ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার রাখালগাছি ইউনিয়নের মোল্লাকোয়া গ্রামে অদৃশ্য প্রাণীর কামড়ের ঘটনায় চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। গত এক মাসে শতাধিক নারী, পুরুষ ও শিশু এ রহস্যময় কামড়ের শিকার হয়েছেন বলে দাবি করছেন স্থানীয়রা।
প্রথম ঘটনা ঘটে গ্রামের একটি মসজিদের ইমাম আব্দুস সালামের সঙ্গে। রাতে নিজ ঘরে ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় তিনি বুকের বাম পাশে তীব্র ব্যথা অনুভব করেন। ঘুম ভেঙে দেখেন সাপের কামড়ের মতো পাশাপাশি দুটি ক্ষতচিহ্ন। পরিবার তাকে প্রথমে স্থানীয় এক ওঝার কাছে নিয়ে যায়। ঝাড়ফুঁকের পর তাকে যশোর সদর হাসপাতালে নিলে চিকিৎসকরা জানান, শরীরে কোনো সাপের বিষ পাওয়া যায়নি।
এর পাঁচ দিন পর একইভাবে কামড়ের শিকার হন ইমামের স্ত্রী ও ১০ বছরের ছেলে মেহেরাব। তারাও ওঝার ঝাড়ফুঁকের পর সুস্থ হয়ে ওঠেন। এভাবে এক মাসের ব্যবধানে প্রায় শতাধিক মানুষ কামড়ের শিকার হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
ঘটনার পর থেকেই রাত নামলেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে গ্রামে। বিশেষ করে নারী ও শিশুরা ভয়ে কাঁপছেন। গ্রামজুড়ে গুজব ছড়িয়েছে, ‘জিন সাপ’ মানুষের কামড় দিচ্ছে।
স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য আনিচুর রহমান বলেন, ‘আমি নিজে ১০ জনের বেশি রোগীকে যশোর সদর হাসপাতালে নিয়ে গেছি। তবে ডাক্তাররা পরীক্ষায় কোনো সাপের বিষ পাননি। তবুও গ্রামে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।’
এ বিষয়ে কালীগঞ্জ উপজেলা জামে মসজিদের খতিব আলহাজ রুহুল আমিন সৌরভ বলেন, ‘জিনরা বিভিন্ন রূপ নিতে পারে, এটা কোরআনে উল্লেখ আছে। তবে সরাসরি ‘জিন সাপ’ বলে কিছু নেই। তাই ভয় পাওয়ার কিছু নেই।’
ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন ডা. মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘জিন সাপ বলে কিছু নেই। কালীগঞ্জে আইনশৃঙ্খলা মিটিংয়েও এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এটা আসলে একটি সামাজিক প্যানিক, যার সুযোগ নিচ্ছে অসাধু কবিরাজরা।’
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন