গাজার উদ্দেশে এগিয়ে যাচ্ছে আন্তর্জাতিক নৌবহর গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা। ৪৪টি দেশের ৫৫টি জাহাজের এই বহরে রয়েছেন সাংবাদিক, মানবাধিকারকর্মী, শিল্পী ও স্বেচ্ছাসেবীরা। তাদের লক্ষ্য যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার মানুষের কাছে মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়া।
আন্তর্জাতিক এই নৌবহরে ফিলিস্তিনি পতাকার সঙ্গে উড়ছে বাংলাদেশের লাল-সবুজ পতাকাও। একমাত্র বাংলাদেশি হিসেবে অংশ নিয়েছেন আলোকচিত্রী শহিদুল আলম। সেখান থেকে জাতীয় পতাকা হাতে সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুকে ছবি শেয়ার করেছেন তিনি। ক্যাপশনে লিখেছেন, ‘বিবেকের নিচের ডেকে’।
২০২৪ সালে বাংলাদেশে হওয়া জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের ছবি সম্বলিত টি-শার্ট গায়ে ছবি পোস্ট করেছেন। ক্যাপশনে লেখেন, ‘আজ আমার বড় ভাইয়ের জন্মদিন। সমাজের প্রত্যাশার পথে না হাঁটায় তিনি নিজের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন একজন বিদ্রোহী হিসেবে। তার মৃত্যু আমার জন্য নতুন দরজা খুলে দিয়েছে। অস্ত্রধারী পুলিশের সামনে যে আবু সাঈদকে আমি বুকে জড়িয়ে ধরেছিলাম, তিনি ১৬ জুলাই ২০২৪ সালে নিহত হন। কিন্তু সেই ত্যাগ শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্দোলনে এক টার্নিং পয়েন্ট হয়ে ওঠে।’
‘ইতিহাসে বারবার দেখা গেছে যারা স্থিতাবস্থা চ্যালেঞ্জ করে, তারাই পরিবর্তনের সূচনা ঘটায়। আজ ফ্লোটিলার ‘বিবেক’, প্রথম তরঙ্গে থাকা নৌকার মানুষরা বিশেষ করে যারা ফিলিস্তিনিদের অধিকারের জন্য জীবন বাজি রেখে গাজায় যাচ্ছেন, তারা ইসরায়েল ও তার সহযোগীদের গণহত্যাকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ করছেন। কিন্তু আমরা একা নই। পৃথিবীর কোটি কোটি মানুষ ইতিহাসের সঠিক পাশে দাঁড়িয়ে আছে। আমরা তাদের সমষ্টিগত ক্ষোভ, তাদের বিবেকের প্রতিনিধিত্ব করি। প্যালেস্টাইনের মুক্তির জন্য আমরা যা পারি তাই করব। একদিন প্যালেস্টাইন অবশ্যই মুক্ত হবে।’
আন্তর্জাতিক এই ত্রাণবাহী বহরকে আটকে দেওয়ার চেষ্টা চালায় ইসরায়েল নৌবাহিনী। কয়েক দিন ধরে তারা ভূমধ্যসাগরে অভিযান চালালেও শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হয়। ফলে বহরটি গাজার কাছাকাছি পৌঁছে গেছে এবং বৃহস্পতিবারের মধ্যেই উপকূলে ভিড়তে পারে বলে জানিয়েছে আয়োজকরা।
গাজায় প্রবেশাধিকার সম্পূর্ণ বন্ধ রেখে যখন ইসরায়েল গণহত্যা চালাচ্ছে, তখনই কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, শিল্পী ও মানবাধিকারকর্মীরা একত্রিত হয়ে এই ফ্লোটিলায় অংশ নিয়েছেন। তাদের দাবি, সমুদ্র পাড়ি দিয়ে ফিলিস্তিনিদের পাশে দাঁড়িয়ে বিশ্বের শীর্ষ নেতাদের ‘নীরবতা’ ভাঙতে বাধ্য করা। গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার মুখপাত্র ওয়ায়েল নাওয়ার জানিয়েছেন, বহরটি খাদ্য ও ত্রাণসামগ্রী নিয়ে গাজার উপকূলের কাছাকাছি অবস্থান করছে।