুসাইস পশুর হাটে গিয়ে। কারণ, কোরবানির পশুর দাম ঈদুল আজহার আগে তার কল্পনার অনেক বাইরে বেড়ে গেছে।

আজম বলেন, ‘২০২৩ সালে আমি প্রায় ৪৫০ কেজি ওজনের একটি সোমালিয়ান ষাঁড় কিনেছিলাম প্রায় ছয় হাজার দিরহামে। কিন্তু এখন সেই আকারের ষাঁড় শুরু হচ্ছে ১০ হাজার দিরহাম থেকে— মানে ৬০ শতাংশের বেশি দাম বেড়েছে।’

তিনি জানান, ২০২৪ সালের ঈদে তিনি কেরালায় নিজ বাড়িতে ছিলেন। তাই গত বছরের বাজারদর সম্পর্কে জানতেন না।

তিনি বলেন, ‘আমি ভাবছিলাম, এ বছর ১০ হাজার দিরহামের বাজেটে ম্যানেজ করতে পারব। কিন্তু এখানে তো এমন অবস্থা যে, ছাগলই শুরু হচ্ছে এক হাজার ২০০ দিরহাম থেকে।’

দুবাই-ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম খালিজ টাইমস আল-কুসাইস পশুর হাট পরিদর্শন করে দেখেছে— বিক্রেতা ও ক্রেতা উভয়েই জানাচ্ছেন, পশুর দামে উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি হয়েছে। মাত্র দুই বছরের ব্যবধানে কোরবানির পশুর দাম ৬০ থেকে ৮০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে গেছে।

বর্তমান বাজারদর নিচে দেওয়া হলো

সোমালিয়ান ১৫ কেজি ওজনের ছাগলের দাম শুরু হচ্ছে ১ হাজার ২০০ দিরহামে। অর্থাৎ বাংলাদেশি মুদ্রায় ৩৯ হাজার ৮৯৩ টাকা।

ছবি- সংগৃহীত

ভারতীয় ২৫ কেজির ছাগলের দাম শুরু হচ্ছে ২ হাজার ৮০০ দিরহামে। অর্থাৎ ভারতীয় একটি ছাগল কিনতে এবার দেশটির বাসিন্দাদের খরচ করতে হবে প্রায় ৯৪ হাজার টাকা।

পাকিস্তানি ২২ কেজির ছাগলের দাম শুরু হচ্ছে ২ হাজার ৫০০ দিরহামে। যা প্রায় ৮৪ হাজার টাকার সমান।

অন্যদিকে ৩৫০–৪০০ কেজি ওজনের ভারতীয়, পাকিস্তানি বা সোমালিয়ান ষাঁড়ের দাম শুরু হচ্ছে ৯ হাজার দিরহামে। অর্থাৎ বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২ লাখ ৯৯ হাজার টাকা। অন্যদিকে ৪৫০ কেজির বেশি ওজনের বড় ষাঁড়ের দাম শুরু হচ্ছে ১২ হাজার দিরহামে। যা প্রায় ৩ লাখ ৯৮ হাজার টাকা।

‘মধ্যবিত্তদের জন্য কোরবানি কঠিন হয়ে যাচ্ছে’

পাকিস্তানি প্রবাসী আব্দুল শাকুর বলেন, তিনি টানা তিন বছর ধরে একই বিক্রেতার কাছ থেকে পশু কিনছেন। কিন্তু এবার দামের পার্থক্য চোখে পড়ার মতো।

তিনি বলেন, ‘দুই বছর আগে আমি একটি ভালো মানের ছাগলের জন্য প্রায় ১ হাজার ৬০০ দিরহাম দিয়েছিলাম। এখন সেই আকারের জন্যই ২ হাজার ৮০০ দিরহাম চাইছে—তাও দরদাম করে।’

এই প্রবাসী আরও বলেন, ‘এই ঈদ আমাদের কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এখন মধ্যবিত্তদের পক্ষে কোরবানি করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। আমি সম্ভবত এক বন্ধুর সঙ্গে ভাগাভাগি করে একটি ষাঁড় কিনব।’

দামের কারণ কী?

পাকিস্তানি পশু ব্যবসায়ী মোহাম্মদ উসমান, যিনি আট বছর ধরে সংযুক্ত আরব আমিরাতে পশু বিক্রি করছেন। তিনি বলেন, ‘এ বছর দাম বাড়াটা অনিবার্য ছিল। আমরা যেসব সাপ্লায়ার থেকে পশু নিচ্ছি, তাদের কাছ থেকেই অনেক বেশি দামে নিতে হচ্ছে। পশুর খাবার, পরিবহন, ট্যাক্স—সব কিছুর খরচই বেড়েছে। বিশেষ করে ভারত বা পাকিস্তান থেকে পশু আনার খরচ এখন আগের তুলনায় অনেক বেশি।’

ছবি- সংগৃহীত

পশুর সরবরাহ কম জানিয়ে তিনি বলেন, ‘চলতি বছর চাহিদা অনেক বেশি, কিন্তু সরবরাহ সীমিত। ক্রেতা বেশি হলে এবং পশু কম থাকলে দাম এমনিতেই বাড়ে।’

আরেক পশু ব্যবসায়ী লালা খান বলেন, তিনি ১৫ বছর ধরে দুবাইতে পশু বিক্রি করছেন, কিন্তু এমন দাম বাড়তে আগে দেখেননি।

তিনি বলেন, ‘আগে আমরা ছাগল ৫০০ থেকে ৭০০ দিরহামে বিক্রি করতাম। এখন সবচেয়ে ছোট সোমালিয়ান ছাগলই কমপক্ষে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ দিরহাম। মানুষ ক্ষুব্ধ, কিন্তু আমাদেরও কিছু করার নেই।’

বিক্রেতা খান বলেন, ‘এই মুহূর্তে কোরবানির পশুর চাহিদা অনেক বেশি এবং অনেকেই এরই মধ্যে কিনে ফেলছেন। ঈদ যত ঘনিয়ে আসছে, দাম আরও বাড়তে পারে। তাই আগেভাগে কিনে নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।’

Link copied!