কোনোভাবেই কমছে না ডেঙ্গুর প্রকোপ। সারা দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় (গত শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে গতকাল শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত) ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে নতুন করে আরও ৬৫৯ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। তবে এ সময়ে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে নতুন করে কারো মৃত্যু হয়নি।
গতকাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, হাসপাতালে নতুন ভর্তিদের মধ্যে বরিশাল বিভাগে ১২৬ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ১০৪ জন, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১৭০ জন, ঢাকা উত্তর সিটিতে ১২৪ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ৫৭ জন, খুলনা বিভাগে ৩১ জন ও ময়মনসিংহ বিভাগে ৪৭ জন রোগী রয়েছে।
এদিকে, গত এক দিনে সারা দেশে ৬৫৬ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছর ছাড়পত্র পেয়েছে ৬১ হাজার ৩৯৩ জন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, এ বছরের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত সব মিলিয়ে ৬৪ হাজার ২৯৭ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। তবে বছরের এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ২৫৯ জনের।
চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে ডেঙ্গুর সংক্রমণ সবচেয়ে বেশি হয়েছিল। তবে অক্টোবর মাস শেষ হওয়ার এক সপ্তাহ আগেই গত মাসের চেয়ে বেশি ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, আগামী নভেম্বর ও ডিসেম্বরেও ডেঙ্গুর প্রকোপ কমবে না, বরং বাড়তে পারে। এর ফলে এ বছরের সংক্রমণ চলতে থাকবে এবং আগামী বছরও দেশ ডেঙ্গু থেকে পুরোপুরি মুক্তি পাবে না।
বিশিষ্ট কীটতত্ত্ববিদ তৌহিদউদ্দিন আহমেদ বলেন, এবার ডেঙ্গুর সংক্রমণ বেড়েছে প্রাকৃতিকভাবে। এবার যেমন ডেঙ্গুর বিস্তার ঘটেছে প্রাকৃতিকভাবে, কমবেও প্রাকৃতিকভাবে।
চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে সর্বোচ্চ সংক্রমণ হয়। এর সংখ্যা ছিল ১৫ হাজার ৮৬৬। আক্রান্তের এই ঊর্ধ্বমুখী পরিসংখ্যান দেখে শঙ্কা প্রকাশ করে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. মুশতাক হোসেন বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বা স্থানীয় সরকার কেউই তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করেনি। তারা নতুন কিছু তো করেইনি, উপরন্তু বিভিন্ন স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান ভেঙে দিয়ে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে গড়ে ওঠা ব্যবস্থাও নষ্ট করে ফেলেছে। এর ফল ভোগ করতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।

