বুধবার, ২৭ আগস্ট, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


ফয়সাল আহমেদ, রাজবাড়ী

প্রকাশিত: আগস্ট ২৭, ২০২৫, ০৯:৩১ এএম

সেতুর অভাবে দুর্ভোগে চরবাসী - দুর্ভোগে ৩০ হাজার মানুষ

ফয়সাল আহমেদ, রাজবাড়ী

প্রকাশিত: আগস্ট ২৭, ২০২৫, ০৯:৩১ এএম

সেতু

সেতু

গত বছরের ডিসেম্বরে মাটি পরীক্ষার পর সেতু নির্মাণের অনুমোদন দেওয়া হয়। সেই মোতাবেক এবার রড-সিমেন্ট আনা হয়। এতে চরম দুর্ভোগে জীবনযাপন করা স্থানীয়দের বুকে আশা জেগেছিলÑ এবার বুঝি দুর্ভোগ শেষ হবে। কিন্তু আট মাস পেরিয়ে গেলেও কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি না থাকায় আশা এখন হতাশায় রূপ নিয়েছে। এ কারণে দ্রুত সেতু নির্মাণের দাবি আরও জোরালো হয়ে উঠেছে চরাঞ্চলের মানুষের।

জানা গেছে, রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার রতনদিয়া ইউনিয়নের পদ্মা নদীবেষ্টিত চরাঞ্চলে প্রায় ৩০ হাজার মানুষ বসবাস করেন। ইউনিয়নের প্রায় অর্ধেক অংশ (৩, ৬, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ড) পদ্মার চরের ওপর অবস্থিত। এখানে তিনটি স্কুল, কয়েকটি হাট-বাজার রয়েছে। ইউনিয়নের শত শত মানুষ প্রতিদিন হিরু মোল্লার ঘাট দিয়ে উপজেলাসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করে।

ওই ঘাটে সেতু নির্মাণের দাবি দীর্ঘদিনের। বেশ কয়েকবার সেতু নির্মাণের আশ্বাসের পর অবশেষে গত বছরের ডিসেম্বরে মাটি পরীক্ষার পর সেতু নির্মাণের অনুমোদন দেওয়া হয়। কিন্তু সেতুর কাজ শুরু না হওয়ায় বছরের পর বছর কেটে যাচ্ছে শুধু আশ্বাসে, কমছে না ভোগান্তি। বিশেষ করে মালামাল পরিবহন, ফসল আনা-নেওয়া, শিক্ষার্থীদের চলাচল ও অসুস্থ রোগীদের হাসপাতালে নেওয়ার ক্ষেত্রে নানান ভোগান্তি পোহাতে হয় তাদের। শুষ্ক মৌসুমে কোনোভাবে হেঁটে বা যানবাহনে পার হওয়া গেলেও বর্ষায় নৌকা ছাড়া বিকল্প থাকে না। এতে সময় ও অর্থ দুই দিক থেকেই ক্ষতির শিকার হন স্থানীয়রা।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে হিরু মোল্লার ঘাটে সেতু নির্মাণের কথা শুনে এলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। বাধ্য হয়ে যানবাহনসহ ঝুঁকি নিয়ে তারা খেয়া নৌকায় পারাপার হন। এ সময় বাঁশের মাচালি দিয়ে নৌকায় উঠতে বা নামতে গিয়ে অনেকে পানিতে পড়ে যান। একবার খেয়া মিস করলে আধাঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়। এতে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা, ক্লাস, প্রাইভেটে যেতে দেরি হয়ে যায়। এ ছাড়া নৌকায় রোগী আনা-নেওয়া ও কৃষিপণ্য বাজারজাতে সমস্যায় পড়তে হয়। একটি সেতু হলে চরের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষিপণ্য বাজারজাতকরণসহ সব ক্ষেত্রে উন্নয়ন ঘটবে।

নদী পার হওয়া স্থানীয় বাসিন্দা আজিজুল বেপারী বলেন, প্রতিবছরই বর্ষায় প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয় সেতু হবে। কিন্তু শুষ্ক মৌসুমে আর কোনো খোঁজ মেলে না। এবার সেতু তৈরির জন্য রড-সিমেন্ট আনা হলেও কাজ শুরু হয়নি। কেন শুরু হয়নি, তা আমরা জানি না। রোজিনা আক্তার নামে এক নারী যাত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, মেয়ে নিয়ে ডাক্তারের কাছে যাচ্ছি। কষ্টটা বলে বোঝাতে পারব না। সেতু হলে চরের মানুষের দুর্ভোগ অনেকটাই দূর হতো।

কলেজপড়–য়া শিক্ষার্থী শান্ত জানান, প্রতিদিন পড়াশোনার জন্য শত শত শিক্ষার্থীকে চর থেকে কালুখালীতে যেতে হয়। সবাইকে ঘড়ি ধরে ঘাটে আসতে হয়। নৌকা মিস করলে কমপক্ষে আধাঘণ্টা অপেক্ষ করতে হয়। এতে করে পরীক্ষা ও প্রাইভেটে সময়মতো পৌঁছতে সমস্যা হয়। নৌকায় মোটরসাইকেল তুলতেও সমস্যা হয়। সামান্য এদিক-ওদিক হলে পানিতে পড়ে যাওয়ার ভয় থাকে। এতে করে পড়াশোনার উৎসাহ হারাচ্ছে শিক্ষার্থী।

কৃষক আব্দুল ওহাব বলেন, হিরু মোল্লার ঘাটে একটি সেতু চরবাসীর জন্য অতিপ্রয়োজনীয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। কৃষিকাজ করে আমার সংসার চলে। কিন্তু যে ফসল ফলাই তা বিক্রিতে খুব কষ্ট করতে হয়। ফসল কালুখালীর বাজারে নিতে অতিরিক্ত টাকা খরচ হয়। আবার অনেক সময় নৌকা থেকে কৃষিপণ্য পানিতে পড়ে যায়। একটি সেতু থাকলে অল্প সময়ের মধ্যে ফসল বিক্রি করতে পারলে দামও ভালো পেতাম। আমার মতো চরের হাজার হাজার কৃষক এমন দুর্ভোগে আছেন।

রতনদিয়া ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মো. লতিফ মোল্লা বলেন, সেতুর জন্য রড-সিমেন্ট নিয়ে আসা হলেও আজ পর্যন্ত দৃশ্যমান কিছুই হয়নি। চরে প্রায় পাঁচটি ওয়ার্ডের ৩০ হাজার মানুষের বসবাস। সেতুর অভাবে তাদের সন্তানদের স্কুল-কলেজে আসা-যাওয়া ও মালামাল আনা-নেওয়ায় খুবই কষ্ট হয়। অনেক সময় তারা পানিতে পড়ে যান। বিশেষ করে মোটরসাইকেল, ভ্যান, রিকশা নিতে খুব কষ্ট হয়। চরের বাসিন্দারা ঝড়-বৃষ্টির মধ্যে কালুখালী আসতে পারেন না। দ্রুত সেতু নির্মাণ হলে পুরো রতনদিয়াবাসী উপকৃত হবে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মহুয়া আফরোজ বলেন, হিরু মোল্লার ঘাটে সেতু নির্মাণের কাজ শুরু করার পর প্রয়োজনের তাগিদে দুবার নকশা পরিবর্তন করা হয়েছে। এখন বর্ষার কারণে কাজ করা সম্ভব নয়। শুষ্ক মৌসুমে দ্রুতই কাজ শুরু হবে।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!