বুধবার, ১৯ নভেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৯, ২০২৫, ০৩:০৭ এএম

বোর্ডে ফিরতে মরিয়া দুর্নীতিবাজ রাইয়ান কবির

রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৯, ২০২৫, ০৩:০৭ এএম

বোর্ডে ফিরতে মরিয়া দুর্নীতিবাজ রাইয়ান কবির

সাউথইস্ট ব্যাংকের সাবেক পরিচালক রাইয়ান কবিরের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) ও বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) এবং সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনসহ এনবিআরের দুর্র্নীতির তদন্ত চলছে।

জানা গেছে, দুর্নীতিবাজ রাইয়ান কবির আদালতের মাধ্যমে ফের পরিচালক হতে মরিয়া। তার বিরুদ্ধে বর্তমানে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) এক পরিদর্শনে তার বিরুদ্ধে প্রায় ২০০ কোটি টাকা বিদেশে পাচার হওয়ার তথ্য উঠে আসায় গত ৪ আগস্ট দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া আওয়ামী লীগ আমলে ক্ষমতার অপব্যবহার, স্বজনপ্রীতি, বিদেশি নাগরিকত্ব গোপন, অর্থ পাচার, বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে ব্যাংকের শত শত কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে রাইয়ান কবিরের বিরুদ্ধে।

ব্যাংক কোম্পানির আইনে পরিচালকদের যোগ্যতা সম্পর্কে বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ফৌজদারি অপরাধে দ-িত হতে পারবেন না কিংবা কোনো জাল-জালিয়াতি, আর্থিক অপরাধ বা অন্য অবৈধ কর্মকা-ের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না বা জড়িত নন, এমন নিশ্চয়তা থাকতে হবে। তার সম্পর্কে কোনো দেওয়ানি বা ফৌজদারি মামলায় আদালতের রায়ে বিরূপ পর্যবেক্ষণ বা মন্তব্য থাকতে পারবে না; আর্থিক খাতসংশ্লিষ্ট কোনো নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের বিধিমালা, প্রবিধান, নীতিমালা বা নিয়মাচার লঙ্ঘনের কারণে দ-িত হওয়া যাবে না।

অর্থনীতিবিদদের মতে, দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা যদি শেয়ারহোল্ডার পরিচয়ে ব্যাংকের পরিচালক ও  কার্যক্রমে হস্তক্ষেপ করে, তা ব্যাংক খাতের সুশাসনের জন্য বড় হুমকি। এতে বিনিয়োগকারীদের আস্থা দুর্বল হয়ে পড়বে। তারা বলছেন, দুর্নীতির অভিযুক্তরা আদালতের রিটের মাধ্যমে ব্যাংকের প্রবেশ করলে আরও দুর্নীতিতে মরিয়া হয়ে উঠবে।

ব্যাংকের নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক কর্মকর্তারা বলেন, আওয়ামী লাগের আমলে যারা এই ব্যাংকে লুটপাট করেছে। তারাই যদি আবার ব্যাংকের হাল ধরে, তাহলে তো আগের অবস্থায় ফিরে যাবে ব্যাংকটি। বর্তমানে ব্যাংকটির সুনাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ পর্ষদ যোগদান করার পর থেকে ব্যাংকটির আমানত, হিসাবধারীর সংখ্যা, বিনিয়োগ, রেমিট্যান্স প্রবাহ, আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য ও খেলাপি ঋণ আদায়সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সূচকে অগ্রগতি হয়েছে। বর্তমানে ৪৫ হাজার কোটি টাকা আমানত রয়েছে, যা এই ব্যাংকের মাইলফলক। এমন অবস্থায় একজন দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তি ফের পরিচালক হলে ব্যাংকের সুনাম নষ্টে হয়ে যাবে। এতে ব্যাংকের হাজারো কর্মকর্তা-কর্মচারীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।

জানা গেছে, নিয়মবহির্ভূতভাবে পরিচালক হওয়ায় সাউথইস্ট ব্যাংক থেকে ২০২২ সালের ৩১ মে তাকে পর্ষদ থেকে অপসারণ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। রাইয়ান কবির ২০০৩ সালে ব্যাংকের ট্রেজারি বিভাগে চাকরিতে নিযুক্ত হন। তাকে বিভিন্ন অনিয়মের মাধ্যমে পরিচালক বানিয়েছেন ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান আলমগীর কবির। আইনে আছে, ব্যাংকে চাকরি করার পরে সেই ব্যাংকে তিনি পারচালক হতে পারবেন না। তার পরও বাবার ক্ষমতায় নিয়মবহির্ভূতভাবে ব্যাংকের পরিচালক হয়েছেন তিনি। পরিচালক হওয়ার পরে  তিনি জালিয়াতি, দুর্নীতি এবং অর্থ পাচারের মতো ঘটনা হাজারো গ্রাহকের আমানতকে শঙ্কায় ফেলেছিল। সেখান থেকে ব্যাংকটি ঘুরে দাঁড়িয়েছে।

জানা গেছে, আলমগীর কবির সাউথইস্ট ব্যাংকের চেয়ারম্যান থাকাকালে তার পুত্র রাইয়ান কবিরকে ব্যাংকটির পরিচালক বানানোর জন্য ১৬ দশমিক ৭৫ কোটি টাকার সাউথইস্ট ব্যাংকের শেয়ার কেনা হয়। শেয়ার কেনার জন্য প্রদানকৃত অর্থের মধ্যে একটি টাকাও রাইয়ান কবির দেননি, বরং বিএলআই ক্যাপিটাল লিমিটেডের অনুকূলে সাউথইস্ট ব্যাংক কর্তৃক মঞ্জুরিকৃত ঋণের অর্থ বিকলন করে পে-অর্ডার ইস্যুকরত উক্ত অর্থ দিয়ে সাউথইস্ট ব্যাংকের শেয়ার ক্রয় করা হয়। বিএলআই ক্যাপিটাল লিমিটেড কর্তৃক সাউথইস্ট ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়ার শর্তে উল্লেখ ছিল, বিএলআই ক্যাপিটালের গ্রাহকদের মার্জিন ঋণ হিসেবে উক্ত অর্থ ব্যবহার হবে। পে-অর্ডারের মাধ্যমে ব্যাংকের তৎকালীন চেয়ারম্যানের ছেলের নামে অপর প্রতিষ্ঠান (বিএলআই সিকিউরিটিজ লি.) এই অর্থ স্থানান্তরপূর্বক শেয়ার কেনার কোনো সুযোগ নেই।

আরও জানা গেছে, রাইয়ান কবির সিঙ্গাপুরে আর অ্যান্ড এন ট্রেড হোল্ডিং, ইএক্সচেঞ্জ সিঙ্গাপুর প্রাইভেট লি. আর অ্যান্ড এন মেরিন অ্যান্ড শিপ ট্রেড প্রাইভেট লি. নামের তিনটি কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করে প্রায় ২০ কোটি টাকার অধিক অর্থ শেয়ার মানি ইকুইটি হিসেবে বিনিয়োগ করেছেন। প্রতি বছর বিভিন্ন উপায়ে দেশ থেকে অর্থ পাচার করে কোম্পানিগুলোর নেট ইক্যুইটি বাড়িয়েছেন, যা রাইয়ান কবিরের আয় হিসেবে ঘোষণা নেই। বৈধ উৎসবিহীন এত বড় অঙ্কের অর্থ বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) অনুমতি ছাড়া অবৈধ পন্থায় বিদেশে পাচার করা হয়েছে। রাইয়ান নতুন করে সাউথইস্ট ব্যাংকের পরিচালক হতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। তিনি পরিচালক পদে নিয়োগ পেতে বাংলাদেশ ব্যাংকে আবেদন করেছেন। ২০২৫ সালের মার্চের ১১ তারিখে এ আবেদন করেন। এ অবস্থায় তাকে পুনরায় পরিচালক পদে নিয়োগ দিলে ব্যাংকটি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে চলে যাবে।

এ ব্যাপারে ব্যাংকের সাবেক পরিচালক রাইয়ান কবিরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।

 

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!