রবিবার, ০৯ নভেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: নভেম্বর ৮, ২০২৫, ১১:২১ পিএম

সীমিত ত্রাণে বিপর্যস্ত গাজাবাসী

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: নভেম্বর ৮, ২০২৫, ১১:২১ পিএম

সীমিত ত্রাণে বিপর্যস্ত গাজাবাসী

নেই সুপেয় পানি। পর্যাপ্ত খাবার। আশ্রয় পাওয়া তাঁবুগুলোর বেশির ভাগ অংশই ছেঁড়া। যুদ্ধবিরতির পরও গাজার খান ইউনিসসহ অনেক অঞ্চলের বাস্তুচ্যুত মানুষ এখনো কাটাচ্ছে মানবেতর জীবন। মানবিক সংগঠনগুলোর অভিযোগ, ইসরায়েল ত্রাণ সামগ্রী প্রবেশে গাজা অভিমুখী সব বর্ডার খুলে না দেওয়ায় উপত্যকাটির প্রতিটি মানুষের কাছে পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না তাদের। তাই শীতের আগে গাজায় ত্রাণ সামগ্রী সরবরাহের পরিমাণ বাড়াতে তেল-আবিবের প্রতি আহ্বানও জানিয়েছে সংস্থাগুলো।

মানাল সেলেম। যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকার এক বাস্তুচ্যুত বাসিন্দা। ইসরায়েলি আগ্রাসনে ভিটেমাটি হারিয়ে সাত সন্তান নিয়ে ঠাঁই মিলেছে খান ইউনিসের একটি তাঁবুতে। কিন্তু পর্যাপ্ত খাবার ও পানির ব্যবস্থা না থাকায় কোনোরকম দিন পাড়ি দিচ্ছেন ৫২ বছর বয়সি এই নারী। মানাল সেলেম বলেন, ‘কেউ আমাদের কথা শুনুক। আমাদের জন্য তাঁবুর ব্যবস্থা করুক। এভাবে বাঁচতে পারছি না।’ শুধু মানাল সেলেমই নয়, খান ইউনিসসহ গাজার বিভিন্ন অংশের বাস্তুচ্যুত মানুষের গল্প ঠিক এমনই। গাজার একজন বলেন, ‘দুই বছর ধরে আশ্রয়ের খোঁজে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাচ্ছি। এখন যেখানে ঠাঁই পেয়েছি তার অবস্থাও করুণ। তাঁবুর বেশির ভাগ অংশ ছিঁড়ে গেছে। এগুলো কেবল সূর্যের তাপ থেকে বাঁচাচ্ছে।’ অন্য একজন বলেন, ‘এটা কোনো সমাধান নয়। কর্তৃপক্ষের প্রতি অনুরোধ আমাদের আশ্রয়ের জন্য ভালো সমাধান খুঁজে বের করুন।’

গত অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও, এসব বাস্তুচ্যুত মানুষের জীবনে আসেনি তেমন কোনো পরিবর্তন। এতদিন ইসরায়েলি আগ্রাসনের ভয়ে আতঙ্কে দিন কাটালেও, তাদের নতুন শঙ্কার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে আসন্ন শীত। এরই মধ্যে বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে উপত্যকাটিতে কাজ করা বিভিন্ন মানবিক সংস্থা।

বাস্তুচ্যুতদের নিয়ে কাজ করা নওরেজিয়ান রিফিউজি কাউন্সিল জানায়, গাজায় প্রায় ১৫ লাখ মানুষের জরুরি ভিত্তিতে আশ্রয়কেন্দ্রের প্রয়োজন। কিন্তু ইসরাইলি অনুমোদনের অপেক্ষায় প্রচুর পরিমাণ তাঁবু ও অন্যান্য সহায়তা সামগ্রী ঢুকতে পারছে না উপত্যকাটিতে। রয়টার্স জানায়, গাজায় টানা দুই বছরের ইসরায়েলি আগ্রাসনে ঘরবাড়ি হারিয়েছেন প্রায় ২৩ লাখ বাসিন্দা।

এ ছাড়া যুদ্ধবিরতির পরও গাজায় ত্রাণ সামগ্রী প্রবেশে পূর্ণ প্রবেশাধিকার পাচ্ছে না মানবাধিকার সংগঠনগুলো। ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম জানায়, যুদ্ধবিরতির পর থেকে সংস্থাটি গাজায় ২০ হাজার টন খাবার সরবরাহ করেছে। যা মোট চাহিদার তুলনায় অর্ধেক। উপত্যকাটিতে সংস্থাটির ১৪৫টি বিতরণ কেন্দ্রের মধ্যে কার্যক্রম চলছে ৪৪টির।

ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রামের মুখপাত্র আবির ইতিফা বলেন, ‘শীতকাল আসছে। এখনো অনেকে না খেয়ে আছে। মানুষের চাহিদা বাড়ছে। আমরা উত্তর সীমান্তের ক্রসিং পয়েন্টগুলোর প্রবেশাধিকার চাচ্ছি। এর মাধ্যমে আমরা গাজার উত্তর অংশে যেতে পারব। সেখানে খাদ্যের সংকট তীব্র।’

বর্তমানে গাজার দুটি অংশ দিয়ে ত্রাণ প্রবেশের অনুমতি পাচ্ছে ডব্লিউএফপিসহ অন্যান্য মানবিক সংস্থা। প্রতিশ্রুতি থাকলেও এখনো ত্রাণ সরবরাহের জন্য রাফাহ ক্রসিং খোলেনি ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ। তবে সব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে ইসরায়েলের দাবি, যুদ্ধবিরতির শর্ত মোতাবেক গাজায় প্রতিদিন ৬০০টি ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশের অনুমতি দিচ্ছে তারা।

জাতিসংঘ জানিয়েছে, বর্তমানে গাজাবাসীর সাহায্যের পরিমাণ চাহিদার তুলনায় অনেক কম। তাই তাৎক্ষণিকভাবে আরও সহায়তা প্রয়োজন। জাতিসংঘের মুখপাত্র ফারহান হক বলেছেন, ১০ অক্টোবরের পর থেকে তারা ৩৭ হাজার টন সহায়তা সরবরাহ করেছে, যার বেশির ভাগই খাদ্যপণ্য। তবে ইসরাইলের বিধিনিষেধের কারণে মানুষের বড় অংশের চাহিদা মেটানো সম্ভব হচ্ছে না। এ ছাড়া আল-কারারা ও কারেম আবু সালেম ক্রসিং থেকে সীমিত মাত্রায় মানবিক সাহায্য প্রবেশ করা সম্ভব হলেও, উত্তর গাজায় বা মিশর থেকে দক্ষিণ গাজায় সরাসরি কোনো প্রবেশপথ খোলা নেই। বেসরকারি সংস্থাগুলোও প্রবেশাধিকার পাচ্ছে না।

জাতিসংঘের তথ্যমতে, যুদ্ধবিরতির পর তারা প্রায় ১০ লাখ মানুষের জন্য খাদ্য বিতরণ করেছে। কিন্তু এ পরিমাণ খাদ্য গাজার সব মানুষের চাহিদা মেটানোর জন্য যথেষ্ট নয়। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি সীমান্তের ক্রসিংগুলো খুলে দেওয়ার ওপর জোর দিয়েছে। জাতিসংঘের সংস্থা বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি গাজায় প্রবেশের জন্য সব সীমান্ত ক্রসিং খুলে দেওয়ার ওপর গুরুত্ব দিয়ে বলেছে, ভূখ-টির উত্তরের ক্রসিং ইসরায়েল কেন বন্ধ রেখেছে তার কোনো কারণ জানা যায়নি। ইসরায়েলের এই পদক্ষেপের ফলে গাজার মানুষরা এখনো খাবার, পানি, ওষুধ এবং অন্যান্য জরুরি পণ্যের তীব্র ঘাটতিতে ভুগছে। অনেকের বসতবাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে এবং বেশির ভাগ মানুষের থাকার কোনো ঠিকানা নেই।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!