ভারী বর্ষণে যশোর সদর উপজেলার চুড়ামনকাটি, হৈবতপুর ও কাশিমপুর ইউনিয়নের সবজিখেত জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া বৃষ্টির পানিতে অনেক সবজিখেত তলিয়েও গেছে। এতে আর্থিক ক্ষতির আশঙ্কায় চাষিরা হতাশ হয়ে পড়েছেন।
তারা বলছেন, মাঠে এবার বিভিন্ন প্রকারের সবজি চাষ হয়েছে। এরমধ্যে পটল, পুঁইশাক, বরবটি, করলা, ঢেঁড়স, বেগুন, কচুমুখি, কচুর লতি উল্লেখযোগ্য। পহেলা আষাঢ় থেকে গতকাল পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের কারণে অধিকাংশ সবজিখেত পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এভাবে আর দুই/একদিন ভারী বৃষ্টিপাত হলে উঁচু জায়গার পটল ও করলা খেতও পানির নিচে থাকবে। ইতোমধ্যে অনেক খেতে সবজিন গাছে পচনও শুরু হয়েছে।
চুড়ামনকাটির দোগাছিয়া গ্রামের পটলচাষি তরিকুল ইসলাম জানান, বৃষ্টির পানিতে তার এক বিঘা পটলখেত তলিয়ে গেছে। ফলে অনেক গাছ পচে খেত নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করছেন তিনি।
বরবটিচাষি দেলোয়ার গাজী জানান, ভারী বৃষ্টির কারণে গাছের ফুল ঝরে যাচ্ছে। ফলে গাছে ফলন না আসার সম্ভাবনা বেশি। এভাবে বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে গাছও মরে যাবে। ফলে তিনি আর্থিকভাবে অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।
হৈবতপুর গ্রামের সবজি চাষি আব্দুস সাত্তার জানান, টানা বৃষ্টিতে তার এক বিঘা জমির বেগুনখেত পানির নিচে। খেত থেকে পানি সরানোর উপায় নেই। ফলে পানিতে বেগুনখেত নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। এমতাবস্থায় উৎপাদন খরচ উঠবে কিনা সন্দেহ।
গতকাল মঙ্গলবার চুড়ামনকাটি ইউনিয়ন পরিষদে খোঁজ করে একজন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাকেও পাওয়া যায়নি। সেখানকার দায়িত্বশীল একজন জানান, তারা কখন আসেন আর কখন যান এটাও জানা নেই।
কৃষিবিদ ইউসুফ আলী জানান, জলমগ্ন সবজি গাছের গোড়া নরম হয়ে থাকে। বৃষ্টির পর সামান্য রোদ পেলে পচে গাছ নষ্ট হয়ে যায়। এবারের আষাঢ়ের বৃষ্টিতে সবজি চাষিরা অনেকটা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
যোগাযোগ করা হলে চুড়ামনকাটির উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা তরুন বিশ্বাস জানান, টানা বর্ষণে অনেক সবজিখেত জলমগ্ন হয়ে চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। চুড়ামনকাটির রেললাইন এলাকার একটি মরা খাল সংস্কার ও আব্দুলপুরের বীজতলা এলাকায় কালভার্ট তৈরি করলে চাষিরা অনেক উপকৃত হবে। মাঠে না যাওয়ার অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে তরুণ বিশ্বাস জানান, তিনি সব সময় চাষিদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেন।
সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাজিয়া সুলতানা জানান, টানা বর্ষণে অনেক সবজি খেতে পানি জমেছে। এতে চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। তবে ক্ষতির পরিমাণ এখনো নির্ধারণ করা যায়নি।
আপনার মতামত লিখুন :