ঢাকা রবিবার, ২২ জুন, ২০২৫

আমেরিকা ছাড়াই ফোর্ডো পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা করতে চায় ইসরায়েল

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: জুন ২২, ২০২৫, ০৩:৪২ এএম
ছবি - সংগৃহীত

ইসরায়েলের কর্মকর্তারা ট্রাম্প প্রশাসনকে বলেছেন, তারা ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির গুরুত্বপূর্ণ অংশ ধ্বংস করতে দুই সপ্তাহ অপেক্ষা করতে চান না। তাই চুক্তির সময়সীমা শেষ হওয়ার আগেই তারা একা ব্যবস্থা নিতে পারে। এ নিয়ে ট্রাম্পের দলের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের এতে জড়িত থাকা উচিত কি না, তা নিয়ে বিতর্ক চলছে।

বিষয়টি সম্পর্কে অবগত দুটি সূত্র বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছে, গত বৃহস্পতিবার ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তাদের কাছে ইসরায়েল তাদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছে, যাকে তারা একটি ‘উত্তেজনাপূর্ণ ফোন কল’ বলে বর্ণনা করেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সূত্রগুলো জানিয়েছে, ইসরায়েলের কর্মকর্তারা বলেছেন, তারা প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত দুই সপ্তাহ অপেক্ষা করতে চান না, যে সময়ের মধ্যে ঠিক হবে যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েল-ইরান যুদ্ধে যুক্ত হবে কি না।

একটি নিরাপত্তা সূত্র জানায়, এ বিষয়ে ফোনালাপে অংশ নিয়েছিলেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু, প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ এবং সেনাপ্রধান ইয়াল জামির।

সূত্র বলছে, ইসরায়েল মনে করে, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ ফোর্ডোর যে স্থাপনাটি গভীরে পাহাড় খনন করে বানানো হয়েছে, সেটিতে হামলার সুযোগ সীমিত। শুধু যুক্তরাষ্ট্রেরই এমন বাঙ্কার ধ্বংসকারী বোমা আছে, যা সেখানে পৌঁছাতে পারে।

বিষয়টি সম্পর্কে অবগত ওয়াশিংটনের এক ব্যক্তি জানিয়েছেন, ইসরায়েল যুক্তরাষ্ট্রকে বলেছে, ট্রাম্পের দেওয়া দুই সপ্তাহ অনেক দেরি হয়ে যাবে, তাদের মতে এখনই পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। তবে ফোনালাপে ইসরায়েল এই কথা সরাসরি বলেছে কি না, সেটা তিনি নিশ্চিত নন।

ফোনালাপের সময় মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স তার মত স্পষ্ট করে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি যুদ্ধে জড়ানো উচিত নয়। তিনি ইঙ্গিত দেন, ইসরায়েল যেন ওয়াশিংটনকে যুদ্ধে টেনে না আনে। এক নিরাপত্তা সূত্র জানায়, ওই আলোচনায় প্রতিরক্ষা সচিব পিট হেগসেথও অংশ নিয়েছিলেন।

রয়টার্স নিশ্চিত করতে পারেনি ফোনালাপে আর কারা অংশ নিয়েছিলেন। তবে ট্রাম্প প্রকাশ্যে বলেছিলেন, ইসরায়েলের একার পক্ষে ফোর্ডো ধ্বংস করা সম্ভব নয়। জনসমক্ষে নেতানিয়াহু ফোর্ডোতে হামলার সম্ভাবনা নাকচ করেননি, যদিও ইসরায়েল কীভাবে এটি করবে, সে বিষয়ে কোনো স্পষ্ট তথ্য দেননি।

চারটি সূত্র জানিয়েছে, এখন ইসরায়েলের এককভাবে সামরিক অভিযান চালানোর সম্ভাবনা বাড়ছে। ইরানের আকাশে ইসরায়েলের বিমান শ্রেষ্ঠত্ব এমন অভিযানের সম্ভাবনা জোরদার করলেও, এটি এখনও ঝুঁকিপূর্ণ, দুটি সূত্র জানিয়েছে।

একটি সূত্র আরও জানিয়েছে, যুদ্ধের খরচের কথা বিবেচনা করে ইসরায়েলিরা মনে করে যে তাদের গতি আছে এবং তাদের হাতে সীমিত সময় আছে। সূত্রটি বলেছে, ‘আমি মনে করি না তারা আর বেশি দিন অপেক্ষা করবে।’

এই ধরনের অভিযানে শুধু বিমান হামলা, স্থল অভিযান, নাকি দুটোই থাকবে—তা এখনো পরিষ্কার নয়।

দুটি সূত্র জানায়, ইসরায়েল পুরো স্থাপনাটি ধ্বংস না করে সেটিকে বড় ধরনের ক্ষতি করতে পারে। এর মানে হতে পারে, স্থাপনাটি ভেঙে ফেলার চেয়ে এর ভেতরে যেটা আছে, সেটি ধ্বংস করাই ইসরায়েলের মূল লক্ষ্য বলে একটি সূত্র ইঙ্গিত দিলেও বিস্তারিত বলতে রাজি হয়নি।