শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার গারো পাহাড়ের পাদদেশে প্রকৃতির অপরূপ সৃষ্টি আলোচিত গজনী অবকাশ পর্যটনকেন্দ্র। প্রতি বছর হাজারো পর্যটকের ভিড়ে মুখরিত থাকে এই পর্যটনকেন্দ্র। কেন্দ্রটি ঘিরে জেলাসহ সারা দেশেই কমবেশি পরিচিত লাভ করেছে।
জানা যায়, ১৯৯৩ সালে ৯০ একর জায়গায় গজনী অবকাশ কেন্দ্র গড়ে তোলা হয় এবং গত ২০ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত পর্যটনকেন্দ্রটি সাজাতে গড়ে তোলা হয় ওয়াচ-টাওয়ার, কৃত্রিম লেক, মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভ, কৃত্রিম ঝর্ণা, ভাসমান ব্রিজসহ নানা স্থাপনা। জেলা প্রশাসকের কার্যালয় পর্যটনকেন্দ্রটি পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণ করেন। কেন্দ্রের স্থাপনাগুলো লিজ বাবদ প্রতি বছর জেলা প্রশাসনের আয় হয় প্রায় ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা। অভিযোগ উঠেছে, আয়ের টাকা পর্যটন কেন্দ্রে খরচ না করে জেলা প্রশাসকের অন্য খাতে ব্যয় দেখানো হয়। যা নিয়ে আগত পর্যটক, এলাকাবাসী ও স্থানীয় ব্যবসায়ীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে প্রশ্ন তুলেছেন।
অপরদিকে গত দুই বছরে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইজারাদারদের মাধ্যমে নির্মাণ করা হয়েছে ঝুলন্ত ব্রিজ, ওয়াটার পার্ক, ভাসমান ব্রিজসহ নানা স্থাপনা। নামমাত্র ইজারা নিয়ে এসব স্থাপনা থেকে পর্যটকদের কাছ থেকে টাকা নিচ্ছেন ইজারাদাররা। তবে অবকাশ পর্যটন কেন্দ্রে প্রবেশ ও বিভিন্ন স্থাপনা থেকে প্রতি বছরের আয়ের সোয়া কোটি ইজারার টাকা স্থাপনা নির্মাণ না করে অন্য খাতে খরচ করার এখতিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সচেতন মহল। অপরদিকে আগত পর্যটকরা বলছেন, ২০ বছর আগে নির্মিত স্থাপনা বারবার দেখতে দেখতে পর্যটকরা হাঁপিয়ে উঠেছেন।
ইজারাদার ফরিদ মিয়া জানান, পুরোনো স্থাপনা দিয়ে পর্যটকদের কাছে অবকাশ আকর্ষণ হারাচ্ছিল, আমরা ইজারাদাররা কোটি কোটি টাকা খরচ করে দুই পাহাড়ের মাঝে ঝুলন্ত ব্রিজ, ভাসমান ব্রিজসহ নতুন নতুন স্থাপনা তৈরি করে টিকিয়ে রেখেছি।
ফুলপুর থেকে আসা পর্যটক হাসান আলি জানান, অবকাশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা খুবই খারাপ, প্রকৃতি উপভোগ করতে গেলে পাহাড়ে ঘাপটি মেরে থাকা ছিনতাইকারীর হাতে সর্বোস্ব খোয়াতে হয়। পর্যটন কেন্দ্রের পাশেই গোমরা গ্রামের কৃষি উদ্যোগক্তা আনোয়ার হোসেন বলেন, অবকাশ কেন্দ্রের ইজারার কোটি টাকা পর্যটনের উন্নয়নে ব্যয় না করে জেলা প্রশাসক যদি শেরপুরে বসে অন্য খাতে ব্যয় করেন তবে পর্যটনের জন্য এটা সুফল বয়ে আনবে না বরং পর্যটনকেন্দ্রটি আকর্ষণ হারিয়ে মুখ থুবড়ে পড়বে অচিরেই।
জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান জানান, ইজারার টাকায় বছরে ১২ লাখ টাকা লোকবলের বেতন বাবদ ব্যয় হয়। বাকি কোটি টাকা কোথায় খরচ করেন এমন প্রশ্নে তিনি অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, এ বিষয়ে একটি কথাও বলব না আপনাদের কাছে।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন