সিরিয়ায় দ্রুজ-অধ্যুষিত শহর সুওয়াইদায়ের আশেপাশে কয়েকদিন ধরে চলা সাম্প্রদায়িক সহিংসতার কারণে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছেন প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা। শনিবার (১৯ জুলাই) টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে এই ঘোষণা দেন তিনি।
এক প্রতিবেদনে বিবিসি জানায়, সিরিয়ার সুওয়াইদায় শহরের রাস্তায় স্থানীয় বেদুইন উপজাতি ও দ্রুজ সম্প্রদায়ের মধ্যে ভয়াবহ বন্দুকযুদ্ধ হয়েছে। উভয় পক্ষের বিরুদ্ধেই নৃশংসতার অভিযোগ উঠেছে। সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া গ্রাফিক ফুটেজে রাস্তায় ছড়িয়ে থাকা একাধিক মরদেহ দেখা গেছে।
সিরিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা বলেছেন, ‘আমরা সবাই যে কঠিন সময় পার করছি তা মোকাবেলায় এখন সবচেয়ে জরুরি হলো একতা ও পারস্পরিক সহযোগিতা।’
যুদ্ধবিরতি মেনে চলা হচ্ছে কিনা, তা এখনও নিশ্চিত নয়। তবে শনিবার প্রকাশিত কিছু যাচাই না করা প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, উপজাতীয় যোদ্ধারা ইতোমধ্যেই যুদ্ধবিরতির শর্ত ভঙ্গ করছে।
সিরিয়ার সুয়েইদা প্রদেশে চলমান সংঘর্ষ থামাতে দেশটির অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করার পর একটি যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। দ্রুজ সম্প্রদায়ের সুরক্ষায় এই পদক্ষেপে ‘ইসরায়েল’ অনুমোদন দিয়েছে।
দ্রুজরা শিয়া ইসলাম থেকে উদ্ভূত একটি গোপন ও বিশেষ মতবাদে বিশ্বাসী, যারা সিরিয়াসহ ‘ইসরায়েল’ ও লেবাননে সংখ্যালঘু হিসেবে বাস করে। তারা সিরিয়ার বর্তমান সরকারকে অবিশ্বাস করে এবং সুওয়াইদায় তাদের নিজস্ব সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় পরিচয় রক্ষায় দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয়।
এই সপ্তাহের শুরুতে ‘ইসরায়েল’ সরাসরি সংঘাতে হস্তক্ষেপ করে। তারা দ্রুজ জনগোষ্ঠীর প্রতি সমর্থন ঘোষণা করার পাশাপাশি দামেস্কে সরকারি বাহিনী ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ভবনে হামলা চালায়।
শনিবার ‘ইসরায়েলে’র পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিডিয়ন সার এক সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে সিরিয়ার অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারার সংখ্যালঘু সুরক্ষার প্রতিশ্রুতি নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘সিরিয়ায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অংশ হওয়া অত্যন্ত বিপজ্জনক। গত ছয় মাসে তা বারবার প্রমাণিত হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সিরিয়ার সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা ও অধিকার নিশ্চিত করা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দায়িত্ব।’
এদিকে, যুক্তরাজ্যভিত্তিক পর্যবেক্ষক সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস (এসওএইচআর) জানিয়েছে, রোববার থেকে শুরু হওয়া এই সহিংসতায় এখন পর্যন্ত ৭১৮ জন নিহত হয়েছেন।