বাউন্ডারি ওয়াল দিয়ে পটুয়াখালী দশমিনায় জোর করে মন্দিরের নামে জায়গা দখলের চেষ্টা করা হয়েছে। এ সময় বাধা দিতে গিয়ে অভিযুক্তদের মারধরে আহত হয়েছেন নারীসহ দুজন। গত বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার বেতাগী সানকিপুর ইউনিয়নের ঠাকুরের হাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঠাকুরের হাট বাজারে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের পূজাম-ব রয়েছে। তবে ওই জায়গা নিয়ে দীর্ঘদিন বিরোধ চলমান। এ নিয়ে পটুয়াখালী দায়রা জজ আদালতে মামলাও চলছে। এরই মধ্যে গত বৃহস্পতিবার রাতে মন্দিরের নামে আরও জায়গা দখলের জন্য দীপঙ্কর ম-ল, ভব সিকদার, নেত্য ভক্ত, অমল ম-ল, কল্যাণ অধিকারীসহ অজ্ঞতনামা ১০-১২ জন মন্দিরের সামনের অংশে বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ করে। খবর পেয়ে জায়গার মালিক রানী বালা, তার দেবরের ছেলে গৌতম হাওলাদার বাধা দিলে তাদের মারধর করে গুরুতর আহত করে। খবর পেয়ে পুলিশ এসে তাদের উদ্ধার করে দশমিনা হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠান।
আহত রানী বালা বলেন, ‘ওই মন্দিরের জন্য আমরা ২ শতাংস জমি দান করেছি। সেই জমির ওপর মন্দির নির্মাণ করা হয়। মন্দিরের সামনে আমার শেষ সম্বল হিসেবে অল্প কিছু জায়গা আছে। ওই জায়গা দখল করার জন্য দীপঙ্কর ম-ল, ভব সিকদার, অমল ম-ল, মানিক বিশ্বাসসহ কয়েকজন দীর্ঘদিন চেষ্টা করছে। আমরা সব জমি বিক্রি করে শুধু ওই জায়গাটুকু রাখছি। গত বৃহস্পতিবার পূজা শেষ হওয়ার আগেই রাতে তারা জায়গা দখল করার জন্য বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ করে। আমি বাধা দিলে আমাকে মারধর করে আহত করে আটকে রাখে পরে দশমিনা থানা পুলিশ আমাদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠায়। আমি এর বিচার চাই।’
ভুক্তভোগী রনজিৎ হাওলাদার বলেন, ‘জমি নিয়ে পটুয়াখালী জজ আদালতে মামলা চলছে। দশমিনা থানায় অভিযোগ দেওয়া আছে। পূজা শেষে ওসি জমি নিয়ে সবার সঙ্গে বসবেন বলে জানান। কিন্তু তার কথা অমান্য করে বৃহস্পতিবার রাতে জায়গা দখল করার জন্য ওয়াল নির্মাণ করা হয়। বাধা দিতে গেল পসারি রানীর নির্দেশে আমার ছেলে গৌতম হালদার ও ভাইয়ের বউ রানী বালাকে মারধর করে আটকে রাখা হয়। আমাকেও প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়। পরে দশমিনা থানা পুলিশ এসে আমাদের রক্ষা করে। আমি উপজেলা প্রশাসনের কাছে তাদের বিচার দাবি করি।’
বেতাগী সানকিপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইউসুব খান জানান, মন্দিরের জায়গা নিয়ে দীর্ঘদিন বিরোধ চলোমান। রনজিৎ হাওলাদার মন্দিরের জন্য জায়গা দিয়াছে তার পরও কিছু লোক তার একখ- জায়গা দখল করার জন্য একের পর হুমকি ও মারধরের ঘটনা ঘটছে। এটা খুবই ন্যক্কারজনক। দুর্বল লোকের জন্য আইন কি নাই। পসারি রানীর নির্দেশে এসব হচ্ছে। বৃহস্পতিবার যে ঘটনা মন্দিরের সামনে ঘটছে মন্দিরের মধ্যে অনেক মূর্তি ছিল কোনো ক্ষতি হলে তার দায় কে নিত?
এ ঘটনায় অভিযুক্ত পসারি রানীসহ নিত্য ভক্ত, ভব সিকদার ও অমল ম-লের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা কথা বলতে রাজি হননি।
দশমিনা থানার ওসি মোহাম্মাদ আবদুল আলীম বলেন, বিষয়টি শুনে পুলিশ পাঠিয়ে পরিবেশ শান্ত করা হয়েছে। আহতদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন