জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) সাগর গোলজার নামের এক শিক্ষার্থীর মোবাইল ফোন চুরির পর বিক্রির টাকা দিয়ে ইয়াবা সেবন করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের ৫৩ ব্যাচের শিক্ষার্থী সামিউল আজীমের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী এবং অভিযুক্ত দুজনই একই হলের শিক্ষার্থী।
বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম হলে এই ঘটনা ঘটে। পরে ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর অভিযুক্তকে হল অফিসে আনা হলে প্রশাসনিক ব্যবস্থা থেকে বাঁচাতে তদবির করার অভিযোগ উঠেছে কাজী নজরুল ইসলাম হল শাখা ছাত্রদলের সভাপতি মেহেদী হাসান ইমনের বিরুদ্ধে।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী সাগর গোলজার জানান, বৃহস্পতিবার ঘুম থেকে উঠে তিনি তার ফোন খুঁজে পাননি। পরে হলের সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করে দেখা যায়, পাশের রুমের ছাত্র সামিউল আজীম তার কক্ষে প্রবেশ করে কিছুক্ষণ পর বেরিয়ে যায়। সেসময় কক্ষে ভুক্তভোগী ছাড়া আর কেউ উপস্থিত ছিলেন না।
ফুটেজ দেখে বিষয়টি নিয়ে জিজ্ঞেস করলে সামিউল মোবাইল চুরির কথা স্বীকার করে। সে জানায়, ফোনটি টুঙ্গীতে নিয়ে বিক্রি করে সেই টাকা দিয়ে ইয়াবা সেবন করেছে।
ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর সন্ধ্যায় যখন অভিযুক্ত সামিউলকে হল অফিসে আনা হয়, তখন সেখানে উপস্থিত হন ওই হলের ছাত্রদলের সভাপতি মেহেদী হাসান ইমন। তিনি হল ওয়ার্ডেন এবং সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক উজ্জ্বল কুমার মণ্ডলের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টিকে “সিম্পল” ও নিজেদের মধ্যে সমাধানযোগ্য বলে উল্লেখ করেন।
এ সময় ওয়ার্ডেন উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, ‘তোমরাও শোনো, এটা নাকি সিম্পল বিষয়।’
বিষয়টি সম্পর্কে পরবর্তীতে ইমনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘প্রথমে আমাকে অভিযুক্তের বন্ধুরা এসে ফোন চুরির বিষয়ে বলে। তাই ওয়ার্ডেন স্যারকে বলেছি বিষয়টি ‘সিম্পল’ ও সমাধানযোগ্য। আমি জানতাম না এখানে মাদকের বিষয় আছে। ভেবেছিলাম শুধু ফোন চুরির ঘটনা।’
এর জবাবে ওয়ার্ডেন বলেন, ‘আমরা অভিযুক্তের বিষয়ে আগেও কিছু ইস্যু পেয়েছি। তোমরা তো সেগুলো জানো। এটাকে কিভাবে সিম্পল বলো?’
এ বিষয়ে হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘যেখানে ফোনটি বিক্রি করা হয়েছে, সেখানে প্রতিদিন হাজারখানেক মানুষ ইয়াবা সেবন করতে যায়। সেখান থেকে ফোন উদ্ধার করা কঠিন হতে পারে। আমরা ফোনটির বিষয়ে পরে সিদ্ধান্ত নেব।’
তিনি আরও বলেন, ‘অভিযুক্ত মাদকাসক্ত ছেলেটিকে একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ দেখছেন এবং তার পরামর্শ অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন