দুর্নীতিগ্রস্থ ব্যক্তিকে নির্বাচনে মনোনয়ন না দেওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন।
মঙ্গলবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ের কনফারেন্স রুমে রিপোর্টার্স অ্যাগেইনস্ট করাপশন (র্যাক) সদস্যদের দিনব্যাপী কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
এসময় ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন বলেন, প্রতিটি অপরাধ ও দুর্নীতির সঙ্গে রাজনীতির যোগসূত্র আছে। শীর্ষ পর্যায়ে দুর্নীতি রেখে সামগ্রিকভাবে দেশকে ভালো করা সম্ভব নয়। আওয়ামী লীগের শাসনামলে বহু প্রভাবশালী ব্যবসায়ী দুর্নীতির মাধ্যমে দেশকে প্রায় সর্বস্বান্ত করে ফেলার চেষ্টা করেছিলেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, এসব দুর্নীতির তদন্ত দুদক ভয়ভীতিহীনভাবে চালিয়ে যাচ্ছে।
এক প্রশ্নের জবাবে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, অন্যান্য অপরাধীর মতোই সাবেক শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের বিচার হবে। আদালত সদয় হলে বিচারপ্রক্রিয়া আরো ত্বরান্বিত হবে। শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যসহ পলাতক দুর্নীতিবাজদের দেশে ফেরাতে ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড নোটিশসহ বিভিন্ন আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। সরকারও এ ব্যাপারে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। তবে বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ দেশে ফেরানো অত্যন্ত কঠিন কাজ। দুদকসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো এ ব্যাপারে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। দুদক চেয়ারম্যান আবদুল মোমেন বলেন, রাষ্ট্রের সুশাসন নিশ্চিতে সাংবাদিকরা কাজ করে থাকে। একজন সাংবাদিককে হত্যা করা গণতন্ত্রকে হত্যা করার শামিল।
কর্মশালায় দুদক মহাপরিচালক (বিশেষ তদন্ত) মীর মো. জয়নুল আবেদীন শিবলী ও মহাপরিচালক (প্রশিক্ষণ ও তথ্যপ্রযুক্তি) আব্দুল্লাহ আল জাহিদ দুর্নীতি দুমন কমিশন আইন- ২০০৪, দুর্নীতি দমন কমিশন বিধিমালা- ২০০৭, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন- ১৯৪৭, মানিলন্ডারিং আইন- ২০১২ ছাড়াও সংশ্লিষ্ট আইন ও বিধি-বিধান নিয়ে আলোচনা করেন।
কর্মশালায় র্যাকের পক্ষ থেকে কমিশনের চেয়ারম্যানের কাছে দুদক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রবেশে সব ধরনের প্রতিবন্ধকতা দূর করার ব্যবস্থা নিতে আহ্বান জানানো হয়। পাশাপাশি ঢালাও অভিযোগের ভিত্তিতে নয়, যদি দুদকের কোনো কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকে সেক্ষেত্রে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ এবং বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার পক্ষে র্যাক থেকে আহ্বান জানানো হয়।
কর্মশালায় আরও উপস্থিত ছিলেন দুদক মহাপরিচালক (প্রশাসন) আবু হেনা মোস্তফা জামান, রাষ্ট্রপতির সহকারী একান্ত সচিব ও র্যাকের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সাগর হোসেন, প্রধান উপদেষ্টার সিনিয়র সহকারী প্রেস সচিব ও র্যাকের সাবেক সভাপতি ফয়েজ আহম্মদ, র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সভাপতি মিজান মালিক, বর্তমান সভাপতি আলাউদ্দিন আরিফ ও সাধারণ সম্পাদক তাবারুল হক প্রমুখ।