ঢাকা সোমবার, ১৮ আগস্ট, ২০২৫

কুয়েতে বিষাক্ত মদ তৈরির ‘মূলহোতা’ বাংলাদেশি, পান করে ২৩ জনের মৃত্যু

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: আগস্ট ১৮, ২০২৫, ০৯:২১ এএম
কুয়েতের দুই পুলিশ সদস্য। ছবি- সংগৃহীত

স্থানীয়ভাবে তৈরি বিষাক্ত মদ উৎপাদন ও সরবরাহের অভিযোগে ৬৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে কুয়েতি কর্তৃপক্ষ। এই মদ পান করে গত কয়েক দিনে অন্তত ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে একজন বাংলাদেশি নাগরিক, যিনি এই অপরাধচক্রের মূলহোতা বলে জানায় কুয়েতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা রোববার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।

শনিবার রাতে এক বিবৃতিতে মন্ত্রণালয় জানায়, অভিযানে আবাসিক ও শিল্প এলাকায় পরিচালিত ছয়টি মদের কারখানা এবং আরও চারটি নির্মাণাধীন কারখানা জব্দ করা হয়েছে। এদিকে গ্রেপ্তারকৃত অপরাধচক্রের এক নেপালি সদস্য তদন্তকারীদের জানিয়েছেন, কীভাবে মিথানল তৈরি ও বিক্রি করা হতো।

মুসলিমপ্রধান দেশ হিসেবে কুয়েতে মদ আমদানি বা উৎপাদন নিষিদ্ধ। তবে গোপনে নিরাপত্তা ও মান নিয়ন্ত্রণ ছাড়াই কিছু স্থানে অবৈধভাবে মদ তৈরি হয়, যা ভোক্তাদের মারাত্মক ঝুঁকির মুখে ফেলে।

এর আগে বৃহস্পতিবার কুয়েতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, বিষাক্ত মদে আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ১৬০ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে, যাদের মধ্যে ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্তদের অধিকাংশই এশীয় নাগরিক। অন্তত ৫১ জনকে জরুরি ভিত্তিতে কিডনি ডায়ালাইসিস করাতে হয়েছে এবং ৩১ জনকে ভেন্টিলেশনে নিতে হয়েছে।

ভারতের দূতাবাস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, গত কয়েক দিনে প্রায় ৪০ জন ভারতীয় নাগরিককে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে কেউ মারা গেছেন, কেউ সংকটাপন্ন অবস্থায় আছেন এবং অনেকে ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছেন।

মিথানল হলো একটি বর্ণহীন বিষাক্ত অ্যালকোহল, যা সাধারণত শিল্প ও গৃহস্থালি পণ্যে ব্যবহৃত হয় এবং সহজে শনাক্ত করা যায় না। এর বিষক্রিয়ার লক্ষণগুলো সাধারণত কিছুটা দেরিতে প্রকাশ পায়। এর মধ্যে রয়েছে—বমি ও বমি বমি ভাব, পেটব্যথা, অতিরিক্ত শ্বাসপ্রশ্বাস ও শ্বাসকষ্ট।

ডক্টরস উইদাউট বর্ডার্স (এমএসএফ) জানিয়েছে, প্রতিবছর এশিয়াসহ বিভিন্ন অঞ্চলে হাজার হাজার মানুষ মিথানল বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হন। চিকিৎসা না পেলে মৃত্যুহার প্রায় ২০ থেকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে।