জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে সংস্থাটির মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস মানবাধিকারের পক্ষে জোরালো বক্তব্য রেখেছেন। গাজায় ‘ইসরায়েল’ গণহত্যা চালিয়েছে বলে জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের গঠিত কমিশনের প্রতিবেদনের পর তার এ আহ্বান বিশেষ গুরুত্ব বহন করছে। মানবাধিকার পরিষদের দীর্ঘদিনের সমালোচক যুক্তরাষ্ট্র ও ‘ইসরায়েল’ ইতোমধ্যে এ প্রতিবেদনকে প্রত্যাখ্যান করেছে।
গুতেরেস বলেন, ‘আমাদের বেছে নিতে হবে মানবমর্যাদা ও মানবাধিকারকে। মানবাধিকার শান্তির অলংকার নয়, বরং তার মূল ভিত্তি। শুধু কথায় নয়, মানবাধিকারের অর্থ হলো ন্যায়বিচারকে প্রাধান্য দেওয়া, নীরবতা নয়।’
তিনি সুদানের যুদ্ধ ও রাশিয়ার ইউক্রেন আগ্রাসনের প্রসঙ্গ তুললেও সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেন গাজা যুদ্ধকে। তার ভাষায়, ‘গাজায় ভয়াবহতা তৃতীয় বছরের দিকে এগোচ্ছে। এগুলো এমন সব সিদ্ধান্তের ফল যা মৌলিক মানবতাকেও অস্বীকার করে। মৃত্যুর সংখ্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ আমার মহাসচিব হওয়ার সময়কালের অন্য যেকোনো সংঘাতের চেয়ে অনেক বেশি।’
গুতেরেস আন্তর্জাতিক আদালত (আইসিজে)-এর বিভিন্ন নির্দেশনার কথাও উল্লেখ করেন। এসব নির্দেশনায় ইসরাইলকে গণহত্যা প্রতিরোধে পদক্ষেপ নেওয়া, তদন্তের সুযোগ দেওয়া ও মানবিক সহায়তা জোরদারের আহ্বান জানানো হয়েছে।
তিনি স্পষ্ট করে বলেন, ‘৭ অক্টোবরের ভয়াবহ হামাস সন্ত্রাসী হামলা ও জিম্মি নেওয়ার ঘটনা কোনোভাবেই ন্যায্যতা পায় না, আমি বারবার তা নিন্দা করেছি। কিন্তু একইভাবে পুরো ফিলিস্তিনি জনগণকে শাস্তি দেওয়া এবং গাজাকে পদ্ধতিগতভাবে ধ্বংস করাও ন্যায্য নয়।’
মহাসচিব সমাধানের পথও তুলে ধরেন— যা প্রয়োজন তা হলো অবিলম্বে স্থায়ী যুদ্ধবিরতি, অবিলম্বে সব জিম্মির মুক্তি, পূর্ণ মানবিক সহায়তার প্রবেশাধিকার এবং টেকসই শান্তির একমাত্র পথ দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানের দিকে অগ্রসর হওয়া।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন