টানা দুইদিন কমার পর বিশ্ববাজারে আবার বেড়েছে স্বর্ণের দাম। আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক অস্থিরতা ও বিনিয়োগকারীদের উদ্বেগের কারণে এই দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) দুপুর পর্যন্ত স্পট গোল্ডের দাম বেড়ে দাঁড়ায় আউন্সপ্রতি ৪ হাজার ১১৯.৪৯ ডলার, যা আগের দিনের তুলনায় ০.৬ শতাংশ বেশি। বুধবার দাম কমেছিল প্রায় দুই সপ্তাহের সর্বনিম্ন পর্যায়ে।
গত সোমবার স্বর্ণের দাম সর্বকালের সর্বোচ্চ ৪,৩৮১.২১ ডলারে পৌঁছেছিল। একদিন পর মঙ্গলবার এটি ৫.৩ শতাংশ কমে ৪,১৩০.৪০ ডলারে নেমে আসে এবং বুধবারও পতনের ধারাবাহিকতা থাকে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের আগামীকাল প্রকাশিত ভোক্তা মূল্যসূচক (CPI) এবং মুদ্রাস্ফীতি, যা সেপ্টেম্বর মাসে ৩.১ শতাংশে পৌঁছাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে, তার প্রভাবও স্বর্ণের বাজারে প্রতিফলিত হচ্ছে। ফেডারেল রিজার্ভ যদি সুদের হার ০.২৫ শতাংশ কমায়, তবে স্বর্ণের মতো সুদবিহীন সম্পদের চাহিদা বাড়বে।
এ ছাড়া ইউক্রেন যুদ্ধ সমাধানে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের ওপর চাপ বাড়াতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত তেল কোম্পানি রসনেফট এবং বেসরকারি লুকঅয়েলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন। বিনিয়োগকারীরা এই পরিস্থিতিতে কিছুটা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ায় স্বর্ণের দাম আবার ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে।
বিনিয়োগকারীরা আগামী সপ্তাহে মার্কিন ও চীনা প্রেসিডেন্টদের সম্ভাব্য বৈঠকের ফলাফলের জন্যও নজর রাখছেন। জেপি মরগান পূর্বাভাস দিয়েছে, ২০২৬ সালের চতুর্থ প্রান্তিকে স্বর্ণের দাম প্রতি আউন্সে গড়ে ৫,০৫৫ ডলারে পৌঁছাতে পারে।
এ ছাড়া কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ক্রয় এবং বিনিয়োগকারীদের চাহিদা অনুযায়ী আগামী বছর প্রতি প্রান্তিকে গড়ে ৫৬৬ টন স্বর্ণ ক্রয় হতে পারে।
অন্যদিকে, রুপা এবং অন্যান্য মূল্যবান ধাতুর দামও বেড়েছে। বৃহস্পতিবার প্রতি আউন্সে স্পট সিলভার ৪৮.২৫ ডলারে বিক্রি হচ্ছে, যা ১.৫ শতাংশ কম। প্ল্যাটিনামের দাম ০.১ শতাংশ বেড়ে ১,৬২৩.৯৯ ডলার এবং প্যালাডিয়ামের দাম ০.৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ১,৪৭০.৭১ ডলারে পৌঁছেছে।
বাংলাদেশের বাজারেও এর প্রভাব প্রতিফলিত হয়েছে। বুধবার (২২ অক্টোবর) সর্বোচ্চ ৮,৩৮৬ টাকা পর্যন্ত কমে ২২ ক্যারেটের এক ভরির দাম নির্ধারণ করেছিল বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)। এই দাম বৃহস্পতিবার থেকে কার্যকর হয়।