বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, প্রচলিত স্লোগাননির্ভর রাজনীতির যুগ শেষ। জনগণ এখন বাস্তবায়নযোগ্য পরিকল্পনা ও পরিবর্তনের রাজনীতি চায়। এ জন্য বিএনপি দেশের প্রতিটি খাতে সুস্পষ্ট কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করছে এবং ক্ষমতায় গেলে তা বাস্তবায়নের অঙ্গীকার করছে।
আন্তর্জাতিক যুব দিবস উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল আয়োজিত যুব সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তারেক রহমান এ কথা বলেন। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে এই যুব সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তরুণদের উদ্দেশে তারেক রহমান বলেন, জনগণের মানোন্নয়নের সব পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বিএনপির প্রতি জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন প্রয়োজন। জনগণের শক্তি প্রতিষ্ঠা করার জন্য আগামী জাতীয় নির্বাচনে জনগণের সহযোগিতা ও সমর্থন চেয়েছেন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার এবং নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, দেড় দশক পর ফ্যাসিস্টমুক্ত বাংলাদেশে আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। দেশের সব নারী-পুরুষ, ছাত্র-তরুণ-যুবসমাজসহ দেশের সর্বস্তরের জনগণের কাছে আমার আহ্বান, আগামী নির্বাচনে ধানের শীষে ভোট দিন।
তারেক রহমান মনে করেন, প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও আন্তর্জাতিক মানের দক্ষতা অর্জন ছাড়া দেশের তরুণ প্রজন্মকে প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়। তরুণ উদ্যোক্তাদের বৈদেশিক আয় দেশে আনার জন্য পেপ্যাল, স্ট্রাইপ, ওয়াইজের মতো আন্তর্জাতিক পেমেন্ট গেটওয়ে চালুর উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন। এ জন্য উদ্যোক্তা, নীতিনির্ধারক ও সংশ্লিষ্ট পক্ষের সঙ্গে আলোচনা চলছে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, স্টার্টআপ ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করতে হাইটেক পার্ক, ইনকিউবেশন সেন্টার এবং সহজ শর্তে আর্থিক সহায়তা প্রদানের পরিকল্পনা বিএনপির রয়েছে। একই সঙ্গে খেলাধুলাকে পেশা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে ক্রীড়া শিক্ষাকে মূল কারিকুলামে অন্তর্ভুক্ত করার কথা ভাবছেন তারা। বিদেশি ভাষা শিক্ষার ওপরও গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, কারিগরি দক্ষতার পাশাপাশি একাধিক বিদেশি ভাষা জানা কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়াবে।
তারেক রহমান আরও বলেন, দেশের বর্তমান কর্মক্ষম জনসংখ্যা ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড হিসেবে বিশাল সম্ভাবনা তৈরি করেছে। এই জনশক্তিকে দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তর করতে পারলেই তা জাতীয় উন্নয়নের অন্যতম চালিকাশক্তি হবে। এ জন্য প্লাম্বিং, ইলেকট্রিশিয়ান, মেকানিক, ডেন্টাল হাইজিনিস্ট ও মেডিকেল টেকনিশিয়ানÑ এ ধরনের চাহিদাসম্পন্ন স্বল্পমেয়াদি কোর্স চালুর উদ্যোগ নেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, জনগণ এখন প্রচলিত রাজনীতির একটি পরিবর্তন চাইছে। জনগণের আকাক্সক্ষা পূরণে প্রতিশ্রুতি নয়, বরং তার বাস্তবায়নই বিএনপির লক্ষ্য।
যুব সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানীর সভাপতিত্বে এবং যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম ও ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দীনের সঞ্চালনায় যুব সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন, ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, এনডিএমের চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ প্রমুখ।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন