ইরানের রাজধানীতে ইসরায়েলি হামলার পর তেলের দাম ৭ শতাংশেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে, যা গত দুই মাসেরও বেশি সময়ের মধ্যে সর্বোচ্চ। ফলে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে, বিশেষ করে তেল সরবরাহ ব্যাহত সৃষ্টি করতে পারে।
শুক্রবার (১২ জুন) ব্রেন্ট ক্রুড ফিউচারের দাম ৫ দশমিক ২৯ ডলার বা ৭ দশমিক ৬৩ শতাংশ বেড়ে ব্যারেলপ্রতি ৭৪ দশমিক ৬৫ ডলারে পৌঁছেছে, যা ২ এপ্রিলের পর থেকে সর্বোচ্চ। মার্কিন ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট ক্রুডের দাম ৫ দশমিক ৩৮ ডলার বা ৭ দশমিক ৯১ শতাংশ বেড়ে ব্যারেল প্রতি ৭৩ দশমিক ৪২ ডলারে দাঁড়িয়েছে, যা ৩ ফেব্রুয়ারির পর থেকে সর্বোচ্চ।
এদিন ভোরে ইসরায়েল জানিয়েছে, ‘তারা ইরানে হামলা করেছে। ইরানি গণমাধ্যম জানিয়েছে, পারমাণবিক বোমার জন্য উপকরণ উৎপাদন বন্ধ করার জন্য ইরানের চুক্তি জয়ের জন্য মার্কিন প্রচেষ্টার উপর উত্তেজনা বৃদ্ধির সাথে সাথে তেহরানে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে।’
এমএসটি মার্কির সিনিয়র জ্বালানি বিশ্লেষক শৌল কাভোনিকের মতে, ইরানের উপর ইসরায়েলি আক্রমণের ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
তিনি বলেন, তেল সরবরাহ বাস্তবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আগে এই সংঘাতকে এই অঞ্চলে তেল অবকাঠামোর উপর ইরানের প্রতিশোধের পর্যায়ে নিয়ে যেতে হবে।" তিনি আরও বলেন, চরম পরিস্থিতিতে অবকাঠামোর উপর আক্রমণ বা হরমুজ প্রণালী দিয়ে চলাচল সীমিত করে ইরান প্রতিদিন ২০ মিলিয়ন ব্যারেল তেল সরবরাহ ব্যাহত করতে পারে।
ফিলিপ নোভার সিনিয়র বাজার বিশ্লেষক প্রিয়াঙ্কা সচদেব বলেন, ‘ইরান জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে এবং প্রতিশোধ নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে, যা কেবল বিঘ্ন ঘটানোর ঝুঁকিই বাড়ায় না বরং অন্যান্য প্রতিবেশী তেল উৎপাদনকারী দেশগুলোতেও প্রভাবের ঝুঁকি বাড়ায়।’
অন্যান্য বাজারের মধ্যে এশিয়ার প্রথম দিকের বাণিজ্যে শেয়ারের দাম কমেছে, যার নেতৃত্বে মার্কিন ফিউচারে বিক্রিবাট্টা দেখা দিয়েছে, যখন বিনিয়োগকারীরা সোনা এবং সুইস ফ্রাঙ্কের মতো নিরাপদ আশ্রয়স্থলের দিকে ঝুঁকছেন।
আইজি বাজার বিশ্লেষক টনি সাইকামোর মতে, উদ্বেগজনক বৃদ্ধি আর্থিক বাজারে ঝুঁকির মনোভাবের উপর একটি আঘাত।
তিনি বলেন, ‘যদিও আমরা ইরানের কাছ থেকে আরও খবর এবং সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়ার জন্য অপেক্ষা করছি, তবুও সপ্তাহান্তের আগে ব্যবসায়ীরা ঝুঁকি-সন্ধানকারী অবস্থানগুলো হ্রাস করার কারণে ঝুঁকির মনোভাবের আরও অবনতি দেখতে পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’
ইসরায়েল প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, তেহরানের পারমাণবিক অবকাঠামো, ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কারখানা এবং অনেক সামরিক সক্ষমতা ক্ষতিগ্রস্ত করাই তেল আবিবের লক্ষ্য।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বৃহস্পতিবার ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের হামলাকে ‘একতরফা পদক্ষেপ' বলে অভিহিত করে বলেছেন, ওয়াশিংটন এতে জড়িত নয়।
তেহরানের প্রতি তিনি আহ্বান জানিয়েছেন যাতে তারা এই অঞ্চলে মার্কিন স্বার্থ বা কর্মীদের লক্ষ্যবস্তু না করে।
আপনার মতামত লিখুন :