ঢাকা রবিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৫

গাজায় আকাশ থেকে ত্রাণ ফেলার নামে কী করছে ইসরায়েল

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: জুলাই ২৭, ২০২৫, ১১:১৯ এএম
গাজায় বিমানে করে খাবার বিতরণ বিশ্ব খাদ্য সংস্থার। ছবি- সংগৃহীত

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় আকাশ থেকে ত্রাণ ফেলার কথা জানিয়েছে ইসরায়েল। পাশাপাশি দেশটি ত্রাণ সহায়তার জন্য মানবিক করিডর খোলার উদ্যোগ নিয়েছে। খাদ্য সংকটের জেরে গাজায় অনাহারে দিন দিন মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ার কারণে আন্তর্জাতিক মহলে সমালোচনা বেড়ে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে ইসরায়েল এ কথা জানাল।

বার্তা আদান-প্রদানের মাধ্যম টেলিগ্রামে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ঘোষণা করেছে, গাজা উপত্যকায় ত্রাণ প্রবেশের প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে তারা আকাশ থেকে এক দফা ত্রাণসামগ্রী ফেলার কাজ সম্পন্ন করেছে। যদিও বিভিন্ন সাহায্য সংস্থা এটিকে গাজায় ত্রাণ পৌঁছানোর জন্য অকার্যকর উপায় বলে সতর্ক করেছে।

মানবিক সহায়তা সংশ্লিষ্ট শীর্ষ কর্মকর্তারা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, গাজার ২০ লাখের বেশি মানুষের খাদ্যসংকট মোকাবিলায় আকাশ থেকে ফেলা ত্রাণ যথেষ্ট নয়। স্থলপথে আরও বেশি ত্রাণ পাঠানোর অনুমতি দেওয়ার দাবি তুলেছেন তারা।

ইতিমধ্যে ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে জানিয়েছে, রোববার (২৭ জুলাই) সকালে গাজার নির্দিষ্ট অংশে ত্রাণ বিতরণ সহজ করতে ‘মানবিক বিরতি’ কার্যকর হবে। গত ২ মার্চ গাজার ওপর পূর্ণ অবরোধ আরোপ করে ইসরায়েল। মে মাসের শেষ দিকে দেশটি আবার স্বল্প পরিমাণে ত্রাণ সরবরাহ চালু করার অনুমতি দেয়।

সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) জানিয়েছে, তারাও গাজায় আবার আকাশ থেকে ত্রাণ ফেলা শুরু করবে। যুক্তরাজ্য জানিয়েছে, দেশটি গাজায় ত্রাণ সরবরাহে জর্ডানসহ অন্য অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করবে।

ফিলিস্তিনজুড়ে খাদ্য সংকটের এ হাহাকারে অবরুদ্ধ গাজাবাসীর জন্য ত্রাণসামগ্রী নিয়ে যাওয়া আন্তর্জাতিক অলাভজনক সংস্থা ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশনের (এফএফসি) জাহাজ হান্দালাকে বাধা দিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এক বিবৃতিতে সংস্থাটি জানিয়েছে, জাহাজটির আরোহীদের ‘অপহরণ’ করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ওই সময় জাহাজটি গাজা উপকূল থেকে প্রায় ৪০ নটিক্যাল মাইল দূরে আন্তর্জাতিক জলসীমায় ছিল।

এদিকে,  ইসরায়েল যখন আকাশ থেকে ত্রাণ ফেলা বা মানবিক করিডর খোলার উদ্যোগের কথা জানিয়েছে, তখন ফিলিস্তিনি বেসামরিক প্রতিরক্ষা দপ্তর বলেছে, সবশেষ ইসরায়েলি হামলা ও গুলিতে আরও ৫০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে কিছু মানুষ ত্রাণ বিতরণকেন্দ্রের কাছে নিহত হন।

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, ‘আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদাসীনতা ও নিষ্ক্রিয়তা ব্যাখ্যা করার মতো না। কোনো করুণা নেই, সত্য নেই, নেই কোনো মানবতা।’

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের বৈশ্বিক সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে গুতেরেস বলেন, ২৭ মে থেকে এ পর্যন্ত খাদ্য সংগ্রহের চেষ্টা করতে গিয়ে ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে এক হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ওই সময় থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল-সমর্থিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন জাতিসংঘের বিকল্প হিসেবে গাজায় ত্রাণ বিতরণ শুরু করে।