ঢাকা মঙ্গলবার, ০৫ আগস্ট, ২০২৫

ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট বলসোনারোকে গৃহবন্দির নির্দেশ

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: আগস্ট ৫, ২০২৫, ০৮:৪৯ এএম
ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারো। ছবি- সংগৃহীত

ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারোকে গৃহবন্দি করার নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি আলেকজান্দ্রে দে মোরায়েস। নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার ও রাজনৈতিক বার্তা প্রদানের জন্য  সোমবার এ আদেশ দেওয়া হয়। ২০২২ সালের জাতীয় নির্বাচন ঘিরে ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার অভিযোগে বর্তমানে তিনি বিচারের মুখোমুখি। সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বলসোনারোর বিরুদ্ধে মামলার তত্ত্বাবধানের জন্য বিচারপতি আলেকজান্দ্রে দে মোরায়েস বর্তমানে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞার মুখে রয়েছেন। এই আদেশের এক দিন আগেই ব্রাজিলজুড়ে বলসোনারোর পক্ষে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়।

বিচারপতি মোরায়েস বলেন, বলসোনারো আদালতের নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করেছেন, যার মধ্যে ছিল তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কার্যক্রম ও রাজনৈতিক বার্তা প্রদানের ওপর নিষেধাজ্ঞা।

প্রসিকিউশন বলছে, বলসোনারো একটি সশস্ত্র অপরাধী সংগঠনের নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং সহিংসতার মাধ্যমে গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা বিলুপ্তির চেষ্টা করেছেন। এ ধরনের অপচেষ্টার অভিযোগ প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ ১২ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।

২০২৩ সালের জানুয়ারিতে বলসোনারোর সমর্থকরা লুলা দা সিলভার বিজয় মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে জাতীয় কংগ্রেসসহ একাধিক রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান আক্রমণ ও ভাঙচুর করে। নির্বাচনে পরাজয়ের পরও বলসোনারো তা স্বীকার করেননি।

বিচারপতি আরও জানান, বলসোনারো এমন বার্তা ছড়িয়েছেন, যার মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টের বিরুদ্ধে হামলার উস্কানি দেওয়া হয়েছে এবং ব্রাজিলের বিচার বিভাগে বিদেশি হস্তক্ষেপের আহ্বান জানানো হয়েছে।

গত জুলাইয়ে, বিচারপতি মোরায়েস বলসোনারোর ছেলে এদুয়ার্দো বলসোনারোর সম্পদ জব্দ করেন। সন্দেহ করা হচ্ছে, এই অর্থ মার্কিন প্রশাসনে লবিংয়ের কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে।

এদুয়ার্দো বিচারপতি মোরায়েসকে স্বৈরাচারী আখ্যা দিয়ে বলেছেন, ‘তিনি যদি মনে করেন এতে আমি থেমে যাব, তাহলে ভুল করছেন। আমি স্পষ্ট করে দিচ্ছি, আমি ভয় পাব না এবং আমাকে চুপ করানো যাবে না। আমি এই মুহূর্তের জন্যই প্রস্তুতি নিয়েছিলাম।’

এ আদেশ অনুযায়ী, বলসোনারো এখন থেকে গৃহবন্দি থাকবেন, তার পায়ে নজরদারি ডিভাইস পরানো হবে এবং শুধু আত্মীয় ও আইনজীবীরা তার সঙ্গে দেখা করতে পারবেন। তার বাসার সব মোবাইল ফোন জব্দ করা হবে।

গত মাসে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ব্রাজিলের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন এবং তা সরাসরি বলসোনারোর বিচারের সঙ্গে যুক্ত করেন। এরপর গত সপ্তাহে, যুক্তরাষ্ট্র বিচারপতি মোরায়েসের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে, যা ‘অগ্রহণযোগ্য’ বলে মন্তব্য করেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা। তিনি বলেন, ‘ব্রাজিল সরকার বিচারপতি মোরায়েসের পাশে আছে, যিনি ব্রাজিলীয় রাজনীতিবিদদের কারণে নিষেধাজ্ঞার শিকার হয়েছেন।’