অবশেষে আটক দেখানো হলো বেনাপোল কাস্টম হাউসের রাজস্ব কর্মকর্তা শামীমা আক্তারকে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে দুদকের একটি দল তাকে আটক করে। বেনাপোল কাস্টম হাউসে ঘুষকা-ে দুজনকে আটক করে যশোর আদালতে সোপর্দ করেছেন দুদক যশোর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের কর্মকর্তারা।
আটককৃতরা হলোÑ বেনাপোল কাস্টম হাউসের ৬নং শুল্কায়ন গ্রুপের রাজস্ব কর্মকর্তা শামীমা আক্তার ও তার সহযোগী হাসিবুর রহমান। শামীমা আক্তার যশোর কোতোয়ালি থানার ৩০২, নাজির শংকরপুর এলাকার শহীদুল ইসলামের মেয়ে ও হাসিবুর বেনাপোল পোর্ট থানার বেনাপোল গ্রামের নাজমুল হোসেনের ছেলে।
দুদক জানায়, গত সোমবার বিকেলে কাস্টম হাউসে অভিযানে গিয়ে দুদক কর্মকর্তারা এক ব্যক্তিকে ঘুষের ২ লাখ ৭৬ হাজার টাকাসহ আটক করেন। আটক হাসিবুর রহমান স্থানীয়ভাবে ‘এনজিও সদস্য’ নামে পরিচিত। তিনি কাস্টস হাউসের ৬নং শুল্কায়ন গ্রুপের রাজস্ব কর্মকর্তা শামীমা আক্তারের ঘুষের টাকা সংগ্রহকারী বলে দাবি করেছেন দুদক কর্মকর্তারা। হাসিবুর দুদকের কাছে এ টাকা রাজস্ব কর্মকর্তা স্বীকার করলেও দুদক ওই রাজস্ব কর্মকর্তাকে রহস্যজনক কারণে আটক করেনি। যা নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে হাসিবুর রহমান ওই টাকা বেনাপোল কাস্টম হাউসের রাজস্ব কর্মকর্তা শামীমা আক্তারের ঘুষের বলে জানান। তাকে নিয়ে শামীমা আক্তারের কক্ষে যান দুদক কর্মকর্তারা। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে শামীমা আক্তার স্বীকার করেন টাকাগুলো হাসিবুর তাকে দেওয়ার জন্য আনছিলেন। সেখানে কাস্টমস কমিশনার খালেদ মোহাম্মাদ আবু হোসেনের সামনে শামীমা আক্তার ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা চান।
দুদক যশোর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আল আমীন বলেন, জব্দ করা টাকার নম্বর মিলিয়ে তালিকাবদ্ধ করতে রাত সাড়ে ৮টা বেজে যায়। এ সময় দুদক কর্মকর্তারা রাজস্ব কর্মকর্তা শামীমা আক্তারের কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে তাকে কাস্টমস কমিশনারের জিম্মায় রেখে কাস্টম হাউসের প্রধান ফটকের সামনে রাখা গাড়িতে ওঠেন। এ সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে অসদাচরণ এবং দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাকে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ তুলে শতাধিক লোক গাড়িটি আটকে রাখেন। এ সময় তারা বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। এতে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন কর্মকর্তারা। খবর পেয়ে প্রায় ৩০ মিনিট পর রাত সোয়া ৯টার দিকে বেনাপোল পোর্ট থানা পুলিশ কাস্টম হাউসে গিয়ে কর্মকর্তাদের উদ্ধার করে। এরপর পুলিশি প্রহরায় গাড়িটি যশোরের উদ্দেশে বেনাপোল কাস্টম হাউস ছেড়ে যায়।
দুদক যশোর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. সালাহউদ্দীন বলেন, রাজস্ব কর্মকর্তা শামীমা আক্তার ও তার সহযোগী হাসিবুর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণের মামলা দিয়ে যশোর আদালতে পাঠানো হয়েছে। আদালত তাদের জেলহাজতে প্রেরণ করেছে। জব্দ করা টাকা আদালতের অনুমতি নিয়ে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য কাস্টমস কমিশনার খালেদ মোহাম্মাদ আবু হোসেনের মুঠোফোন একাধিকবার কল করা হলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন