মঙ্গলবার, ০৪ নভেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: নভেম্বর ৪, ২০২৫, ০৪:৩৩ এএম

ডিজিটাল ব্যাংক খুলতে তোড়জোড়

রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: নভেম্বর ৪, ২০২৫, ০৪:৩৩ এএম

ডিজিটাল ব্যাংক খুলতে তোড়জোড়

বাংলাদেশের আর্থিক খাতে এক নতুন অধ্যায় শুরু করতে আসছে ডিজিটাল ব্যাংক। এক যুগ আগে মোবাইল ফোন থেকে মোবাইল ফোনে টাকা পাঠানোর সুবিধা যেভাবে বিপ্লব ঘটিয়েছিল, ডিজিটাল ব্যাংক তার চেয়েও বেশি সুবিধা নিয়ে আসছে। এর মাধ্যমে টাকা জমা, ঋণ গ্রহণ, প্রবাসী আয় গ্রহণসহ সব ধরনের আর্থিক সেবা এখন হাতের মুঠোয় চলে আসবে। কোনো ধরনের শাখা স্থাপন ছাড়াই সম্পূর্ণ ডিজিটাল মাধ্যমে পরিচালিত হওয়ায় সেবার খরচ অনেক কমে যাবে, যা সাধারণ মানুষের আর্থিক অন্তর্ভুক্তিকে আরও সহজ করবে। ডিজিটাল ব্যাংকের জন্য আবেদন করেছে দেশি-বিদেশি ১২ প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানগুলো হলোÑ ব্রিটিশ বাংলা ডিজিটাল ব্যাংক পিএলসি, ডিজিটাল ব্যাংকিং অব ভুটান-ডিকে, আমার ডিজিটাল ব্যাংক-২২ এমএফআই, ৩৬ ডিজিটাল ব্যাংক পিএলসি, বুস্ট-রবি, আমার ব্যাংক (প্রস্তাবিত), অ্যাপ ব্যাংক-ফার্মারস, নোভা ডিজিটাল ব্যাংক-বাংলালিংক অ্যান্ড স্কয়ার, মৈত্রি ডিজিটাল ব্যাংক পিএলসি, উপকারী ডিজিটাল ব্যাংক, মুনাফা ইসলামী ডিজিটাল ব্যাংক-আকিজ, বিকাশ ডিজিটাল ব্যাংক। সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান এই তথ্য জানিয়েছেন।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানায়, চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের সুযোগ কাজে লাগিয়ে আর্থিক খাতে কার্যকারিতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে এই ডিজিটাল ব্যাংক চালু হবে। এর জন্য আলাদা শাখা, উপশাখা বা এটিএম বুথের প্রয়োজন হবে না; সব সেবা অ্যাপ-নির্ভরভাবে মোবাইল ও ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে প্রদান করা হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালা অনুযায়ী, ডিজিটাল ব্যাংক স্থাপনের জন্য ন্যূনতম পরিশোধিত মূলধন হতে হবে ৩০০ কোটি টাকা। প্রযুক্তিনির্ভর আর্থিক খাতের বৈশ্বিক পরিবর্তনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে দক্ষতা বৃদ্ধি, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের অর্থায়ন সহজ করা, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছে ঋণপ্রবাহ বাড়ানো এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য। ২০২৩ সালের ১৪ জুন বাংলাদেশ ব্যাংক ডিজিটাল ব্যাংকের নীতিমালা প্রণয়ন করে। তখন ন্যূনতম পরিশোধিত মূলধন ধরা হয়েছিল ১২৫ কোটি টাকা, যা পরে সংশোধন করে ৩০০ কোটি টাকায় উন্নীত করা হয়েছে। প্রচলিত ব্যাংকের ক্ষেত্রে এই পরিমাণ ৫০০ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মতে, ডিজিটাল ব্যাংকের লাইসেন্স দেওয়া হবে ১৯৯১ সালের ব্যাংক কম্পানি আইন অনুযায়ী এবং পেমেন্ট সার্ভিস পরিচালিত হবে ২০১৪ সালের বাংলাদেশ পেমেন্ট অ্যান্ড সেটেলমেন্ট সিস্টেম রেগুলেশন অনুসারে। এর আগে গত ২৬ আগস্ট ডিজিটাল ব্যাংক স্থাপনের আবেদন আহ্বান করা হয়। তখন আবেদন গ্রহণের শেষ তারিখ ৩০ সেপ্টেম্বর নির্ধারিত ছিল। ডিজিটাল ব্যাংক স্থাপনের লক্ষ্যে আবেদনকারীদের পূর্ণাঙ্গ ও মানসম্মত প্রস্তাবনা তৈরি এবং বিভিন্ন দলিলাদি সংগ্রহের বিষয়টি বিবেচনায় ডিজিটাল ব্যাংক স্থাপনের আবেদন গ্রহণের তারিখ ছিল ২ নভেম্বর সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত।

ডিজিটাল ব্যাংক কী

ডিজিটাল ব্যাংক এমন একটি ব্যাংক, যার নিজস্ব কোনো শাখা, উপশাখা, এটিএম বা সিডিএম (নগদ জমা মেশিন) থাকবে না। এর সব সেবা মিলবে শুধু ডিজিটাল মাধ্যমে, যেমন ওয়েবসাইট বা মোবাইল অ্যাপ। এটি ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকবে। গ্রাহকদের সুবিধার জন্য ভার্চুয়াল কার্ড ও কিউআর কোডের মতো প্রযুক্তিভিত্তিক পণ্য ব্যবহারের সুযোগ থাকবে। লেনদেনের জন্য গ্রাহকেরা অন্য ব্যাংকের এটিএম বা এজেন্ট সেবা ব্যবহার করতে পারবেন। এটি এমন একটি ব্যবস্থা, যেখানে হিসাব খোলা থেকে শুরু করে যেকোনো সেবা নেওয়ার জন্য কোথাও যেতে হবে না, যেকোনো স্থান থেকে ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করেই সেবা নেওয়া যাবে।

বাংলাদেশে ডিজিটাল ব্যাংকের নীতিমালায় বলা হয়েছে, এটি বড় বা মাঝারি শিল্পে ঋণ দিতে পারবে না। তবে ছোট আকারের ঋণ দিতে পারবে। এ ছাড়া কোনো ঋণপত্র (এলসি) খোলার অনুমতি থাকবে না। বর্তমানে দেশে বিকাশ, নগদ বা রকেটের মতো মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) চালু থাকলেও, সেগুলো ডিজিটাল ব্যাংকের একটি অংশমাত্র। ডিজিটাল ব্যাংক হবে একটি পূর্ণাঙ্গ ব্যাংক, যা আর্থিক সেবাগুলোকে আরও সর্বজনীন করে তুলবে।

বিশ্বজুড়ে ডিজিটাল ব্যাংকিংয়ের প্রসার

বিশ্বের অনেক দেশে প্রথাগত ব্যাংকের পাশাপাশি ডিজিটাল ব্যাংক বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। প্রযুক্তির সাহায্যে উদ্ভাবনী সেবা দিয়ে এসব ব্যাংক গ্রাহকদের কাছে সহজেই পৌঁছে গেছে। বর্তমানে বিশ্বজুড়ে ৪০০-এর বেশি ডিজিটাল ব্যাংক রয়েছে। রেভোলুট হলো যুক্তরাজ্যভিত্তিক একটি ডিজিটাল ব্যাংক। যারা আন্তর্জাতিক রেমিট্যান্স, ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড, স্টক ট্রেডিং এবং একাধিক মুদ্রায় হিসাব খোলার মতো সুবিধা দেয়। এনটুসিক্স হলো জার্মানভিত্তিক একটি ব্যাংক, যারা মোবাইল অ্যাপ এবং মাসুলবিহীন হিসাব খোলার সুবিধার কারণে ইউরোপজুড়ে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। নিওব্যাংক হলো লাতিন আমেরিকার বৃহত্তম ডিজিটাল ব্যাংক। ব্রাজিল, মেক্সিকো ও কলম্বিয়ায় এটি ক্রেডিট কার্ড, সঞ্চয়ী হিসাব ও ক্ষুদ্রঋণের মতো সেবা দিয়ে কোটি কোটি গ্রাহকের কাছে পৌঁছে গেছে। এদিকে কাকাওব্যাংক হলো দক্ষিণ কোরিয়ার একটি ডিজিটাল ব্যাংক। এটি জনপ্রিয় মেসেজিং অ্যাপ ‘কাকাওটক’-এর মাধ্যমে বিপুলসংখ্যক গ্রাহককে যুক্ত করেছে। এটি আমানত, ঋণ, ক্রেডিট কার্ড এবং আন্তর্দেশীয় রেমিট্যান্স-সেবাসহ সব ধরনের ডিজিটাল ব্যাংকিং সুবিধা দেয়।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!