শনিবার, ১৬ আগস্ট, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: আগস্ট ১৫, ২০২৫, ১১:৩৫ পিএম

নির্বাচনের পর সরকারে থাকার ইচ্ছা নেই - সিএনএকে ড. ইউনূস

রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: আগস্ট ১৫, ২০২৫, ১১:৩৫ পিএম

নির্বাচনের পর সরকারে থাকার ইচ্ছা নেই - সিএনএকে ড. ইউনূস

  • বিচার ও সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হলে পুরোনো সমস্যা ফিরবে

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, গণঅভ্যুত্থানকালীন হত্যাকা-ের বিচার ও রাজনৈতিক সংস্কার ছাড়া যদি কেবল নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, তবে দেশে আবারও পুরোনো সমস্যাগুলো ফিরে আসবে। তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, তার সরকারের দায়িত্ব কেবল একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের মাধ্যমে শেষ হবে এবং নির্বাচনের পরে সরকারে থাকার কোনো পরিকল্পনা তার নেই।

গত বুধবার মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে সিঙ্গাপুর ভিত্তিক আন্তর্জাতিক টেলিভিশন চ্যানেল নিউজ এশিয়াকে (সিএনএ) দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে অধ্যাপক ইউনূস এ মন্তব্য করেন। সাক্ষাৎকারে তিনি বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কার, গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী বিচার প্রক্রিয়া, আঞ্চলিক কূটনীতি এবং ভবিষ্যৎ নির্বাচনের রূপরেখা নিয়ে খোলামেলা বক্তব্য দেন।

দায়িত্ব নেওয়ার পর পরিস্থিতি ছিল ‘ভূমিকম্পোত্তর ধ্বংসস্তূপের মতো’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার পর দেখেছি, যেন রিখটার স্কেলে ৯ মাত্রার ভূমিকম্পে আক্রান্ত একটি দেশের মতো অবস্থা। রাজনৈতিক ব্যবস্থা, নির্বাচনব্যবস্থাÑ সবই জালিয়াতিতে ভরা ছিল। এগুলো এমনভাবে অপব্যবহার করা হয়েছিল, যাতে একটি ফ্যাসিস্ট সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়। সেই সরকার বাংলাদেশের অর্থনীতি ও সমাজকে ধ্বংস করেছে।’

তার ভাষায়, সরকারের শুরুর দিনেই চারটি নির্দিষ্ট লক্ষ্য সামনে রাখা হয়েছিলÑ সংস্কার, বিচার, আইনশৃঙ্খলা পুনরুদ্ধার, অবশেষে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন। এখন পর্যন্ত এগুলো বাস্তবায়নের পথে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

সংস্কার ও বিচার ছাড়া নির্বাচন মানেই ‘পুরোনো সমস্যার পুনরাবৃত্তি’
সাক্ষাৎকারে প্রশ্ন আসে, কোনটি আগে হওয়া উচিতÑ সংস্কার, নাকি নির্বাচন? জবাবে অধ্যাপক ইউনূস স্পষ্ট করে বলেন, ‘যদি কেবল নির্বাচন দিয়েই শুরু করি, তাহলে আমাদের সংস্কার বা বিচারের কোনো প্রয়োজন থাকছে না। নির্বাচিতদের হাতে সবকিছু চলে যাবে এবং তখন আমরা আবার সেই পুরোনো সমস্যায় ফিরে যাব।’

তিনি আরও যোগ করেন, ‘গণঅভ্যুত্থানের সময় জনগণের যে আকাক্সক্ষা ছিল, তার প্রতিফলন ঘটানোই অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান দায়িত্ব। এ জন্য তিনটি স্তম্ভ নির্ধারণ করা হয়েছেÑ সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন।

শেখ হাসিনা প্রসঙ্গে কঠোর মন্তব্য

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে দেওয়া তার বিতর্কিত মন্তব্য সম্পর্কেও অধ্যাপক ইউনূস সাক্ষাৎকারে অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, তাকে আমি দানব বলেছিলাম। আরও শক্তিশালী কোনো শব্দ থাকলে সেটাই ব্যবহার করতাম। কারণ, তিনি রাস্তায় খুব কাছ থেকে মানুষ হত্যা করেছেন।

ভারতে আশ্রিত শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর অনুরোধ ভারত প্রত্যাখ্যান করেছে এমন মন্তব্যে তিনি বলেন, ‘আমরা বলেছি, আপনারা তাকে রাখতে পারেন। তবে তাকে যেন বাংলাদেশে অস্থিতিশীলতা তৈরির সুযোগ না দেওয়া হয়। তার এখনো অনেক অনুসারী আছে, তারা আবারও দেশকে অস্থির করার চেষ্টা করতে পারে।’

আঞ্চলিক সম্পর্ক ও ভারতের ভূমিকা

ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্নে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, পাকিস্তান ও চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক ইতিবাচক। ভারতের সঙ্গেও ভালো সম্পর্ক গড়ে তুলতে সরকার আগ্রহী। তিনি উল্লেখ করেন, ‘বাংলাদেশ ও ভারত ভৌগোলিকভাবে এবং অর্থনৈতিকভাবে গভীরভাবে একত্রিত। আমি বহুবার বলেছি, বাংলাদেশের মানচিত্র না আঁকলে ভারতের মানচিত্র আঁকা যায় না।’

তিনি প্রস্তাব দেন, একটি আঞ্চলিক অর্থনৈতিক অঞ্চল গঠন করা যেতে পারে, যেখানে বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, ভুটান এবং ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সাতটি রাজ্য একসঙ্গে যুক্ত হয়ে বঙ্গোপসাগরের সুবিধা ভাগাভাগি করতে পারে।

নির্বাচনের পর ক্ষমতায় থাকার কোনো পরিকল্পনা নেই

অধ্যাপক ইউনূস সাক্ষাৎকারে দৃঢ়ভাবে জানান, অন্তর্বর্তী সরকারের একমাত্র উদ্দেশ্য হলো একটি গ্রহণযোগ্য, স্বচ্ছ ও উৎসবমুখর নির্বাচন আয়োজন। এর বাইরে ক্ষমতায় থাকার কোনো ইচ্ছা তার নেই। তার কথায়, ‘আমরা অঙ্গীকার করেছি, জনগণের আকাক্সক্ষা পূরণ করব। আর নির্বাচনের পর আমাদের দায়িত্ব শেষ হবে।’
 

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!