ঢাকা মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর, ২০২৫

পশ্চিম তীরে শ্বাসরোধে ডজন ডজন ফিলিস্তিনি নিহত

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: অক্টোবর ১৪, ২০২৫, ০৫:৫৪ পিএম
ছবি- সংগৃহীত

অধিকৃত পশ্চিম তীরের হেব্রন শহরের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় বেইত কাহিলে ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানে কয়েক ডজন ফিলিস্তিনি শ্বাসরোধে প্রাণ হারিয়েছেন। অভিযান চলাকালে ইসরায়েলি বাহিনী একটি তাঁবুর ভেতর কাঁদানে গ্যাসের ক্যানিস্টার নিক্ষেপ করে।

সোমবার (১৩ অক্টোবর) সন্ধ্যায় তাদের হত্যা করা হয় বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনি সরকারি বার্তা সংস্থা ওয়াফা।

সংবাদদাতার বরাত দিয়ে ওয়াফা জানায়, ইসরায়েলি সেনারা ওই তাঁবুটি সম্প্রতি ইসরায়েলি কারাগার থেকে মুক্তিপ্রাপ্ত ফিলিস্তিনি বন্দিদের স্বাগত জানানোর জন্য স্থাপন করা হয়েছে ভেবে আক্রমণ চালায়। গ্যাসের তীব্র প্রভাবে ঘটনাস্থলেই বহু ফিলিস্তিনি শ্বাসরোধে মারা যান ও অনেকে গুরুতরভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কাঁদানে গ্যাসের প্রভাবে তাঁবুর বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এবং অনেকে জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। নিহতদের মধ্যে শিশু, নারী ও বয়স্ক ব্যক্তিও রয়েছেন।

ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্টের জরুরি সেবাকর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। তবে গুরুতর শ্বাসরোধ ও আঘাতপ্রাপ্ত দুই ব্যক্তিকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অন্য আহতদের স্থানীয় একটি চিকিৎসাকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ইসরায়েলি বাহিনী গ্যাস হামলার পরও এলাকায় দীর্ঘ সময় অবস্থান করে এবং আহতদের সরিয়ে নেওয়ার কাজে বাধা সৃষ্টি করে। ফলে উদ্ধার তৎপরতা ব্যাহত হয় এবং হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়ে।

ঘটনার পর এলাকাজুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। হেব্রনের বিভিন্ন স্থানে ইসরায়েলি দখলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল বের করে ফিলিস্তিনিরা। ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ এ ঘটনাকে ‘ইচ্ছাকৃতভাবে বেসামরিক জনগণের ওপর প্রাণঘাতী আক্রমণ’ হিসেবে নিন্দা জানিয়েছে এবং আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবি তুলেছে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এ ঘটনায় আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য করেনি। তবে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে অধিকৃত পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনি শহর ও শরণার্থী শিবিরে তাদের অভিযানের তীব্রতা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। মানবাধিকার সংস্থাগুলোর দাবি, এইসব অভিযানে বেসামরিক নাগরিকরাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গাজা শান্তি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে জিম্মি-বন্দি মুক্তি দেয় ইসরায়েল ও হামাস। যুদ্ধবিরতি চলাকালীন ও শান্তি আলোচনার মধ্যেই ইসরায়েলের এই হামলা বিশ্বব্যাপী নিন্দার ঝড় তুলেছে।