ইসরায়েলের বিরুদ্ধে পাল্টা হামলা এখনও শেষ হয়নি এবং এই হামলা আরও চলবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইরান। দেশটির এক শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তার বরাতে রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা ফারস এ তথ্য প্রকাশ করেছে।
একইসঙ্গে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, ইরানের এই অবস্থান ইসরায়েলের জন্য ‘অত্যন্ত যন্ত্রণাদায়ক ও দুশ্চিন্তাজনক’ হতে পারে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইরানি ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘গতরাতের সীমিত প্রতিক্রিয়া দিয়ে এই সংঘাত শেষ হচ্ছে না। আমাদের প্রতিরোধ অব্যাহত থাকবে।’
শুক্রবার (১৩ জুন) স্থানীয় সময় ভোররাতে ইরানের বিভিন্ন স্থাপনায় বড় পরিসরের বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। এর পাল্টা জবাবে শনিবার (১৪ জুন) ভোররাতে ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। দুই দেশই সারারাত একে অপরের দিকে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে।
হামলায় ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর প্রধান জেনারেল হোসেইন সালামি, সশস্ত্র বাহিনীর চিফ অব স্টাফ জেনারেল মোহাম্মদ বাঘেরি এবং কয়েকজন পরমাণু বিজ্ঞানীর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে ইরানি গণমাধ্যম।
অন্যদিকে, ইরানের পাল্টা হামলায় তেল আবিবসহ মধ্য ইসরায়েলের বিভিন্ন এলাকায় বড় ধরনের বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। ম্যাগেন ডেভিড অ্যাডমের তথ্য অনুযায়ী, অন্তত ৮০ জন আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে তিনজন পরে মারা যান।
ইরানি সংবাদমাধ্যম দাবি করেছে, ইসরায়েলে শতাধিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছে। তবে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী জানিয়েছে, হামলার প্রকৃত সংখ্যা ১০০টির নিচে এবং রাতভর চারটি পৃথক দফায় ডজনখানেক ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে।
ইরানের কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্র মধ্য ইসরায়েলের অভ্যন্তরে আঘাত হানার ফলে বিভিন্ন স্থানে আগুন ধরে যায় এবং আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বহু এলাকা থেকে ধোঁয়া উঠতে দেখা গেছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই সংঘর্ষ কেবল ইসরায়েল-ইরান দ্বন্দ্বের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে পুরো মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে নতুন উত্তেজনা ও নিরাপত্তা ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে। এর ফলে আঞ্চলিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও হুমকির মুখে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা।