রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন যদি ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধ না করেন তবে কিয়েভকে দূরপাল্লার টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র দেওয়ার প্রস্তাব বিবেচনা করবেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বিবেচনা থেকে সিদ্ধান্তে পরিণত হয়েছে মস্কোকে দেওয়া ওয়াশিংটনের সেই হুমকি। অর্থাৎ ইউক্রেনকে ৫০টি টমাহক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র দেবে যুক্তরাষ্ট্র।
তবে বিশ্লেষকদের মতে, এই পরিমাণ ক্ষেপণাস্ত্র যুদ্ধক্ষেত্রে বড় কোনো প্রভাব ফেলবে না।
ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের মজুতভান্ডারে ৪ হাজারেরও বেশি টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র থাকলেও নতুন উৎপাদন সীমিত হওয়ায় এই মুহূর্তে ‘মাত্র কয়েক ডজন ক্ষেপণাস্ত্র পাঠানো সম্ভব’। পেন্টাগনের সাবেক কর্মকর্তা মার্ক ক্যানসিয়ান জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের উৎপাদন সক্ষমতা বর্তমানে সীমিত পর্যায়ে রয়েছে।
আগামী ১৭ অক্টোবর হোয়াইট হাউসে ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। সেখানে টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র ছাড়াও দূরপাল্লার জেএএসএসএম ও জেএএসএএম-ইআর ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রসহ অতিরিক্ত অস্ত্র সরবরাহের বিষয়টি আলোচনায় আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের এই টমাহক সরবরাহ মূলত প্রতীকী পদক্ষেপ, যা ওয়াশিংটনের রাজনৈতিক বার্তা হিসেবে বেশি গুরুত্ব বহন করে। কারণ, এই ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লা হচ্ছে ২ হাজার ৫০০ কিলোমিটার। এ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে রাশিয়ার রাজধানী মস্কোসহ রাশিয়ার গভীরে বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানা সম্ভব।
জেলেনস্কি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করলে ইউক্রেন তা কেবল সামরিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করবে, রাশিয়ার বেসামরিক নাগরিকদের ওপর নয়। ফক্স নিউজের ‘সানডে ব্রিফিং’ অনুষ্ঠানে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আমরা কখনো বেসামরিক নাগরিকদের আক্রমণ করিনি।’
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন চলতি মাসের শুরুর দিকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সদস্যদের সরাসরি অংশগ্রহণ ছাড়া টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা সম্ভব নয়। তাই ইউক্রেনকে এই অস্ত্র সরবরাহ করা হলে তা যুদ্ধকে ভয়াবহ পর্যায়ে নিয়ে যাবে।
রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি ইউক্রেনকে টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করে, তবে এর পরিণাম সবার জন্যই ভয়াবহ হতে পারে, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জন্য।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন