- ধাপে ধাপে টাকা নিয়ে ভুয়া নিয়োগপত্র ও পুলিশ ভেরিফিকেশন সরবরাহ
- টেকনাফ পোস্টিং ও রাজশাহী প্রশিক্ষণের কথা বলেও শেষ পর্যন্ত প্রতারণা ধরা পড়ে
- ফিরোজ ও রাশিদুলের বিরুদ্ধে মামলা, তবে তারা আদালতে হাজির না হয়ে পলাতক
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরে সিপাহি পদে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে ভুয়া নিয়োগপত্র ও পুলিশ ভেরিফিকেশন তৈরি করে এক যুবকের কাছ থেকে ২১ লাখ ৭০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সিরাজগঞ্জে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী মো. আব্দুল মালেক লিখিত অভিযোগ করেছেন।
ভুক্তভোগী মালেক সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার বেতকান্দি গ্রামের বাসিন্দা। অভিযোগে তিনি জানান, প্রতারণার মূল হোতা দুজন, মো. ফিরোজ উদ্দিন ও রাশিদুল ইসলাম। তারা সম্পর্কে শালা-দুলাভাই। ফিরোজ ঢাকার মিরপুর সামরিক বাহিনী কমান্ড স্টাফ কলেজে অফিস সহায়ক কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে কর্মরত, আর রাশিদুল ঢাকার মধ্য বাড্ডায় প্রবাসী এজেন্সি ব্যবসায়ী। তাদের স্থায়ী ঠিকানা সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার জামতৈল ইউনিয়নের চরটেংরাইল গ্রামে।
প্রথমে প্রতারক চক্র মালেকের পরিবারকে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে জানায়, ২৫ লাখ টাকার বিনিময়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরে সিপাহি পদে নিয়োগ দেওয়া হবে। ধাপে ধাপে নগদ ও ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা নেওয়ার পর তারা ভুয়া নিয়োগপত্র ও পুলিশ ভেরিফিকেশন সরবরাহ করে। জানানো হয়, মালেকের পোস্টিং হবে টেকনাফে, আর প্রশিক্ষণ নিতে হবে রাজশাহীতে। কিন্তু নির্ধারিত দিনে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে গেলে তিনি জানতে পারেন নিয়োগপত্রটি ভুয়া।
অভিযোগে মালেক উল্লেখ করেন, ফিরোজ ও রাশিদুল তার কাছ থেকে ২১ লাখ ৭০ হাজার টাকা, ৭টি স্ট্যাম্প ও ৭টি চেক নিয়েছেন। টাকা ফেরত না পেয়ে তিনি মিরপুর সেনানিবাসের কমান্ড স্টাফ কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছেও লিখিত অভিযোগ করেছেন। ফিরোজের ব্যক্তিগত নম্বর ১১৯১৪ বলে অভিযোগে উল্লেখ রয়েছে।
ফিরোজের বড় মামা ও কামারখন্দ উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী আতাউর রহমান বলেন, ‘আমি সামাজিক সমঝোতার মাধ্যমে মালেককে টাকা ফেরত দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে ১০টি চেক প্রদান করেছিলাম। তবে ফিরোজের বাবা-মা জমি বিক্রি করে টাকা পরিশোধে রাজি হচ্ছেন না।’
এ ঘটনায় সিরাজগঞ্জ জেলা জজ আদালতে মামলা হলেও একাধিকবার নোটিশ পাঠানোর পরও ফিরোজ ও রাশিদুল হাজির না হয়ে পলাতক রয়েছেন।
প্রবাসী এজেন্সি ব্যবসায়ী রাশিদুল ইসলাম বলেন, ‘শ্যালকের কথা শুনে আমি দেড় লাখ টাকা নিয়েছিলাম, পরে সব টাকা ফিরোজকে দিয়েছি। পরবর্তী সময়ে ফিরোজ ধাপে ধাপে টাকা নিয়েছে। টাকা পরিশোধের চেষ্টা চলছে।’
ফিরোজের মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। কামারখন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনামিকা নজরুল বলেন, ‘অভিযোগ পেয়ে উভয়পক্ষকে হাজির হওয়ার নোটিশ দেওয়া হলেও ফিরোজ ও রাশিদুল হাজির হয়নি। ফিরোজ সেনাবাহিনীতে চাকরি করায় যথাযথ কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করার প্রক্রিয়া চলছে।’
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন