বেনাপোল কাস্টম হাউসে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে কাস্টমসের রাজস্ব কর্মকর্তা শামীমা আক্তার ও তার সহযোগী হাসিবুর রহমানকে গ্রেপ্তার করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ২ লাখ ৭৬ হাজার টাকা ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে সংস্থাটি।
গতকাল মঙ্গলবার দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, গ্রেপ্তার দুজনকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
দুদক মহাপরিচালক বলেন, পাবলিক সার্ভেন্ট হয়ে অর্পিত ক্ষমতার অপব্যবহার করে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টদের শুল্কায়নে অবৈধ সুবিধা দেওয়ার উদ্দেশ্যে জব্দ করা ২ লাখ ৭৬ হাজার টাকাসহ বিভিন্ন বিভিন্ন সময় ঘুষ গ্রহণ করে দ-বিধি, ১৮৬০-এর ১৬১/১৬২/১৬৩/১৬৪ ধারা ও দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারায় এবং এনজিও কর্মী (২) আসামি হাসিবুর রহমান তাকে ঘুষ গ্রহণে সহায়তা করে দ-বিধি, ১৮৬০-এর ১৬২/১৬৩/১৬৫(ক) ধারায় অর্থাৎ তারা উভয়ে পরস্পর যোগসাজশে ১৬১/১৬২/১৬৩/১৬৪/১৬৫(ক)/১০৯ ধারা তৎসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করার তাদের বিরুদ্ধে বর্ণিত ধারায় একটি মামলা রুজু করা হয়।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, অভিযোগের ভিত্তিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের অনুমোদন সাপেক্ষে ০৬/১০/২০২৫ তারিখ অভিযান পরিচালনাকালে দুদক টিমের সদস্যরা ছদ্মবেশে কাস্টম হাউস বেনাপোল, যশোরের আশপাশে অবস্থান করে অভিযোগ বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করে। আসামি শামীমা আক্তার কাস্টম হাউস, বেনাপোল, যশোরের অ্যাসেসমেন্ট গ্রুপ-৬-এর রাজস্ব কর্মকর্তা।
শুল্কায়নের সময় রাজস্ব কর্মকর্তা আসামি শামীমা আক্তার কর্তৃক বিভিন্ন সময়ে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টদের কাছে দাবি ঘুষের টাকা আসামি হাসিবুর রহমান নামীয় ব্যক্তি নিয়মিত সংগ্রহ করেন। হাসিবুর রহমান (২৭) রাজস্ব কর্মকর্তা শামীমা আক্তারের পক্ষে ঘুষের টাকা সংগ্রহপূর্বক কাস্টম হাউস, বেনাপোল, যশোরের গেটের বিপরীত পাশে অবস্থিত সুরুজ মিয়ার বিকাশের দোকানে গচ্ছিত রাখেন।
পরে সুবিধামতো সময়ে হাসিবুর রহমানের মাধ্যমে রাজস্ব কর্মকর্তা শামীমা আক্তার সুরুজের দোকান থেকে ঘুষের টাকা সংগ্রহ করেন। আসামি হাসিবুর রহমান (২৭) কর্তৃক সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টদের কাছ থেকে আদায় ঘুষের ২ লাখ ৭৬ হাজার টাকা রাজস্ব কর্মকর্তা শামীমা আক্তারের হাতে দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নেন। ঘুষের টাকা দেওয়ার লক্ষ্যে হাসিবুর রহমান কাস্টম হাউসের গেটের কাছে এলে দুদক টিম হাসিবুর রহমানকে ২ লাখ ৭৬ হাজার টাকাসহ গত সোমবার গ্রেপ্তার করে বেনাপোল পোর্ট থানায় ওসি বরাবর সোপার্দ করা হয়। ওই টাকাসহ হাসিবুর রহমানকে রাজস্ব কর্মকর্তা শামীমা আক্তারের কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়। শামীমা আক্তারকে ওই টাকা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি জানান, হাসিবুর রহমানের সঙ্গে তার নিয়মিত যোগাযোগ হয় এবং হাসিবুর রহমানকে টাকা তার দপ্তরে আনতে বলেছেন। পরবর্তী সময়ে টিম কর্তৃক হাসিবুর রহমানের কাছ থেকে উদ্ধার করা ২ লাখ ৭৬ হাজার টাকা জব্দ তালিকা মূলে জব্দ করা হয়। যশোর থেকে মামলার এজাহারভুক্ত আসামি রাজস্ব কর্মকর্তা শামীমা আক্তারকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন