গাজার অবরুদ্ধ উপকূলে ইসরায়েলের নৌবাহিনীর হামলায় আটকানো হয়েছে ‘ম্যাডলিন’ নামের একটি মানবিক সহায়তা জাহাজ, যার নাম রাখা হয়েছে গাজার প্রথম নারী মৎস্যজীবী ম্যাডলিন কুলাবের বের নামে।
৩১ বছর বয়সী ম্যাডলিন চার সন্তানের মা এবং পঞ্চম সন্তানের অপেক্ষায় আছেন। ছোটবেলা থেকেই বাবার সঙ্গে সমুদ্রের কাছে লেগে থাকা ম্যাডলিন পনের বছর বয়সে পরিবারের দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে মাছ ধরার কাজ শুরু করেন।

ইসরায়েলের অবরোধ ও সামরিক হামলার মাঝেও তিনি হাল ছাড়েননি, এখনও প্রতিদিন সমুদ্রে যান গাজার মানুষের জন্য।
‘ফ্রিডম ফ্লোটিলা’ আন্তর্জাতিক সংহতি সংগঠন গাজার অবরোধ ভাঙতে ২০২৫ সালের ১ জুন ইতালির কাতানিয়া উপকূল থেকে ‘ম্যাডলিন’ নামের এই জাহাজ পাঠায়।
এতে ছিল বিভিন্ন দেশের সাহসী মানবাধিকারকর্মী ও সাংবাদিক। তাদের উদ্দেশ্য ছিল শুধুমাত্র খাদ্য ও ওষুধ পৌঁছে দেওয়া নয়, গাজার চলমান মানবিক সংকটের কষ্টের গল্প বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরা।
তবে আন্তর্জাতিক জলসীমায় ইসরায়েলি নৌবাহিনী জাহাজে ড্রোন হামলা এবং কমান্ডো নামিয়ে অভিযান চালিয়ে সেটি আটক করে, জাহাজের সদস্যদের গ্রেফতার করে।
ম্যাডলিন বলেন, ‘ইসরায়েলের অবরোধ শুধু জীবিকার লড়াই নয়, এটি সম্মানের লড়াই।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমার নৌকা হয়তো ধ্বংস হয়েছে, কিন্তু আমার নাম থাকবে এবং সমুদ্র পাড়ি দেবে।’ এই নামকরণ মানবতার একটি বড় আহ্বান এবং গাজার মানুষের প্রতি বিশ্বব্যাপী সংহতির প্রতীক।

আন্তর্জাতিক মহল থেকে এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানানো হয়েছে। জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিনিধি থেকে শুরু করে বিভিন্ন দেশের সরকার ও মানবাধিকার সংগঠন ইসরায়েলের এই নৌঅবরোধ ও হামলাকে সমুদ্র আইন লঙ্ঘন।
পাশাপাশি তারা ইসরায়েলের এই পদক্ষেপকে মানবিক সাহায্য বাধাগ্রস্ত করার ঘটনা হিসেবে দেখছে। তবে অবরোধ এবং হামলা এখনও চলছে, গাজার সাধারণ মানুষকে নিয়ে ইসরায়েলের সামরিক নীতি চলমান।
ম্যাডলিন কুলাবের সংগ্রামের গল্প শুধু গাজার নারীর জীবনের প্রতিচ্ছবি নয়, এটি একটি প্রতিরোধের গল্প, যেখানে এক নারীর সমুদ্রের সঙ্গে একাত্মতা, লড়াই আর মানবিকতার বার্তা জাহাজের মাধ্যমে বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরেছে।
আপনার মতামত লিখুন :