আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালকে রাশিয়ায় নিষিদ্ধ ঘোষণার পর কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে সংস্থাটি।
সোমবার (১৯ মে) রাশিয়ায় অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালকে ‘অবাঞ্ছিত সংস্থা’ হিসেবে ঘোষণা করে বিবৃতি দেয় দেশটির প্রসিকিউটর জেনারেল দপ্তর।
বিবৃতিতে জানানো হয়, সংস্থাটি রুশবিরোধী কর্মকাণ্ডে যুক্ত এবং ইউক্রেনের পক্ষে অবস্থান নিয়ে রাশিয়ার নিরাপত্তা ও স্বার্থকে হুমকির মুখে ফেলছে।
রাশিয়ার পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ইউক্রেনের কথিত অপরাধগুলোর পক্ষে সাফাই গেয়েছে এবং রাশিয়াকে আন্তর্জাতিকভাবে একঘরে করতে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে।
এই সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাগনেস কালামার বলেন, ‘আপনি যদি সঠিক কাজ করে থাকেন, তবে ক্রেমলিন আপনাকে নিষিদ্ধ করবেই। রুশ সরকারের এই পদক্ষেপ মতপ্রকাশের স্বাধীনতা দমনের আরেকটি নিদর্শন।’
তিনি আরও জানান, ‘রাশিয়ায় এবং বিশ্বজুড়ে মানবাধিকারের লঙ্ঘন উদঘাটনে আমাদের প্রচেষ্টা দ্বিগুণ করা হবে। অ্যামনেস্টি কখনো পিছু হটবে না।’
উল্লেখ্য, রাশিয়ার আইনে ‘অবাঞ্ছিত সংস্থা’ ঘোষণার ফলে রাশিয়ার নাগরিকরা যদি অ্যামনেস্টির সঙ্গে কাজ করেন বা অর্থায়ন করেন, তবে তাদের সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে। এর আগে গ্রীনপিস এবং রেডিও ফ্রি ইউরোপসহ একাধিক পশ্চিমা সংস্থাকে নিষিদ্ধ করেছে রাশিয়া।
অ্যামনেস্টির অভিযোগ, রাশিয়ার এই আইন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের পরিপন্থি। সংস্থাটি জানায়, তিন বছর আগে থেকেই রাশিয়ায় তাদের ওয়েবসাইট ব্লক করা হয়েছে এবং মস্কো অফিস কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে।
এদিকে রাশিয়া দাবি করেছে, পশ্চিমা মানবাধিকার সংস্থাগুলো পক্ষপাতদুষ্ট ও রাশিয়াবিরোধী প্রচারে লিপ্ত।
তবে বিশ্লেষকরা মনে করেন, প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের শাসনে দেশে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ধ্বংস হয়ে গেছে।
প্রসঙ্গত, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ১৯৬১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং এটি বিশ্বজুড়ে মানবাধিকার রক্ষায় কাজ করে, বিশেষ করে বন্দিদের অধিকার এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিতে অগ্রণী ভূমিকা রাখে।
সূত্র: রয়টার্স
আপনার মতামত লিখুন :