ইউরোপিয়ান অঞ্চলের বিশ^কাপ বাছাইপর্বের ম্যাচে পেনাল্টি মিস করেও হ্যাটট্রিট করার নৈপুণ্য দেখান আর্নিং হলান্ড। তার নৈপুণ্যে নরওয়ে ৫-০ গোলে হারায় ইসরায়েলকে। একই রাতে পেনাল্টি মিস করেছেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো, ফেরান তোরেস ও মাতেও রেতেগুই। তবে জয় পেয়েছে তাদের দলও। রোনালদোর দল পর্তুগাল ১-০ গোলে হারায় আয়ারল্যান্ডকে। তোরেসের স্পেন ২-০ গোলে জিতেছে জর্জিয়ার বিপক্ষে। আর রেতেগুইয়ের ইতালি ৩-১ গোলে হারিয়েছে এস্তোনিয়াকে। অন্য ম্যাচে হাঙ্গেরি ২-০ গোলে আর্মেনিয়া, তুরস্ক ৬-১ গোলে বুলগেরিয়া ও আলবেনিয়া ১-০ গোলে সার্বিয়াকে হারায়।
ইসরায়েলের বিপক্ষে বড় জয়ের ম্যাচে নরওয়েকে ছয় মিনিটেই পেনাল্টি থেকে দলকে এগিয়ে দেওয়ার সুযোগ পান হলান্ড। কিন্তু তার প্রথম প্রচেষ্টাটি দারুণভাবে রুখে দেন ইসরায়েলের গোলরক্ষক ড্যানিয়েল পেরেটজ। তবে পোলিশ রেফারি সাইমন মারচিনিয়াক নির্দেশ দেন পেনাল্টিটি পুনরায় নেওয়ার, কারণ পেরেটজ আগেই গোললাইন ছেড়ে এগিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু দ্বিতীয়বারও হলান্ডকে রুখে দেন পেরেটজ। পেনাল্টি মিস করে দমে যাননি হলান্ড।
আদায় করে নেন হ্যাটট্রিক। ইউরোপিয়ান অঞ্চলের বাছাইপর্বে এখন সর্বোচ্চ ১২ গোল হলান্ডের। এই হ্যাটট্রিকে নরওয়ের জার্সিতে হলান্ডের মোট গোল হলো ৫১, যা দেশটির ইতিহাসে সর্বোচ্চ। মাত্র ৪৬ ম্যাচেই ৫০ গোলের মাইলফলক স্পর্শ করেছেন তিনি। যেখানে ইংল্যান্ডের হ্যারি কেনের লেগেছে ৭১ ম্যাচ, ব্রাজিলের নেইমারের ৭৪, আর ফ্রান্সের কিলিয়ান এমবাপ্পের লেগেছে ৯০ ম্যাচ। এ ছাড়া রেকর্ড আটবারের ব্যালন ডি’অর বিজয়ী লিওনেল মেসির ৫০ গোল করতে লেগেছিল ১০৭ ম্যাচ, আর ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর লেগেছিল ১১৪ ম্যাচ। এই জয়ে নরওয়ে বাছাইপর্বে এখন পর্যন্ত শতভাগ সাফল্য ধরে রেখেছেÑ ছয় ম্যাচে ছয় জয়। তারা গ্রুপ ‘আই’তে ইতালির চেয়ে ৬ পয়েন্টে এগিয়ে, কাগজে-কলমে যদিও ইতালির এখনো শীর্ষে ওঠার সুযোগ আছে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, ১৯৯৮ সালের পর আবার বিশ^কাপ খেলার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে নরওয়ে।
অন্যদিকে, বিশ^কাপ বাছাইয়ে ইতালির জন্য প্রতিটি ম্যাচই এখন বাঁচা-মরার। এমন ম্যাচে এস্তোনিয়ার বিপক্ষে ‘আজ্জুরি’দের জয়ে গোল করেছেন মইসে কিন, মাতেও রেতেগুই ও ফ্রান্সিসকো এস্পোসিতো। ম্যাচের ৩০ মিনিটে রেতেগুই পেনাল্টি মিস না করলে জয়ের ব্যবধানটা আরও বড় হতে পারত ইতালির। এই জয়ের পরও অবশ্য সরাসরি বিশ^কাপ খেলার স্বপ্ন খুব একটা উজ্জ্বল হয়নি চারবারের বিশ^চ্যাম্পিয়নদের। শীর্ষে থাকা নরওয়ের চেয়ে এক ম্যাচ কম খেলে ৬ পয়েন্টে পিছিয়ে আছে তারা। ছয় ম্যাচে নরওয়ের পয়েন্ট ১৮ এবং পাঁচ ম্যাচে ইতালির ১২। অর্থাৎ, শেষ তিন ম্যাচের প্রতিটিতে জেতার পাশাপাশি ইতালিকে অপেক্ষায় থাকতে হবে নরওয়ের আশ্চর্য পতনেরও।
অপর ম্যাচে পর্তুগালের হয়ে ম্যাচের যোগ করা সময়ে একমাত্র গোলটি করেছেন রুবেন নেভেস। ৭৫ মিনিটে রোনালদো পেনাল্টি মিস না করলে অবশ্য পর্তুগালের জয়টা আরও অনায়াস হতে পারত। এর মধ্য দিয়ে বিশ^কাপ বাছাইয়ের প্রথম তিন ম্যাচের তিনটিতেই জিতে ৯ পয়েন্ট নিয়ে সবার ওপরে থাকল পর্তুগাল। পর্তুগালের মতো টানা তিন ম্যাচে জিতেছে স্পেনও। স্পেনের হয়ে গোল করেছেন ইয়েরেমি পিনো ও মিকেল আরিজাবাল। তবে এই ম্যাচেও হয়েছে পেনাল্টি মিস। ম্যাচের ২৯ মিনিটে সুযোগ পেয়েও গোল করতে ব্যর্থ হন ফেরান তোরেস। এই জয়ের ফলে ৩ ম্যাচে ৯ পয়েন্ট নিয়ে সবার শীর্ষে স্পেন।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন