মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কট্টর ডানপন্থি রাজনৈতিক কর্মী ও প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সহযোগী চার্লি কার্ক হত্যাকাণ্ডে গ্রেপ্তার হওয়া খুনি সম্পর্কে নতুন তথ্য প্রকাশ করেছে ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই)। সংস্থাটি জানিয়েছে, ২২ বছর বয়সি হামলাকারী টাইলার রবিনসন একজন ট্রান্সজেন্ডার রুমমেটের সঙ্গে বসবাস করতেন। ওই রুমমেট বর্তমানে তদন্তে সহযোগিতা করছেন।
গত বুধবার চার্লি কার্ককে গুলি করে হত্যা করা হয়। তিনি তখন কলেজ ট্যুর ‘আমেরিকান কামব্যাক’ চলাকালে বক্তব্য দিচ্ছিলেন। ওই সময় একজন দর্শক ট্রান্সজেন্ডার গণহত্যা প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলে গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে।
শনিবার আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সূত্র জানায়, খুনি টাইলার রবিনসন ল্যান্স টুইগস (২২) নামে এক ট্রান্সজেন্ডার সঙ্গীর সঙ্গে থাকতেন। টুইগস নারীত্বে রূপান্তরের প্রক্রিয়ার মধ্যে ছিলেন এবং এখন এফবিআইকে পূর্ণ সহযোগিতা করছেন।
কার্ক দীর্ঘদিন ধরে এলজিবিটিকিউ+ এজেন্ডা ও লিঙ্গ পরিবর্তনের বিরোধিতা করে আসছিলেন। ফলে ধারণা করা হচ্ছে, এই কারণেই তিনি রবিনসনের হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হতে পারেন। পাবলিক রেকর্ড অনুযায়ী, রবিনসন ও টুইগস একই ঠিকানায় বসবাস করতেন। নিউ ইয়র্ক পোস্টকে টুইগসের এক আত্মীয় জানিয়েছেন, তারা সত্যিই রুমমেট ছিলেন এবং টুইগসকে তিনি পরিবারের জন্য ‘অন্ধকার দাগ’ বলে আখ্যায়িত করেছেন।
এফবিআই কর্মকর্তাদের মতে, টুইগসের সহযোগিতা তদন্তে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। সংস্থার হাতে আসা টেক্সট মেসেজ ও অন্যান্য যোগাযোগে ঘটনাস্থলে পাওয়া গুলির খোসার উল্লেখ রয়েছে। একই সঙ্গে ‘ড্রপ পয়েন্ট’ থেকে রাইফেল তোলার নির্দেশও পাওয়া গেছে।
৩১ বছর বয়সি চার্লি কার্ক উটাহ ভ্যালি বিশ্ববিদ্যালয়ে বক্তৃতা দেওয়ার সময় গুলিবিদ্ধ হন। গুলি লাগার কিছুক্ষণ আগে তাকে ট্রান্সজেন্ডার বন্দুকধারীদের বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল। তখনই দূর থেকে ছোড়া গুলিতে তার ঘাড়ে আঘাত লাগে। ঘটনাস্থলে পাওয়া খোসাটিতে লেখা ছিল—‘Hey fascist, catch’। গুলিটি প্রায় ২০০ গজ দূর থেকে .30-06 ক্যালিবারের মাউসার বোল্ট-অ্যাকশন রাইফেল দিয়ে ছোড়া হয়। পরে রাইফেলটি কাছের জঙ্গলে তোয়ালে মোড়ানো অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।
গুলিবর্ষণের পর রবিনসন নিজের পোশাক পরিবর্তন করেন। হকমান্ডের তথ্য অনুযায়ী, তার বার্তায় পোশাক পরিবর্তনের কথাও উল্লেখ ছিল। পরে রবিনসন এফবিআইয়ের কাছে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হন। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা এখনো রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের উদ্দেশ্য ও সম্ভাব্য নেটওয়ার্ক খতিয়ে দেখছে।
টাইলার রবিনসন একটি ঐতিহ্যবাহী পরিবারে বেড়ে উঠলেও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বামপন্থি মতাদর্শে ঝুঁকছিলেন। তিনি কোনো রাজনৈতিক দলের সদস্য হিসেবে নিবন্ধিত ছিলেন না। কর্তৃপক্ষ এই ঘটনাকে ‘রাজনৈতিক হত্যা’ হিসেবে বর্ণনা করেছে।
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান