আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা অভিযোগ করেছেন, রাজ্যে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের অনুভূতিতে আঘাত হানার উদ্দেশ্যে ‘গরুর মাংসকে একটি অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে’। সম্প্রতি ঈদুল আজহার পর আসামের বিভিন্ন স্থানে প্রকাশ্যে গরুর মাংস ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা সামনে আসার পর মুখ্যমন্ত্রী এ বক্তব্য দেন।
ত্রিপুরা টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মুসলিমদের ধর্মীয় উৎসব ঈদের পরপরই রাজ্যের কিছু উন্মুক্ত স্থানে, বিশেষ করে হিন্দু-অধ্যুষিত এলাকায় গরুর মাংস ফেলে রাখার খবর পাওয়া গেছে। এসব ঘটনা উসকানিমূলক ও শান্তি বিনষ্টের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলেও অভিযোগ করেন শর্মা।
মঙ্গলবার গৌহাটিতে রাজ্য বিজেপি কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আগে মুসলিম পরিবারগুলো হিন্দুদের অনুভূতির প্রতি সংবেদনশীলতা দেখাত। এখন কেউ কেউ উদ্দেশ্যমূলকভাবে গরুর মাংস ফেলে হিন্দুদের এলাকা ছাড়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি করছে। এটা এক ধরনের সামাজিক সন্ত্রাস।’
শর্মা আরও বলেন, গৌহাটির মতো শহরেও এ ধরনের ঘটনা ঘটছে। এ ভিষয়ে উদাহরণ দিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘কটন বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে এমন মাংস পড়ে থাকতে দেখা গেছে। এটা খুবই উদ্বেগজনক। ঈদের সময় গরুর মাংস খাওয়াটা যার যার ব্যক্তিগত বিষয়, কিন্তু সেটা অন্যদের উসকানি দিতে ব্যবহার করা যাবে না।’
তিনি অভিযোগ করেন, ‘যেসব এলাকায় এই ধরনের ঘটনা ঘটছে, সেসব জায়গা মূলত হিন্দুপ্রধান অঞ্চল।’
‘এভাবে চলতে থাকলে ২০ বছরের মধ্যে কামরূপ-কামাখ্যার মতো পবিত্র স্থানেও গরুর মাংস ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা দেখতে হবে।’ বলেন মুখ্যমন্ত্রী।
ধুবড়ি জেলার একটি মন্দির প্রাঙ্গণে গরুর মাংস পড়ে থাকার ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রশাসন ইন্টারনেট সেবা সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয় এবং গতকাল পর্যন্ত ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রশাসন ধারণা করছে, উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবেই এসব ঘটনা ঘটানো হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে অবৈধ অভিবাসন নিয়ে নিজের পূর্বের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আসাম জনসংখ্যাগত এবং রাজনৈতিকভাবে হুমকির মুখে পড়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এই অবৈধ অভিবাসীদের ঠেলে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে আমাদের সমর্থন করছেন। কিন্তু আসামের মধ্যেই কিছু মানুষ এই উদ্যোগের বিরোধিতা করছে।’
শর্মা আরও বলেন, ‘শুধু মোদিজি আমাদের রক্ষা করতে পারবেন না, আসামের মানুষকেও একসঙ্গে দাঁড়াতে হবে।’
আপনার মতামত লিখুন :