দুবাইয়ের শান্ত জলের বুকে ধীরে ধীরে রূপ নিচ্ছে এক অনন্য স্থাপত্যের বিস্ময় দুবাই মিউজিয়াম অফ আর্ট । জাপানের বিখ্যাত স্থপতি তাদাও আন্দোর নকশায় গড়ে ওঠা এই জাদুঘরটিকে বলা হচ্ছে ‘সাগরের ওপর ভাসমান শিল্পমন্দির’, যেখানে সমুদ্র, আলো আর স্থাপত্য এক হয়ে গেছে। ভবনটি দেখতে যেন এক বিশাল শামুকের খোলস, যার মধ্যে লুকিয়ে আছে মুক্তোর মতো উজ্জ্বল এক সাংস্কৃতিক দিগন্ত। ‘শেল ও মুক্তা’ ধারণার ওপর ভিত্তি করে তৈরি এই নকশা দুবাইয়ের প্রাচীন মুক্তা আহরণের ইতিহাসকে পুনর্জীবিত করে। কংক্রিটের বাঁকা গায়ে সূর্যের আলো খেলে যায়, আর মাঝখানের ফাঁকা গোল গম্বুজ দিয়ে সেই আলো প্রবেশ করে জলের প্রতিফলনে নাচে যেন পুরো ভবনটাই জীবন্ত।
এই পাঁচতলা মিউজিয়ামের প্রথম দুটি তলা থাকবে শিল্প প্রদর্শনীর জন্য, যেখানে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক শিল্পীদের সমসাময়িক কাজ প্রদর্শিত হবে। উপরের তলায় থাকবে রেস্টুরেন্ট ও ভিআইপি লাউঞ্জ, যেখান থেকে দেখা যাবে দুবাই ক্রিকের রূপসী জলরেখা। নিচের তলায় থাকবে লাইব্রেরি, শিক্ষাকেন্দ্র ও ইভেন্ট স্পেস যেখানে হবে শিল্পী আলোচনা, কর্মশালা ও আর্ট ফেয়ার। পুরো ভবনটি এমনভাবে নির্মিত হচ্ছে যাতে এটি সত্যিই পানির ওপরে ভাসছে বলে মনে হয়।
স্থাপত্যের মায়া
এই জাদুঘরের নকশা করেছেন জাপানের কিংবদন্তি স্থপতি তাডাও আন্ড, যিনি ‘আলো ও ছায়ার স্থপতি’ নামে পরিচিত। তার ডিজাইনে দুমাকে গড়ে তোলা হচ্ছে এমনভাবে, যেন সূর্যের আলো ও সাগরের প্রতিফলন মিলেমিশে তৈরি করে এক শান্ত, ধ্যানমগ্ন পরিবেশ। ভবনের গোলাকার কেন্দ্রীয় ফাঁকা অংশ দিয়ে প্রবেশ করা আলো দিনের সময়ভেদে রং ও ছায়া বদলায় যেন সময় নিজেই শিল্পে রূপ নিচ্ছে।
নকশার ধারণা- শামুক ও মুক্তা
দুমার নকশা এসেছে দুবাইয়ের ঐতিহ্যবাহী মুক্তা আহরণের ইতিহাস থেকে।
পুরো কাঠামোটি যেন এক বিশাল শামুকের খোলস, যার ভেতরে লুকিয়ে আছে ‘মুক্তা’ অর্থাৎ শিল্প। ভবনটি পানির ওপরে নির্মিত হচ্ছে, যাতে এর ছায়া ও প্রতিফলন মিলিয়ে মনে হয় এটি সত্যিই ভাসছে।
ভেতরের দুনিয়া পাঁচ তলায় শিল্পের মহাবিশ্ব
দুমারর ভেতর যেন শিল্পের এক ছোট্ট মহাবিশ্ব। প্রথম দুটি তলায় থাকবে সমসাময়িক ও আধুনিক শিল্প প্রদর্শনী, যেখানে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক শিল্পীদের কাজ থাকবে। তৃতীয় তলায় থাকবে রেস্টুরেন্ট ও ভিআইপি লাউঞ্জ, সমুদ্রদৃশ্য উপভোগের জন্য। গ্রাউন্ড ও বেসমেন্টে থাকবে লাইব্রেরি, শিক্ষাকেন্দ্র ও ইভেন্ট স্পেস, যেখানে হবে আর্ট ফেয়ার, কর্মশালা ও শিল্পী আলোচনা। ভবনের ভেতর ঘুরলে আলো, জলের প্রতিফলন আর স্থাপত্য একসঙ্গে যেন সুর তোলে।
উদ্বোধন ও অবস্থান
দুমা এখনো নির্মাণাধীন, তবে উদ্বোধনের সম্ভাবনা রয়েছে ২০২৫ সালের শেষ দিকে বা ২০২৬ সালের শুরুতে। এর অবস্থান: দুবাই ক্রেক, আল যেদ্দাফ এলাকা। প্রবেশমূল্য (প্রত্যাশিত): ৩০-৫০ (দুবাই ডলার)। যাতায়াত: ক্রেক মেট্রো স্টেশন থেকে ট্যাক্সি বা নৌকায় সরাসরি যাওয়া যাবে।
বাংলাদেশ থেকে ভ্রমণ পরিকল্পনা
ঢাকা থেকে দুবাই ফ্লাইটে যেতে সময় লাগে প্রায় ৫ ঘণ্টা ৩০ মিনিট। রিটার্ন টিকিটের আনুমানিক মূল্য বাংলাদেশি টাকায় ৪৫,০০০-৬৫,০০০, আর দুবাই ক্রিক এলাকার কাছে ৩-তারকা হোটেলে প্রতি রাতের খরচ প্রায় ২৫০-৩৫০ (দুবাই ডলার)। খাবার, যাতায়াত ও টিকিটসহ তিন দিনের একটি সাংস্কৃতিক ভ্রমণে খরচ হতে পারে মোট বাংলাদেশি টাকায় ৯০,০০০-১,২০,০০০।

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন