বুধবার, ২৩ জুলাই, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


এম. কামাল উদ্দিন, রাঙামাটি

প্রকাশিত: জুলাই ২৩, ২০২৫, ১২:৪১ এএম

মাইলস্টোন ট্র্যাজেডি

উক্যসাইনের বাড়িতে শোকের মাতম

এম. কামাল উদ্দিন, রাঙামাটি

প্রকাশিত: জুলাই ২৩, ২০২৫, ১২:৪১ এএম

উক্যসাইনের বাড়িতে  শোকের মাতম

রাজধানী উত্তরায় বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র উক্যসাইন মারমা (১৪) জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আইসিইউতে মৃত্যুর সাথে লড়াই শেষে গত সোমবার দিবাগত রাত আড়াইটায় না ফেরার দেশে চলে গেছে। রাজধানীতে শিক্ষার আলো নিতে গিয়ে তাকে ফিরতে হচ্ছে নিথর দেহ নিয়ে। উক্যসাইনকে নিয়ে মা-বাবার স্বপ্ন এক নিমেষেই থেমে গেছে। উক্যসাইন মারমা রাঙামাটির রাজস্থলী উপজেলার বাঙ্গালহালিয়া ইউনিয়নের কলেজপাড়া এলাকার উসাইমং মারমা ও ডেজিপ্রু মারমার একমাত্র সন্তান।

উক্যসাইনের বাবা উসাইমং মারমা ও মা ডেজিপ্রু মারমা দুজনই স্কুল শিক্ষক। বাবা বাঙ্গালহালিয়া আবাসিক উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক আর মা বান্দরবানের রুমা উপজেলার ক্যপথেংপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। মা ও বাবার একমাত্র সন্তানের মরদেহ নিতে ঢাকায় গেছেন। গতকাল মঙ্গলবার রাতেই উক্যসাইনের মরদেহ বাঙ্গালহালিয়ায় পৌঁছাবে বলে পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে। 

এদিকে, গতকাল সকাল ৯টার দিকে বাঙ্গালহালিয়ার কলেজপাড়ায় গিয়ে দেখা গেছে, উক্যসাইনের বাড়িতে শোকের মাতম চলছে। বাড়িতে রয়েছেন উক্যসাইনের দাদা বয়োবৃদ্ধ কংহ্লাপ্রু মারমা, দাদি ক্রাতুমা মারমা ও পিসি হ্লামাচিং মারমা।  দাদা-দাদির একমাত্র নাতি ও পিসি তার ভাইয়ের ছেলেকে হারিয়ে কেঁদেই চলেছেন। তাদের সান্ত¡না দেওয়ার কেউ নেই। পাড়ার লোকজনও উক্যসাইনের অকাল ও হৃদয়বিদারক মৃত্যুতে শোকাহত ও বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে উক্যসাইনের দাদা কংহ্লাপ্রু মারমা জানান, তার নাতি তাকে খুব ভালো বাসত। সে অত্যন্ত মেধাবী ছিল। একমাত্র নাতিকে হারিয়ে তারা কী নিয়ে বাঁচবেন, আক্ষেপ করে কাঁদতে থাকেন।

উক্যসাইনের পিসি  হ্লামাচিং মারমা জানান, ভাইয়ের ছেলের মরদেহ নিয়ে গতকাল সকাল ৯টার দিকে দাদা ও ভাবি ঢাকা থেকে বাঙ্গালহালিয়ার উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন। বাঙ্গালহালিয়ায় পৌঁছাতে রাত ৭-৮টা বাজতে পারে। ভাইয়ের ইচ্ছা, তার ছেলের মরদেহ বাড়িতে একরাত রেখে পরদিন দাহ করার। 

তিনি আরও জানান, উক্যসাইন সর্বশেষ সাক্রাইন উৎসবে (পহেলা বৈশাখ) বাড়িতে বেড়াতে এসেছিল। গত আষাঢ়ী পূর্ণিমার দিনেও মোবাইলে উক্যসাইনের সাথে তার কথা হয়েছিল। তার সাথে এটাই শেষ কথা হবে ভাবতে পারিনি। তবে এমনিতে প্রতিদিন উক্যসাইন মা-বাবাকে কল দিত।

তিনি আরও জানান,  উক্যসাইন খুব মেধাবী ছাত্র ছিল। বাঙ্গালহালিয়ার নার্সারি স্কুলে পড়া শেষে  তাকে সেন্ট পাবলিক স্কুলে ভর্তি করানো হয়। সেখানে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছিল। ভাইয়ের  স্বপ্ন ছিল তার ছেলেকে ক্যাডেট স্কুলে পড়াবে, এ জন্য ঢাকার মিরপুরে একটি কোচিং সেন্টারেও এক বছর কোচিং করায়। তবে  তার দুর্ভাগ্য, ক্যাডেট স্কুলে ভর্তি পরীক্ষায় টিকতে পারেনি। তাই  এ বছর তাকে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সপ্তম শ্রেণিতে ভর্তি করানো হয়। সে স্কুলের হোস্টেলে থেকে পড়াশোনা করত। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ‘উক্যসাইন বোধহয় খুবই ক্ষণজন্মা। এত অল্প বয়সে তাকে যে এভাবে হারাব কোনো দিনই কল্পনা করতে পারিনি।’

নিহত শিক্ষার্থী উক্যসাইন মার্মার বাবা উসাই মং জানান, আজ বুধবার বাঙ্গালহালিয়ায় নিজ গ্রামে তার ছেলের দাহক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে। তার আত্মীয়-স্বজন ও শুভাকাক্সক্ষীদের উক্যসাইনের দাহক্রিয়ায় অংশ নিয়ে পুণ্যরাশি দান করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। 

রাঙামাটি রাজস্থলী উপজেলার বাঙ্গালহালিয়ার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যার আদোমং মারমা জানান, ‘শুনেছি ছেলেটা রাতে মারা গেছে। তার মরদেহ নিয়ে আসা হচ্ছে। ছেলেটি সম্পর্কে আত্মীয় হয়। এ মর্মান্তিক ঘটনায় আমরা সবাই শোকাহত।’

রূপালী বাংলাদেশ

Shera Lather
Link copied!