ঢাকা মঙ্গলবার, ২৪ জুন, ২০২৫

যুদ্ধবিরতি হলে কার লাভ ইরান না ইসরায়েলের?

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: জুন ২৪, ২০২৫, ১০:৫৫ এএম
ইরান-ইসরায়েল সংঘাত। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ গ্রাফিক্স

পারমাণবিক ইস্যুতে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনার পারদ ক্রমেই তীব্র হচ্ছে। ইরান-ইসরায়েলের মধ্যে চলছে হামলা-পাল্টা হামলার ঘটনা। এর মধ্যেই ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলার ঘটনা উদ্বেগ ছড়িয়েছে বিশ্বজুড়ে। এমন পরিস্থিতিতে ছড়িয়েছে ইরান-ইসরায়েলের যুদ্ধবিরতির গুঞ্জনের খবর। যার ফলে আন্তর্জাতিক মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। প্রশ্ন উঠছে এই যুদ্ধবিরতি কার জন্য সত্যিকারের আশীর্বাদ?

যুদ্ধবিরতিতে সাধারণ নাগরিকদের প্রাণ বাঁচানো থেকে শুরু করে তেলের বাজারে স্থিতিশীলতা আনা, আন্তর্জাতিক কূটনীতির নতুন দ্বার উন্মোচন এবং আঞ্চলিক রাজনীতিতে নব্য সমীকরণ অনেক পক্ষের জন্য স্বস্তি বয়ে আনবে। তবে এর পেছনে যে গভীর রাজনৈতিক হিসাব-নিকাশ এবং বৃহৎ শক্তিগুলোর কৌশলগত লাভও জড়িত, তা অস্বীকার করার উপায় নেই।

মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলের সাধারণ জনগণের জন্য

যুদ্ধবিরতিতে সবচেয়ে বড় আশীর্বাদ মধ্যপ্রাচ্যের সাধারণ নাগরিকদের জন্য। ইরান-ইসরায়েলের সরাসরি সংঘাতের অর্থ ব্যাপক প্রাণহানি, মানবিক বিপর্যয় এবং শরণার্থী সংকট। যুদ্ধবিরতি অন্তত ক্ষয়ক্ষতির গতি কমিয়ে দিবে এবং নতুন করে কূটনৈতিক সমাধানের সুযোগ তৈরি করবে।

বিশ্ব অর্থনীতি ও জ্বালানি বাজার

যুদ্ধবিরতি আন্তর্জাতিক তেলের বাজারে স্থিতিশীলতার বার্তা দিচ্ছে। ইরান ও ইসরায়েলের যুদ্ধমান পরিস্থিতি বিশ্বের তেল সরবরাহে বড় ধরনের প্রভাব ফেলেছে। বিশেষ করে হরমুজ প্রণালি বন্ধের ঘোষণায় আন্তর্জাতিক তেলের বাজারে অস্থিরতা দেখা গেছে। যুদ্ধবিরতির ফলে বাজার কিছুটা স্থিতিশীল হবে, যা বিশ্ব অর্থনীতির জন্য আশীর্বাদ।

আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক শক্তিগুলোর জন্য

যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, রাশিয়া, চীনসহ বড় শক্তিগুলো চাইছে এই সংঘাত বিস্তৃত না হোক। যুদ্ধবিরতির ফলে তারা নতুন করে কূটনৈতিকভাবে এই সংঘাতকে নিয়ন্ত্রণ করার সময় পাবে। ফলে যুদ্ধবিরতি তাদের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার জন্যও ইতিবাচক হবে।

আঞ্চলিক মিত্র রাষ্ট্রগুলোর জন্য

সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো দেশগুলো সরাসরি এই যুদ্ধে জড়াতে চাইছে না। যুদ্ধবিরতির ফলে তারা স্বস্তির নিশ্বাস ফেলবে। ইরাক, লেবানন, সিরিয়া—এসব দেশের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতিও আরও খারাপ হতে পারে, যুদ্ধবিরতি তা রোধ করবে।

ইসরায়েলি ও ইরানি শাসক গোষ্ঠীর জন্য

আন্তরিকভাবে নয়, কিন্তু বাস্তবিক দৃষ্টিকোণ থেকে এই যুদ্ধবিরতি দুই দেশের শাসক গোষ্ঠীর জন্যও এক ধরনের আশীর্বাদ। দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধ তাদের অভ্যন্তরীণ চাপ ও আন্তর্জাতিক সমালোচনা বাড়াবে। যুদ্ধবিরতি তাদের কৌশল পুনর্বিন্যাসের সুযোগ দিবে।