বুধবার, ০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৩, ২০২৫, ০৯:০৮ পিএম

কুকুর বা বিড়াল হত্যা করলে বাংলাদেশের আইনে কী শাস্তি?

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৩, ২০২৫, ০৯:০৮ পিএম

ছবি- সংগৃহীত

ছবি- সংগৃহীত

পাবনার ঈশ্বরদীতে সদ্যজাত আটটি পথকুকুর ছানাকে বস্তায় ভরে পুকুরে ফেলে হত্যার নৃশংস ঘটনাটি দেশজুড়ে ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে। সন্তান হারিয়ে মা কুকুরের আর্তনাদ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ায় আবারও আলোচনায় এসেছে বাংলাদেশে পথকুকুর বা বিড়াল হত্যা করলে কী শাস্তি হতে পারে?

ঘটনা ও প্রশাসনের পদক্ষেপ

ঈশ্বরদী উপজেলা পরিষদ কোয়ার্টার এলাকায় এক নারী সরকারি কর্মকর্তার স্ত্রী তার ছেলেকে দিয়ে কুকুরছানাগুলোকে বস্তায় ভরে পুকুরে ফেলে দেয়। পরে মৃত অবস্থায় তাদের উদ্ধার করা হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার কোয়ার্টার বরাদ্দ বাতিল করেন। আহত মা কুকুরকে উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের অধীনে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

এদিকে, ঢাকার ‘অ্যানিমেল ওয়েলফেয়ার’ সংগঠনের সদস্যরা ঈশ্বরদীতে গিয়ে পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশাসনের সাথে আলোচনা শুরু করেছেন।

বাংলাদেশে প্রাণি হত্যার আইন কী বলে? বাংলাদেশে প্রাণি নির্যাতন ও হত্যার বিরুদ্ধে রয়েছে ২০১৯ সালের প্রাণি কল্যাণ আইন। এর অধীনে, মালিকবিহীন (পথ) কুকুর বা বিড়াল হত্যা করলে অপরাধ এই আইনে বলা হয়েছে, বিশেষ কোনো কারণ ছাড়া মালিকবিহীন কুকুর বা বিড়ালকে হত্যা, অপসারণ বা নির্যাতন করা যাবে না।

শাস্তির বিধান

প্রথমবার অপরাধে, ৬ মাস পর্যন্ত বিনাশ্রম কারাদণ্ড বা ১০,০০০ টাকা জরিমানা। পুনরায় অপরাধে, ২ বছর পর্যন্ত বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ৫০,০০০ টাকা জরিমানা। এই শাস্তি পোষ্য প্রাণি, পথ প্রাণি, সব ধরনের প্রাণির জন্যই প্রযোজ্য।

কী কী আচরণ অপরাধ?

আইনের ৬ ও ৭ ধারায় বলা হয়েছে, অঙ্গহানি করা,বিষ প্রয়োগে হত্যা,মারধর, নির্যাতন ও অনাহারে রাখা এসবই ‘নিষ্ঠুর আচরণ’ হিসেবে গণ্য হবে।

কে মামলা করতে পারে?

নাগরিক কি নিজে অভিযোগ করতে পারবেন? এখানেই রয়েছে বড় সীমাবদ্ধতা। আইন অনুযায়ী, নাগরিক নিজে গিয়ে সরাসরি মামলা করতে পারবেন না। শুধুমাত্র প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বা তার অনুমোদিত ভেটেরিনারি সার্জন লিখিত অভিযোগ দিলে আদালত মামলা গ্রহণ করবে।

এ কারণে অনেক ক্ষেত্রেই মামলার প্রক্রিয়া শুরু করতে দেরি হয়। পেনাল কোডে আরও একটি ধারা রয়েছে, ২০১৯ সালের আইনে মামলা করা না গেলে পুলিশ দণ্ডবিধির ৪২৯ ধারা ব্যবহার করতে পারে।

এ ধারায় ৫০ টাকা বা তার বেশি মূল্যমানের প্রাণিকে হত্যা করলে,  ৫ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড বা জরিমানা হতে পারে। তবে পথকুকুর বা পথবিড়ালের মূল্য নির্ধারণ কঠিন হওয়ায় এই ধারা প্রয়োগেও জটিলতা তৈরি হয়।

মামলা ও তদন্ত কে করবে?

ঘটনা জানলে প্রাণিসম্পদ বিভাগ, উপজেলা প্রশাসন ও ভ্রাম্যমাণ আদালত সরাসরি ব্যবস্থা নিতে পারে। এছাড়া প্রাণি অধিকার সংগঠনগুলো সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে পারে, যার ভিত্তিতে পুলিশ তদন্ত করে।

দেশজুড়ে বাড়ছে প্রাণি নির্যাতনের ঘটনা

বগুড়ায় বিড়াল জবাই করে হত্যার ঘটনা থেকে শুরু করে ঢাকার মোহাম্মদপুরে বিষ প্রয়োগে পথপ্রাণি হত্যা এমন ঘটনা সম্প্রতি বেড়েছে। প্রাণি অধিকারকর্মীরা বলছেন, আইন থাকলেও এর প্রয়োগ দুর্বল হওয়ায় অপরাধীরা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি পায় না।

পাবনার ঘটনা শুধু নৃশংসই নয়, আইন ও নৈতিকতার বড় লঙ্ঘন। ২০১৯ সালের প্রাণি কল্যাণ আইন অনুযায়ী এর জন্য পরিষ্কার শাস্তির বিধান আছে।কিন্তু অভিযোগ গ্রহণ ও আইনি প্রক্রিয়া শুরুতে প্রশাসনিক সক্রিয়তা জরুরি। প্রাণি অধিকার সংগঠনগুলো বলছে, আইন প্রয়োগ শক্তিশালী করা না গেলে এ ধরনের নিষ্ঠুরতা থামবে না।

Link copied!