- মনঃক্ষুণœ ব্যবসায়ীরা
- রোগী হয়রানির শঙ্কা
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বেঁধে দেওয়া হার্টের রিংয়ের (স্টেন্ট) নতুন দাম আগামী ১ অক্টোবর থেকে কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর। রাজধানীর মহাখালীতে অবস্থিত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সভাকক্ষে গতকাল মঙ্গলবার আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের পরিচালক ডা. মো. আকতার হোসেন এ তথ্য জানান। কিন্তু এই সিদ্ধান্তে এখনই মনঃক্ষুণœ ব্যবসায়ীরা।
এর আগেরবারও যখন দাম কমানো হয়, তখন আমদানি বন্ধ করে দেন তারা। ফলে রিংয়ের সংকটে বেশ কয়েকটি হাসপাতালে বন্ধ হয়ে যায় অস্ত্রোপচার। চরম হয়রানির শিকার হন রোগীরা। তাই এবারও দাম কমানোর সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে পুনরায় এমনটি হওয়ার শঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
সংবাদ সম্মেলনে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের পরিচালক বলেন, জীবন রক্ষাকারী এই গুরুত্বপূর্ণ মেডিকেল ডিভাইসের দাম সহনীয় ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে সরকার স্টেন্ট, পেসমেকার, বেলুন, ক্যাথেটারসহ বিভিন্ন যন্ত্রের মূল্য নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ নিয়েছে। এর অংশ হিসেবে গত ১৩ এপ্রিল স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয় দেশের বরেণ্য কার্ডিয়াক, ভাস্কুলার ও নিউরো সার্জনদের নিয়ে একটি বিশেষজ্ঞ পরামর্শক কমিটি গঠন করে।
তিন দফা সভার পর কমিটি বাজারে প্রচলিত আমেরিকান তিনটি কোম্পানির স্টেন্টের দাম পর্যালোচনা করে। প্রতিবেশী দেশের দাম, ট্যাক্স, ভ্যাট এবং অন্যান্য চার্জ বিবেচনায় এনে গত ৮ জুলাইয়ের সভার সুপারিশের ভিত্তিতে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ ৩ আগস্ট স্টেন্টের সর্বোচ্চ খুচরা দাম পুনর্নির্ধারণ করে। নতুন দামে স্টেন্ট কেনা হলে রোগীদের চিকিৎসা ব্যয় উল্লেখযোগ্যভাবে কমবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
তবে কিছু আমদানিকারকের হাতে পুরোনো দামের পণ্য মজুত থাকায় তারা কার্যকর করতে সময় চেয়েছিল। কিন্তু জনস্বার্থে এবং গণমাধ্যমে দাম কমার খবর প্রকাশিত হওয়ায় হাসপাতালগুলোতে নতুন দামের পণ্যের জন্য রোগীদের চাপ তৈরি হয়েছে, যা ২০২৩ সালে রিংয়ের দাম কমানোর সময়ও হয়েছিল। ওই বছরের ১৬ ডিসেম্বর ২৭টি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের ৪৪ ধরনের কার্ডিয়াক স্টেন্টের (হার্টের রিং) দাম ২ হাজার থেকে ৫৬ হাজার টাকা পর্যন্ত কমায় ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর (ডিজিডিএ)। এই হিসাবে স্টেন্ট প্রতি ৩ শতাংশ থেকে ৪৬ শতাংশ পর্যন্ত দাম কমে। এতে তখন তৈরি হয় নতুন বিপত্তি। ব্যবসায়ীরা একপ্রকার ঘোষণা দিয়ে বন্ধ করে দেয় সরবরাহ। মাত্র তিনটি কোম্পানির রিং দিয়ে চলে অস্ত্রোপচার।
এমনিতেই যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক এই কোম্পানিগুলোর রিংয়ের দাম আকাশছোঁয়া হওয়ায় তা সাধারণের নাগালের বাইরে। ফলে হৃদরোগে আক্রান্ত রোগী ও তাদের স্বজনদের পোহাতে হয় চরম দুর্ভোগ। রোগীদের স্বার্থে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও হয় বিপরীত। দাম কমানোর ফলে বেঁকে বসেন ব্যবসায়ীরা। সরবরাহ বন্ধ রাখেন তারা। ফলে সব হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগে অস্ত্রোপচারের রোগীরা পড়েন বিপাকে। এ বছরও ব্যবসায়ীরা মনঃক্ষুণœ হওয়ায় রোগীদের হয়রানির শঙ্কা করা হচ্ছে।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন