ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন, ২০২৫

১২ দিনের যুদ্ধে অস্ত্র সংকটে ইসরায়েল

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: জুন ২৬, ২০২৫, ১০:২২ এএম
অস্ত্র সংকটে ইসরায়েল। ছবি- সংগৃহীত

ইরানের সঙ্গে টানা ১২ দিন ধরে চলা যুদ্ধের পর অস্ত্র ও গোলাবারুদের ঘাটতির মুখে পড়েছে ইসরায়েল। মার্কিন সংবাদমাধ্যম এনবিসি নিউজ এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ইসরায়েলের অস্ত্রভাণ্ডারে গুরুত্বপূর্ণ সরঞ্জাম ও গোলাবারুদের অভাব দেখা দিয়েছে।

মার্কিন প্রশাসনের অন্তত দুইজন অজ্ঞাতনামা কর্মকর্তার বরাতে জানানো হয়, ইসরায়েল এখন ‘গুরুত্বপূর্ণ কিছু অস্ত্রে বিশেষভাবে ঘাটতি’ অনুভব করছে। আরও তিনজন কর্মকর্তা নিশ্চিত করেন, এই সংকট ইসরায়েলকে কৌশলগতভাবে দুর্বল করে তুলছে।

এই তথ্য সামনে এসেছে এমন সময়ে, যখন ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর রয়েছে। কাতারের মধ্যস্থতায় এবং যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সহায়তায় এই যুদ্ধবিরতি চুক্তি সম্পন্ন হয়। তবে এটি এখনও নাজুক অবস্থায় রয়েছে বলে রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ইঙ্গিত মিলেছে।

ইসরায়েল এখনো পর্যন্ত অস্ত্র সংকট বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি। তবে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ইসরায়েলকে বিলিয়ন ডলারের সামরিক সহায়তা প্রদান এবং সাম্প্রতিক যুদ্ধে সক্রিয় প্রতিরক্ষা সহায়তা দেওয়া হয়েছে বলে এনবিসি দাবি করেছে।

১২ জুন, ইরানের বিরুদ্ধে গোপনে পারমাণবিক কর্মসূচি পরিচালনার অভিযোগ তুলে সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরায়েল। এর পাল্টা জবাবে ইরানও ‘অপারেশন ট্রু প্রমিস-৩’ নাম দিয়ে ইসরায়েলের সামরিক স্থাপনায় আঘাত হানে।

যদিও যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে সামরিক উদ্দেশ্যপূর্ণ বলছে, তেহরান তা বারবার অস্বীকার করেছে। এমনকি ১৮ জুন আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ)-র মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রোসি জানান, ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির কোনো সুনির্দিষ্ট প্রমাণ তাদের কাছে নেই।

এরপর ২২ জুন যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের পক্ষে ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায়। এর পাল্টা জবাবে ২৪ জুন ইরান যুক্তরাষ্ট্রের কাতারে অবস্থিত আল উদেইদ বিমানঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। কাতার ও যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, বেশিরভাগ ক্ষেপণাস্ত্র মাঝপথেই প্রতিহত হয় এবং তাতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

এই হামলার পূর্বে ইরান কাতারকে আগাম অবহিত করেছিল বলে জানান ডোনাল্ড ট্রাম্প। একই রাতে তিনি জানান, ইসরায়েল ও ইরান যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। তবে ইরান সরকার ‘চুক্তি’ বিষয়ে কোনো স্বীকৃতি দেয়নি। বরং দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, ইসরায়েল যদি আগ্রাসন চালায়, তবে সঙ্গে সঙ্গে পাল্টা জবাব দেওয়া হবে।

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিও এখন পর্যন্ত যুদ্ধবিরতি বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।

এদিকে যুক্তরাজ্যের সাবেক সিরিয়া বিষয়ক বিশেষ দূত পিটার ফোর্ড রিয়া নভোস্তিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘যুদ্ধবিরতিতে কিছু লঙ্ঘন হলেও এটি টিকে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ, ইসরায়েল এই মুহূর্তে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার মতো সামরিক সক্ষমতা ধরে রাখতে পারছে না এবং তাদের পক্ষেই শান্তির প্রয়োজন বেশি।’