ঢাকা মঙ্গলবার, ১২ আগস্ট, ২০২৫

গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেলেন কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: আগস্ট ১২, ২০২৫, ০৮:৪২ এএম
কলম্বিয়ার সিনেটর ও প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী মিগেল উরিবে। ছবি- সংগৃহীত

গুলিবিদ্ধ হওয়ার দুই মাস পর মারা গেলেন কলম্বিয়ার সিনেটর ও প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী মিগেল উরিবে। তার বয়স হয়েছিল মাত্র ৩৯ বছর। উরিবের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন তার স্ত্রী মারিয়া ক্লাউদিয়া তারাজোনা। সোমবার সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজধানী বোগোটায় একটি নির্বাচনি জনসভায় গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন উরিবে। দেশজুড়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করা এ হামলায় মাথায় দুটি এবং পায়ে একটি গুলিতে বিদ্ধ হন তিনি।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, উরিবে মারাত্মকভাবে স্নায়ু-সংশ্লিষ্ট ক্ষতিগ্রস্ত হন। তার আরও একটি অস্ত্রোপচারের কথা ছিল, কিন্তু এর আগেই মৃত্যু হয়েছে তার। গত জুন থেকে হাসপাতালে ভর্তি থাকাকালীন তার একাধিক অস্ত্রোপচার করা হয়।

এই হামলার ঘটনায় ১৫ বছর বয়সি এক কিশোরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে, যদিও সে দোষ স্বীকার করেনি। এ ঘটনায় আরও কয়েকজনকে হামলায় সহায়তার অভিযোগে আটক করা হয়েছে। তবে এখনো হামলার কারণ স্পষ্ট নয়।

মিগেল উরিবে ২০২২ সাল থেকে কলম্বিয়ার সিনেটর ছিলেন এবং ডানপন্থি ডেমোক্রেটিক সেন্টার পার্টির হয়ে ২০২৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার জন্য মনোনয়নের চেষ্টা করছিলেন। তিনি বর্তমান বামপন্থি প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেত্রোর একজন কড়া সমালোচক হিসেবে পরিচিত ছিলেন।

উরিবের ওপর হামলার ঘটনাটি ৮০ ও ৯০-এর দশকের কলম্বিয়ার অস্থির সময়কে মনে করিয়ে দেয়, যখন একাধিক প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ও বিশিষ্ট ব্যক্তিকে হত্যা করা হয়েছিল।

উল্লেখ্য, উরিবের মা, প্রখ্যাত সাংবাদিক ডায়ানা তুরবায় ১৯৯০ সালে ‘লস এক্সট্রাডিতাবলেস’ নামক মাদক চক্রের হাতে অপহৃত হন এবং পাঁচ মাস পর একটি ব্যর্থ উদ্ধার অভিযানে নিহত হন। উরিবে বহুবার বলেছেন, তার মায়ের স্মৃতিই তাকে রাজনীতিতে অনুপ্রাণিত করেছে।

প্রেসিডেন্ট পেত্রোর কার্যালয় উরিবের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে এক বিবৃতি দিয়েছে। এ ছাড়াও মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এক টুইটে দোষীদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান।

কলম্বিয়া সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সহিংসতা কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হলেও এখনো রাজনৈতিক নেতা, সমাজকর্মী এবং নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা হামলা ও হত্যার হুমকিতে রয়েছেন। বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠী দেশের বিভিন্ন অঞ্চল নিয়ন্ত্রণের জন্য সংঘর্ষে লিপ্ত।

২০২৪ সালে কলম্বিয়ায় প্রতি লাখে ২৫ দশমিক ৪টি হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, যা গত চার বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। তবে এই হার এখনো অঞ্চলটির মধ্যে অনেক বেশি।