সর্বশেষ ফুটবলে ভারতের বিপক্ষে কবে জিতেছিল বাংলাদেশ? এই প্রশ্নের উত্তর জানতে হলে ফিরে যেতে হবে ২২ বছর আগে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ আসরে। ২০০৩ সালে জানুয়ারিতে ঢাকায় অনুষ্ঠিত এই টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালে বাংলাদেশ ২-১ গোলে ভারতকে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছিল। সেবার সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জয়ের ইতিহাসও গড়ে বাংলাদেশ। ওই জয়ের পর সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ, প্রীতি ম্যাচ, বিশ^কাপ ও এশিয়ান কাপের বাছাই মিলে ভারতের বিপক্ষে ৮টি ম্যাচ খেলেছে লাল-সবুজের জার্সিধারীরা। কিন্তু একটি ম্যাচেও জয়ের মুখ দেখেনি তারা। সর্বশেষ গত ম্যাচে শিলংয়ে গিয়ে এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে গোলশূন্য ড্র করে দেওয়ান হামজা চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ দল। এবার বাছাইপর্বে হোম ম্যাচে আজ আবার মুখোমুখি হচ্ছে দুই দল। জাতীয় স্টেডিয়ামে রাত ৮টায় ম্যাচটি শুরু হবে। ভারতের বিপক্ষে গত ম্যাচে হামজার অভিষেক হয়েছে। এবার শমিত সোমও ভারতের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচ খেলবে। সব মিলে ভারতের বিপক্ষে ২২ বছরের জয়ের আক্ষেপ ঘুচাতে চায় একঝাঁক প্রবাসী ফুটবলার নিয়ে গড়া বাংলাদেশ দল।
হামজা চৌধুরী, শমিত সোমদের আগমনে বাংলাদেশের ফুটবলে নবজাগরণ হয়েছে। তবে প্রবাসী ফুটবলারদের ঘিরে যে প্রত্যাশা ছিল, সেটি পূরণ হয়নি এখনো। দুই ম্যাচ আগেই এশিয়ান কাপ বাছাইপর্ব থেকে বিদায় নিশ্চিত হয়ে যায় বাংলাদেশের। অবশ্য বাছাইপর্বে প্রবাসী খেলোয়াড়দের নিয়ে যে ম্যাচগুলো খেলেছে বাংলাদেশ, সেগুলো বেশ আশা জাগানিয়া এবং সম্ভাবনাময় ফুটবল খেলেছে তারা। শুধু জয় ছাড়া সব দিক থেকেই ফুটবলপ্রেমীদের হৃদয় জয় করে নিয়েছেন হামজা চৌধুরীরা। বাছাইপর্বে চার ম্যাচের মধ্যে ভারত (গোলশূন্য) এবং হংকংয়ের বিপক্ষে (১-১ গোলে) ড্র করেছে বাংলাদেশ। হংকং ও সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে অন্য দুই ম্যাচে হারলেও ভালো ফুটবল খেলেছে তারা। যার ফলশ্রুতিতে ভারতের বিপক্ষে জয়ের ব্যাপারে আত্মবিশ^াসী বাংলাদেশের ফুটবলাররা।
এশিয়ান কাপ বাছাইপর্ব থেকে বাংলাদেশের মতো বিদায় নিশ্চিত হয়েছে ভারতেরও। তবে আজ বাংলাদেশের বিপক্ষে ভারতের ম্যাচটি আনুষ্ঠানিকতার হলেও সমর্থকদের মধ্যে উন্মাদনা ছড়াচ্ছে। এই দুই প্রতিবেশী দেশ কোনো খেলায় পরস্পরের মুখোমুখি হলেই উত্তাপ ও উত্তেজনার বাড়তি ঝাঁঝ ছড়ায়। ঘরের মাঠে ভারতের বিপক্ষে লড়াইকে শুধু একটি ম্যাচ হিসেবে দেখছেন না হামজা, জামালরা। দুই দলের জন্যই এ ম্যাচটি মর্যাদার লড়াই। এ ম্যাচের জন্য উন্মুখ হয়ে আছেন দুই দেশের ফুটবলপ্রেমীরা। যেভাবেই হোক, এমন আকর্ষণীয় ম্যাচ জয়ে রাঙিয়ে দিতে চায় বাংলাদেশ। ইংল্যান্ড থেকে ঢাকায় উড়ে এসেই বাংলাদেশ দলের মধ্যমণি দেওয়ান হামজা চৌধুরী বলেছেন, ‘ইনশা আল্লাহ, ভারতের বিপক্ষে আমরা জিতব।’ শুধু হামজাই নন, অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া, শমিত সোম, রহমত মিয়া, সাদ উদ্দিনও ঘরের মাঠে ভারতকে হারিয়ে দেওয়ার কথাই বলেছেন। জয় ছাড়া ভিন্ন কিছু ভাবছেন তারা। বাংলাদেশ কোচ হাভিয়ের কাবরেরাও ভারতের বিপক্ষে জয়ের ব্যাপারে আত্মবিশ^াসী। তবে ভারত ম্যাচের আগে নেপালের বিপক্ষে জয়ের পথে থাকা প্রীতি ম্যাচে হেরেছে বাংলাদেশ। ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে যাওয়ার পর শেষ মুহূর্তে গোল হজমের কারণে জয় হাতছাড়া হয় তাদের। টানা ম্যাচেই শেষদিকে গোল হজম করাটা যে একটি রোগের মতো হয়ে দাঁড়িয়েছে, সেখান থেকে ফিরতে না পারলে বাংলাদেশের জন্য লক্ষ্য অর্জন করা সহজ হবে। অন্যদিকে, বাংলাদেশে আসার আগে ভুটানের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে ৬-১ জিতে এসেছে ভারত দল। সেটি তাদের বাড়তি আত্মবিশ^াস জোগাবে।

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন