রাজধানীর তুরাগের দিয়াবাড়ি এলাকায় কিশোরের গলাকাটা লাশ উদ্ধারের ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেনÑ সামিদুল হক মনা (৪২), রবিউল ইসলাম রানা (২০), হজরত আলি (৪৫) এবং নয়ন মিয়া (৩০)। পুলিশের দেওয়া তথ্যমতে, নিহত কিশোর শান্তর নতুন অটোরিকশা ছিনতাই করতেই পরিকল্পিতভাবে দিয়াবাড়ি আনা হয়। পরবর্তীতে রাতের অন্ধকারে গলা কেটে হত্যা করে অটোরিকশা ছিনিয়ে নেয় নিহতের পূর্বপরিচিতরা। গতকাল বুধবার বিকেলে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে উত্তরা ডিভিশনের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. মুহিদুল ইসলাম এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, গত মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে তুরাগের ১৭ নম্বর সেক্টরের ব্রিজ-সংলগ্ন একটি ফাঁকা জায়গার ছনের ভেতর থেকে গলাকাটা অবস্থায় অজ্ঞাত কিশোরের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। স্থানীয়দের ৯৯৯-এর মাধ্যমে খবর পেয়ে তুরাগ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে সুরতহাল শেষে মরদেহটি সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। পরে নিখোঁজ সংক্রান্ত তথ্য যাচাই করে জানা যায়, মরদেহটি মো. শান্ত নামের এক কিশোরের, যিনি একদিন আগে মিরপুরের কাফরুল এলাকা থেকে সোমবার বিকেল সাড়ে ৪টায় রিকশা চালাতে বের হয়েছিলেন এবং আর বাসায় ফেরেননি। নিহতের মামা মর্গে গিয়ে মরদেহ শনাক্ত করেন।
তথ্যপ্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে দ্রুত তদন্তে নেমে পুলিশ প্রথমে কাফরুল থেকে হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী সামিদুল হক মনাকে গ্রেপ্তার করে। জিজ্ঞাসাবাদে সে হত্যার সম্পূর্ণ বর্ণনা দেয় এবং বাকি সহযোগীদের পরিচয় প্রকাশ করে। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রবিউল ইসলাম রানা, হজরত আলি এবং নয়ন মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ডিসি মুহিদুল আরও জানান, অটোরিকশা ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে শান্তকে পূর্বপরিকল্পিতভাবে দিয়াবাড়ির ৭ নম্বর ব্রিজ এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর কৌশলে ফাঁকা জায়গায় নিয়ে গিয়ে পেছন থেকে রবিউল নাইলনের রশি দিয়ে শান্তকে চেপে ধরে এবং সামনে থেকে সামিদুল ধারালো ছুরি দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে। হত্যার পর তারা অটোরিকশা নিয়ে ভাষানটেকের পথে পালিয়ে যায় এবং পরে হজরত আলি ও নয়নের সহায়তায় নেত্রকোনার দুর্গাপুরে মাত্র ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি করে।
গতকাল বুধবার সকালে দুর্গাপুর থেকে অটোরিকশাটি উদ্ধার করা হয় এবং ক্রেতা নয়নকেও গ্রেপ্তার করা হয়। পাশাপাশি ঘটনাস্থলের পাশের জঙ্গল থেকে উদ্ধার করা হয় হত্যায় ব্যবহৃত ছুরি ও বিশেষ কায়দার রশি। এই ঘটনায় তুরাগ থানায় একটি হত্যা মামলা রুজুর প্রক্রিয়া চলছে। গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন