- ক্ষোভে পরিবার-স্বজনরা
রাঙামাটির বাঘাইছড়ি ও লংগদু উপজেলার সীমান্তবর্তী পাকুয়াখালীতে ১৯৯৬ সালের ৯ সেপ্টেম্বর সংঘটিত ৩৫ কাঠুরিয়া হত্যাকা-ের ২৯ বছর পেরিয়ে গেলেও বিচার হয়নি। নিহতদের পরিবার-স্বজনরা এখনো ক্ষোভ ও হতাশায় দিন কাটাচ্ছেন।
১৯৯৬ সালের ওই দিনে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সশস্ত্র শান্তি বাহিনীর সদস্যরা বাঙালি কাঠুরিয়াদের ডেকে নিয়ে বর্বরোচিতভাবে হত্যা করে। গণহত্যার পর সেনাবাহিনী ও বিডিআর যৌথ অভিযান চালিয়ে ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করে।
নিহতদের পরিবার অভিযোগ করে বলছে, তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের প্রভাবশালী মন্ত্রীরা প্রতিশ্রুতি দিয়েও বিচার ও ক্ষতিপূরণ দেননি। পরবর্তী সরকারগুলোও এই গণহত্যার বিষয়ে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি।
পাহাড়ের সচেতন মহল মনে করে, একসঙ্গে ৩৫ জন বাঙালিকে হত্যার পরও রাষ্ট্রীয় কোনো উদ্যোগ না নেওয়া দুঃখজনক। তারা বলেন, রাষ্ট্রের এই নীরবতা পাহাড়ে সন্ত্রাসীদের কাছে রাষ্ট্রকে জিম্মি করে রেখেছে বলে মনে হয়।
সাবেক ছাত্রনেতা ও ডিপিসি নির্বাহী পরিচালক অ্যাডভোকেট কামাল হোসেন সুজন বলেন, ‘শান্তি বাহিনীর আমন্ত্রণে ভোজসভায় যোগ দিতে গিয়ে কাঠুরিয়ারা প্রাণ হারান। বেঁচে যাওয়া একজন ইউনুসের মাধ্যমে জানা যায়, সন্তু লারমার নির্দেশে এ হত্যাকা- ঘটানো হয়।’
গণহত্যার ঘটনার পর তৎকালীন সরকারের চার মন্ত্রী এলাকায় এসে বিচার ও ক্ষতিপূরণের প্রতিশ্রুতি দিলেও পরে তা বাস্তবায়িত হয়নি। বরং ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর পার্বত্য শান্তি চুক্তি চাপিয়ে দেওয়া হয়।
স্থানীয় বাঙালি সংগঠনগুলোর অভিযোগ, চারদলীয় জোটসহ জাতীয় রাজনৈতিক দলগুলোও প্রতিশ্রুতি দিলেও পরে আর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। ফলে পরিবারগুলো এখনো মানবেতর জীবনযাপন করছে।
এদিকে গতকাল মঙ্গলবার এবং আজ বুধবার দুই দিনব্যাপী পাকুয়াখালী গণহত্যা দিবস উপলক্ষে পার্বত্য নাগরিক পরিষদ, সম-অধিকার আন্দোলন, পার্বত্য বাঙালি ছাত্র পরিষদসহ বিভিন্ন সংগঠন সভা-সমাবেশ ও দোয়া-মোনাজাতের আয়োজন করেছে।
তারা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে, পাকুয়াখালী গণহত্যাসহ পাহাড়ের সব হত্যাকা-ের বিচার, নিহত পরিবারগুলোর পুনর্বাসন এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে সম-অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন